26 C
আবহাওয়া
২:৫৯ অপরাহ্ণ - নভেম্বর ২৫, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » যুদ্ধে জড়াচ্ছে ভারত-মালদ্বীপ?

যুদ্ধে জড়াচ্ছে ভারত-মালদ্বীপ?


বিএনএ আন্তর্জাতিক ডেস্ক : মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুইজ্জু মালদ্বীপ থেকে ভারতীয় সেনা প্রত্যাহারের জন্য সময়সীমা বেঁধে দিয়েছেন। আগামী ১৫ মার্চের মধ্যে ভারতকে সেনা প্রত্যাহারের নির্দেশ দিয়েছে দেশটি।

মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর চীনে প্রথম রাষ্ট্রীয় সফরে শি জিনপিংয়ের সঙ্গে মোহাম্মদ মুইজ্জু সাক্ষাৎকার করার কয়েকদিন পরেই এই ঘোষণা দিয়েছেন। মালদ্বীপে ভারতের প্রায় ৮৮ সেনা রয়েছে। বর্তমান মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট ‘ইন্ডিয়া আউট’ প্রচারণার মাধ্যমে ক্ষমতায় আসেন। মালদ্বীপ থেকে ভারতীয় সেনা প্রত্যাহার ছিল মুইজ্জুর একটি প্রধান নির্বাচনী ইশতেহার।আর ক্ষমতায় আসার পর চীনপন্থী মুইজ্জু সরকার বেইজিংয়ের সঙ্গে আরও ঘনিষ্ঠ হতে থাকে।

মালদ্বীপের মন্ত্রীরা নরেন্দ্র মোদির লাক্ষাদ্বীপ সফরের পর তার বিরুদ্ধে অবমাননাকর মন্তব্য করেন। এর জেরে ভারত ও মালদ্বীপের মধ্যে কূটনৈতিক দ্বন্দ্ব শুরু হয়।

ওই মন্তব্যের জেরে তিন মন্ত্রীকে বরখাস্ত করা হয়েছিল এবং মালদ্বীপের বিরোধীরা এই মন্তব্যের সমালোচনাও করেছিল। কিন্তু রাষ্ট্রপতি বলেছিলেন ‘আমরা ছোট হতে পারি কিন্তু আমাদের ধমক দেওয়ার লাইসেন্স কারও কাছে নেই।’

রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের পাবলিক পলিসি সেক্রেটারি আবদুল্লাহ নাজিম ইব্রাহিম বলেছেন, ‘ভারতীয় সেনারা মালদ্বীপে থাকতে পারবে না। এটি রাষ্ট্রপতি ডক্টর মোহাম্মদ মুইজ্জু ও এই প্রশাসনের নীতি।’

মালদ্বীপের রাষ্ট্রপতি দুই মাস আগে ক্ষমতায় আসার পরপরই ভারতীয় সেনা প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়ে ঘোষণা দিয়েছিলেন, নিশ্চিত করতে হবে মালদ্বীপের মাটিতে যেন কোনও বিদেশি সেনার উপস্থিতি না থাকে।’

আয়তনে ছোট হলেও আঞ্চলিক রাজনীতিতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রয়েছে মালদ্বীপের। বিশেষ করে এর উত্তর ও দক্ষিণ অংশে কৌশলগত সামুদ্রিক রুটের কারণে দেশটি ভারত মহাসাগরে একটি মূল টোল গেটে পরিণত হয়েছে।

রাষ্ট্রপতি মুইজ্জু এর আগে অসংখ্য জরুরি চিকিৎসা ব্যবস্থায় দুটি ভারতীয় হেলিকপ্টার, ধ্রুব-এর উল্লেখযোগ্য ভূমিকা স্বীকার করেছেন। ভারতীয় সেনাদের এই ছোট দলটি বেশ কয়েক বছর ধরে মালদ্বীপে অবস্থান করছে।

এর আগে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছিল, মালদ্বীপের সঙ্গে ভারতের সহযোগিতা যৌথভাবে ভাগ করা চ্যালেঞ্জ ও অগ্রাধিকারের ওপর ভিত্তি করে। দেশটির জনকল্যাণ, মানবিক সহায়তা, দুর্যোগ ত্রাণ ও দ্বীপ রাষ্ট্রে অবৈধ সামুদ্রিক কার্যকলাপের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে উল্লেখযোগ্যভাবে অবদান রেখেছে ভারতের সামরিক সহায়তা।

মালদ্বীপের সাবেক রাষ্ট্রপতি ইব্রাহিম সোলিহের ‘ইন্ডিয়া ফার্স্ট’ নীতি থেকে ‘ইন্ডিয়া আউট’-এ স্থানান্তর কোনো আকস্মিক ঘটনা নয়। ইব্রাহিম সোলিহের পূর্বসূরি আবদুল্লাহ ইয়ামিনকে বলা হয় প্রথম মালদ্বীপের নেতা যিনি ২০১৩ সালে ভারতের বিরুদ্ধে প্রচারণা শুরু করেছিলেন এবং দ্বীপ দেশটির সঙ্গে চীনের সম্পর্ক আরও ঘনিষ্ঠ করে তোলেন। তার উত্তরসূরী ইব্রাহিম সোলিহ ২০১৮ থেকে ২০২৩ পর্যন্ত মেয়াদে ভারতের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখেছিলেন। আবদুল্লাহ ইয়ামিনের মেয়াদে ভারতের বিরুদ্ধে আখ্যান তৈরিতে সোশ্যাল মিডিয়া ও মালদ্বীপের ধিয়ারেস নিউজের ভূমিকা উল্লেখযোগ্য বলে মনে করা হয়।

আবদুল্লাহ ইয়ামিন একটি ফৌজদারি মামলায় দোষী সাব্যস্ত ও দুর্নীতির জন্য ১১ বছরের কারাদণ্ড পাওয়ায় গত নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারেননি। তাই তিনি প্রার্থী হিসেবে মুইজ্জুকে মনোনীত করেছিলেন।

ভূ-রাজনীতি পর্যবেক্ষকরা মনে করেন, মালদ্বীপে বেইজিংয়ের অর্থনৈতিক স্বার্থ রয়েছে এবং এটি তার বৃহত্তম বহিরাগত ঋণদাতা। তবে চীনের ঋণ ফাঁদ নীতির কারণে আশঙ্কা করা হচ্ছে দ্বীপ দেশটি দেউলিয়ার শিকার হতে পারে। একই সঙ্গে ভারতের সঙ্গে নতুন করে যুদ্ধে জড়াছে কী সেই প্রশ্নটিও সামনে এসেছে।

বিএনএ/ সাকিব, ওজি/ হাসনা/এইচমুন্নী

Loading


শিরোনাম বিএনএ