বিএনএ ডেস্ক: করোনা মহামারির মধ্যে ধর্মীয় ভাবগাম্বির্যময় পরিবেশে ইবাদতের মধ্য দিয়ে পবিত্র মাহে রমজানের রহমতের দশকের দিনগুলো অতিবাহিত করছেন মুসলমানরা।
প্রাপ্ত বয়স্ক, বুদ্ধিমান, সুস্বাস্থের অধিকারী প্রত্যেক মুসলমান নারী-পুরুষদের ওপর রোজা ফরজ করেছেন মহান আল্লাহ। মুসাফির,যারা চির রোগী, দুর্বল,যাদের রমজানের পরেও রোজা রাখার শক্তি নেই, সন্তানদের দুধ দানকারী মায়েরা এবং গর্ভবতী মহিলারা যাদের পক্ষে রোজা রাখা একেবারেই সম্ভব নয়,তারা তাদের তৌফিক অনুযায়ী ফিদিয়া দিয়ে দেবেন।
রোজা প্রতিটি মুসলমানের মধ্যে এক ধরনের বিনয়, ধৈর্য, সহ্য-ক্ষমতা সৃষ্টি করে।আর মুসলমানরাও রোজা রাখার মাধ্যমে নিজের নফসের সংশোধন করে থাকেন। যে ব্যক্তি রোজা রেখে মিথ্যা কথা বলেন, মানুষকে ধোকা দেন, ব্যবসায় বেশি মুনাফা আদায় করেন, সেটি তার জন্য রোজা নয়। বরং শুধুমাত্র উপবাস থাকারই নামান্তর।
মহানবী হযরত মুহাম্মদ নবী (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি মিথ্যা কথা বলা এবং এর ওপর আমল করা থেকে বিরত থাকেন না, আল্লাহতায়ালার জন্য তার উপবাস থাকা এবং পিপাসার্ত থাকার কোন প্রয়োজন নেই। (বোখারি, কিতাবুস সওম)।
অর্থাৎ একজন মুসলমান যখন রোজার প্রকৃত উদ্দেশ্য থেকে গাফেল হয়ে যান তখন সে শুধু নিজেকে উপবাসই রাখেন, যা আল্লাহতায়ালার জন্য কোন প্রয়োজন নেই। আল্লাহ মানুষের অন্তর দেখেন, কোন নিয়তে রোজা রাখছেন এটিই মূল বিষয়।
রোজার ফযিলত ও গুরুত্ব সম্পর্কে হাদিসে উল্লেখ রয়েছে, হজরত আবু হুরায়রা (রা.) কর্তৃক বর্ণিত, রসুল করিম (সা.) বলেছেন, ‘ইবনে আদমের প্রতিটি নেক আমল বাড়িয়ে দেয়া হবে। দশগুণ থেকে সাতশত গুণ প্রতিদান দেয়া হবে। রোজাদার যদি চুপ থাকেন তাহলে সেটাও তার জন্য ইবাদত, তার ঘুমও ইবাদত হিসাবে গণ্য করা হবে। তার দোয়া গ্রহণীয় হবে। আর তার আমলের প্রতিদান বাড়িয়ে দেয়া হবে।
হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণনা করেন, মহানবী (সা.) বলেন, ‘যখন রমজান আসে তখন জান্নাতের দরজা খুলে দেয়া হয় এবং জাহান্নামের দরজা বন্ধ করে দেয়া হয়। আর শয়তানকে শিকলাবদ্ধ করা হয়’ (বোখারি)।
রোজার ব্যাপারে মহান আল্লাহ বলেছেন, রোজা আমার জন্য রাখা হয়। আর এর জন্য আমি নিজে এর প্রতিদান দেব। কেননা রোজাদার তার চাহিদা এবং খাবার খাওয়া আমার জন্য ছেড়ে দেয়।
তাই প্রতিটি মুসলমানের উচিত হবে অযথা কোন সময় নষ্ট না করে পবিত্র রমজান মাসে অনেক বেশি যিকির, তওবা, ইস্তেগফার এবং দুরূদ শরীফ পাঠ করা।
প্রিয়নবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) বলেছেন, ‘যিকরে এলাহী করা এবং যিকরে এলাহী না করা ব্যক্তির উদাহরণ হচ্ছে জীবিত এবং মৃত ব্যক্তির ন্যায় (বোখারি, কিতাবুদ দাওয়াত)।
বিএনএনিউজ/আরকেসি