বিএনএ, ঢাকা: নারী অধিকার প্রতিষ্ঠায় ১১ দফা সুপারিশ তুলে ধরেছেন নারী অধিকার বিষয়ক সংগঠন ‘নারীপক্ষ’। সব রাজনৈতিক দলের প্রার্থী তালিকায় এক-তৃতীয়াংশ নারী এবং ৬৪ জেলার জন্য সংরক্ষিত নারী আসন ও সংরক্ষিত নারী আসনে সরাসরি নির্বাচনের ব্যবস্থা রাখার দাবি জানানো হয়েছে। শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে ‘নারীর অধিকার ও মুক্তি : প্রত্যাশা ও করণীয়’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানানো হয়।
নারীপক্ষের সভানেত্রী গীতা দাসের সভাপতিত্বে এবং সদস্য মাহীন সুলতানের সঞ্চালনায় সংবাদ সম্মেলনে সুপারিশমালা তুলে ধরে তা বাস্তবায়নে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারসহ সমাজের বিভিন্ন অংশীজনদের প্রতি অনুরোধ জানানো হয়।
সুপারিশে বলা হয়, রাজনৈতিক দলের প্রতি অনাস্থা প্রকাশে নির্বাচনী ব্যালটে ‘না’ ভোটের বিধান যুক্ত করতে হবে। ইহজাগতিক ও মানবিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য রাষ্ট্রকে ধর্ম থেকে পৃথক করতে হবে। অভিন্ন পারিবারিক আইন, উত্তরাধিকার আইন, অভিভাবকত্ব, ক্ষতিপূরণ আইন ও নাগরিকত্ব আইনসহ নারীর প্রতি বৈষম্যমূলক আইনগুলো সংস্কার করে নারীর পারিবারিক ও জনজীবনে সমঅধিকার নিশ্চিত করতে হবে। নারীর প্রতি বৈষম্য নিরসন ও নারীর জীবন সহিংসতামুক্ত করতে বিদ্যমান আইন ও নীতিমালার পূর্ণ বাস্তবায়ন করতে হবে। যৌনকর্মীসহ অন্য বীরাঙ্গনাদের যথাযথ সম্মান ও রাষ্ট্রীয় সব সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে।
আরো বলা হয়, নারী অধিকারকে গুরুত্ব দিয়ে জাতীয় স্বাস্থ্যনীতি হালনাগাদ ও জাতীয় ওষুধ নীতির যথাযথ বাস্তবায়ন করতে হবে। সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে রাজনীতিমুক্ত ও কমিটিতে জনসম্পৃক্ততা বিশেষ করে নারীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে। শ্রম-আইন সংশোধন করে অপ্রাতিষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিক খাতের কাজকে স্বীকৃতি দিতে হবে।
জাতীয় পর্যায়ে গৃহীত জলবায়ু, বন ও পরিবেশ সংক্রান্ত নীতিমালা ও কৌশলসমূহ পরিমার্জন করে কর্মসূচিতে লিঙ্গ সমতা ও নারীর ক্ষমতায়নের নির্দিষ্ট লক্ষ্য অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, নারীর অধিকার নিশ্চিত করা ও নারীর প্রতি সকল বৈষম্যের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার লক্ষ্যে নারীপক্ষসহ ১৭৬টি সংগঠনের ৩৪৮ জন অংশগ্রহণকারীর সুপারিশ, তথ্য-উপাত্ত ও মতামত নিয়ে ‘নারীমুক্তি সমতা ও ন্যায্যতা : নারীবাদী আন্দোলনের দাবিনামা’ নামে একটি দলিল তৈরি করা হয়েছে।
দলিলে সহিংসতামুক্ত নারীর জীবন, নারীর অর্থনৈতিক অধিকার, নারীর রাজনৈতিক অধিকার, নারীর স্বাস্থ্য অধিকার, নারীর শিক্ষা, জলবায়ু ও পরিবেশগত ন্যায়বিচার, প্রান্তিক পর্যায়ের নারীর অধিকার এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বিষয়টি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। সুপারিশমালাসহ ওই দলিল অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টাদের পাশাপাশি সংস্কার কমিশনগুলোর কাছে হস্তান্তর করা হবে।
বিএনএনিউজ/ বিএম