28 C
আবহাওয়া
১:৩০ অপরাহ্ণ - নভেম্বর ১৮, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » প্রাথমিক শিক্ষায় গতি ফেরাতে সরকারের নানা উদ্যোগ

প্রাথমিক শিক্ষায় গতি ফেরাতে সরকারের নানা উদ্যোগ


নিজস্ব প্রতিবেদক :করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত প্রাথমিক শিক্ষায় গতি ফেরাতে নানা উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এর মধ্যে শিক্ষকদের স্কুলে নিয়মিত উপস্থিত হয়ে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর, ক্যাচমেন্ট এলাকা ভাগ করে বাড়ি বাড়ি গিয়ে শিক্ষার্থীদের পড়ালেখা মনিটরিং করা সরকারের নেয়া ওই উদ্যোগের অন্যতম।

এর আগে থেকেই প্রায় এক বছর ধরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীরা যাতে লেখাপড়া বিমুখ না হন, তা নিশ্চিত করতে অনলাইন ক্লাসের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

এদিকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি আবার ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বাড়িয়েছে সরকার। গতকাল রবিবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কয়েক ধাপে বাড়ানোর পর ১৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ছুটি ছিল, সেই ছুটি এবার ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বাড়ানো হলো। ছুটি চলাকালে অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম চলমান থাকবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের মধ্যে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের জন্য টিভিতে শ্রেণি পাঠদান সম্প্রচার করা হচ্ছে। আর উচ্চ মাধ্যমিক এবং উচ্চ শিক্ষাস্তরে অনলাইনে ক্লাস পরিচালনা করা হচ্ছে।

গত শনিবার থেকে নতুন করে দেশের প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর প্রসূতি/গর্ভবতী শিক্ষক ছাড়া সকল শিক্ষককে প্রতিদিন বিদ্যালয়ে উপস্থিত থেকে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করার নির্দেশ দিয়েছে মন্ত্রণালয়।

পাশাপাশি ‘ক্যাচমেন্ট এলাকা’ ভাগ করে বাড়ি বাড়ি গিয়ে শিক্ষার্থীর পড়ালেখা মনিটরিং করারও নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এরপর থেকে নির্দেশনা মোতাবেক শিক্ষকরা স্কুলে হাজির থাকছেন এবং শিক্ষার্থীদের বাড়িতে গিয়ে তাদের লেখাপড়ার অগ্রগতির খোঁজখবর নিচ্ছেন বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র।

এদিকে স্কুল ছুটিকালে শিক্ষার্থীদের ঘরে থাকা নিশ্চিত করতে নির্দেশ দিয়েছে সরকার। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় গতকাল রবিবার এই নির্দেশনা দেয়। একইভাবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ও এই নির্দেশনা দিয়েছে।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে শিক্ষার্থীদের সুরক্ষার জন্য আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে। এই সময় নিজেদের এবং অন্যদের কারোনা ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে সুরক্ষার জন্য শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ বাসস্থানে অবস্থান করবে। এই বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

দুই মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী শিক্ষার্থীদের বাসস্থানে অবস্থানের বিষয়টি অভিভাবকরা নিশ্চিত করবেন এবং স্থানীয় প্রশাসন তা নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করবে। এই সময় শিক্ষার্থীরা যাতে বাসস্থানে অবস্থান করে, নিজ নিজ পাঠ্যবই অধ্যয়ন করেন এই বিষয়টি সংশ্লিষ্ট অভিভাবকদের মাধ্যমে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকরা নিশ্চিত করবেন।

দুই মন্ত্রণালয় তাদের নির্দেশনায় জানায়, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এবং স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের বিভিন্ন সময়ে জারি করা নির্দেশনা ও অনুশাসন মেনে চলতে হবে।

এ প্রসঙ্গে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের এক শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, আমরা আগেই টেলিফোনে যোগাযোগ রাখার নির্দেশনা দিয়েছি। শিক্ষার্থীরা বাসায় কী করছে, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলছে কিনা, লেখাপড়া কতটা করছে, সংসদ টিভিতে প্রচারিত ক্লাসগুলো ভালো দেখছে কিনা এবং পড়ালেখার অগ্রগতির মনিটরিং করতে খোঁজখবর নিতে শিক্ষকদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

অন্যদিকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সকল শিক্ষককে করোনার টিকার আওতায় নিয়ে আশার চিন্তা করছে সরকার।

এ প্রসঙ্গে মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন গত মঙ্গলবার টিকা গ্রহণের দিন বলেছিলেন, ‘প্রাথমিকের সব শিক্ষককে সপ্তাহখানেকের মধ্যে টিকা দেয়া হবে’। আর গত বুধবার অন্য একটি অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছিলেন, ‘সকল শিক্ষককে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে টিকা দেয়া হবে।’

তিনি বলেছিলেন, ‘সরকার শিশুদের বিদ্যালয়ে ফেরাতে যথেষ্ট আন্তরিক। তবে সকল ঝুঁকি বিবেচনা ও স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করেই শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে ফেরানো হবে। কোভিড পরিস্থিতি আমাদের সামনে বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থার পুনর্মূল্যায়ন ও সংস্কারের একটি সুযোগও তৈরি করে দিয়েছে।’

প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন বলেন, ‘সামনের যে কোনো সময় খুলে দেয়া হতে পারে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এর প্রস্তুতি হিসেবে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সব শিক্ষকদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে দেয়া হবে করোনা ভাইরাসের টিকা। তাদের এক সপ্তাহের মধ্যে এই টিকা দেয়ার চিন্তাভাবনা চলছে। প্রধানমন্ত্রী আমাকে ফোন করে বলেছেন তোমার সব শিক্ষককে টিকা দিয়ে নাও, যেহেতু আমরা যেকোনো সময় স্কুল খুলে দেব। আমার কোনো শিক্ষক যাতে টিকার আওতার বাইরে না থাকেন।’ শিক্ষকদের টিকার জন্য প্রধানমন্ত্রী ইতোমধ্যে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কেও নির্দেশ দিয়েছেন।

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক আলমগীর মুহাম্মদ মনসুরুল আলম বলেন, ‘আমাদের শিক্ষকরা খুব আনন্দ উৎসাহ নিয়ে টিকা গ্রহণ ও রেজিস্ট্রেশন করছেন। অনেক শিক্ষকই উচ্ছ্বাসের কথা ফেসবুকের মাধ্যমে জানিয়েছেন। আমরা তাদের রেজিস্ট্রেশন ও টিকা গ্রহণের তথ্য সংগ্রহ করছি। এরপর টিকা গ্রহণ শেষ হলে এই তথ্য প্রেরণ করা হবে। এরপর বিদ্যালয় খুলে দেয়ার কথা বলা হলে আমরা খুলে দেব।’

Loading


শিরোনাম বিএনএ