বিএনএ, জাবিঃ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) এক শিক্ষার্থীকে মারধর ও নারী শিক্ষার্থীকে হেনস্তার ঘটনায় পাল্টাপাল্টি অভিযোগ এসেছে। মঙ্গলবার (১৪ জুন) দুপুর ২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন প্রশাসনিক ভবনের সামনের সড়কে এ ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা হলেন- পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের ৪৬তম ব্যাচের শিক্ষার্থী অভীক রায় এবং নারী শিক্ষার্থী তার সহপাঠী। মারধরের ঘটনায় অভিযুক্তরা হলেন- বাংলা বিভাগের ৪৭তম ব্যাচের শিক্ষার্থী আহমেদ গালিব এবং জাহিদ হাসান তুহিন। এদের মধ্যে গালিব মীর মশাররফ হোসেন হল এবং তুহিন মওলানা ভাসানী হলের আবাসিক শিক্ষার্থী ও শাখা ছাত্রলীগ কর্মী।
এ ঘটনার বিচার চেয়ে ভুক্তভোগীরা ১৪ জুন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বরাবর পৃথক দুইটি লিখিত অভিযোগপত্র জমা দেয়। অন্যদিকে অভিযুক্তরা ভুক্তভোগীদের বিরুদ্ধে ১৫ জুন অতিরিক্ত গতিতে বাইক ও হর্ণ বাজানো সহ রুষ্টতার অভিযোগ এনে প্রক্টরের নিকট পাল্টা অভিযোগ দেয়।
ভুক্তভোগীদের করা অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ‘মুরাদ চত্বর থেকে মোটরসাইকেলে অভীক রায় তার বান্ধবীকে পেছনে নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলার দিকে যাচ্ছিলেন। দুপুর দেড়টার দিকে রাস্তায় সাইড দেওয়াকে কেন্দ্র করে গালিব ও তুহিনের সঙ্গে অভীকের বাগবিতন্ডা হয়। এক পর্যায়ে গালিব এবং তুহিন অভীক ও তার বান্ধবীকে গালাগালি শুরু করে। হঠাৎ গালিব এবং তুহিন তাদের ২দুজনকে মারতে উদ্যত হয়। এক পর্যায়ে তারা অভীককে মারধর করেন ও তার বান্ধবীকেও হেনস্তা করেন বলে অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়।’
অভিযুক্ত তুহিন ও জাহিদের করা পাল্টা অভিযোগপত্রে বলা হয়, ‘নতুন রেজিস্ট্রার ভবনের সামনে হাঁটা অবস্থায় পিছন থেকে আসা একটি বাইক খুব বাজেভাবে হর্ণ ও পিক-আপ বাড়াচ্ছিলো। আমরা তাকে (অভিক পরিবেশ বিজ্ঞান-৪৬) নম্রভাবে জিজ্ঞেস করলে আমাদের সাথে খারাপ ব্যবহার করে। আমরা তাকে বললাম ক্যাম্পাসে বাইক গতির একটা লিমিট আছে। উত্তরে তিনি বললেন আমার বাইক আমি যেমন খুশি তেমন চালাবো। আমরা জুনিয়র এটা জানার পর তিনি আরো ক্ষিপ্ত হয়ে আমাদের গালাগাল ও হুমকি-ধামকি দেওয়া শুরু করেন এবং আমাদের বান্ধবীদের উদ্দেশ্যেও বাজে মন্তব্য করেন।’
অভিযোগ পত্রে তুহিন ও গালিব সহ আরো ৫ জন সাক্ষর করেন। তারা হলেন আদিবা সুলতানা দ্বিপা, আজমেরি আঁখি, সানজিদা আফরিন, সাবেকুন খালেক, আজরি হোসেন। এরা প্রত্যেকে বাংলা বিভাগের ৪৭ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী।
গালিব আহমেদ বলেন, ‘আমাদের মধ্যে হাতাহাতি হয়েছে, কিন্তু আমরা তাঁদের মারধর করিনি।’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. আকতারুজ্জামান সোহেল বাংলাদেশ নিউজ এজেন্সি (বিএনএ)-কে বলেন, ‘কোনো ছাত্রলীগ কর্মী যদি বিশ্ববিদ্যালয়ে নারী হেনস্তার মত কাজ করে এবং তা যদি প্রমাণ হয় তাহলে অবশ্যই সংগঠন তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবে।’
জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর আ স ম ফিরোজ-উল-হাসান বলেন, ‘প্রক্টর অফিসে বিকেলে অভিযোগপত্র জমা হয়েছে। আমরা শিগগিরই বসে প্রশাসনিকভাবে ব্যবস্থা নেবো।’
বিএনএ/সানভীর,এমএফ