বিএনএ, কুবি: কোটাবিরোধী আন্দোলনকে ‘ব্যবহার’ করে প্রক্টরবিরোধী আন্দোলনে নামার অভিযোগ উঠেছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ছাত্রলীগের একাংশের বিরুদ্ধে। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত প্রক্টর অফিস তালাবদ্ধ অবস্থায় রয়েছে।
রোববার (১৪ জুলাই) সকাল ১১ টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনে অবস্থিত প্রক্টর অফিসে তালা ঝুলিয়ে দেয়।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের আগামী কমিটিতে পদপ্রত্যাশী এনায়েত উল্লাহর ২৫-৩০ জন অনুসারীরকে ক্যাম্পাস গেট থেকে প্রক্টরের পদত্যাগ চেয়ে স্লোগান দিতে দেখা যায়। তারা পরবর্তীতে প্রক্টর অফিসে তালা দেন।
কুমিল্লা জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি দেয়া শেষে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সমন্বয়কদের মধ্যে অন্যতম লোকপ্রশাসন বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আবু মোহাম্মদ রায়হান জানান, ১১ জুলাই প্রক্টরিয়াল বডির ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন থাকলেও তারা এখনো পুলিশ প্রশাসনের সাথে কাছে এই হামলার বিচার চান এবং কোটা পদ্ধতির সংস্কার চান। এখানে প্রক্টর পদত্যাগের কোন বিষয়ে তারা নেই। ছাত্রলীগের যারা আছেন তারাও আমাদের ভাই। আশা করি তারা বিষয়টা বুঝবেন।
এছাড়া আন্দোলনের সমন্বয়কদের মধ্যে অন্যতম মোহাম্মদ সাকিব বলেন, ‘ আমরা জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি দেয়ার জন্য আসছিলাম। ক্যাম্পাসে কি হচ্ছে সেটা আমরা জানি না। আমরা ক্যাম্পাসে গেলে বুঝতে পারবো।’
প্রক্টর অফিসে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া এনায়েত উল্লাহর অনুসারী রবিন দাশ বলেন, ‘প্রক্টরের কাজ আমাদেরকে নিরাপত্তা দেওয়া কিন্তু ওইদিন উনার সামনে আমার ভাইয়েরা হামলার স্বীকার হয়েছে। এইজন্য আমরা এই প্রক্টরের অপসারণ চাই। এর আগেও প্রক্টরকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়েছিলো। এটা আমরা কোটা আন্দোলনের থেকে করছি না ছাত্রলীগ আন্দোলন থেকে করেছি।’
এ বিষয়ে ছাত্রলীগের আগামী কমিটির পদপ্রত্যাশী এনায়েত উল্লাহ বলেন, ‘আজ প্রক্টর অফিসে তালা দিয়েছে সেখানে তিন হলের আবাসিক শিক্ষার্থী মিলে দিয়েছে। এটা কোনো একক হলের নেতৃত্বে দেওয়া হয় নাই। এটা ছাত্রলীগের কোনো অংশ না, এছাড়া কোটা আন্দোলনের সাথে এটার সম্পৃক্ততা নেই বরং ওইদিনের ঘটনার প্রেক্ষিতে তারা আজ প্রক্টর অফিসে তালা দিয়েছে।’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর (ভারপ্রাপ্ত) ড. কাজী ওমর সিদ্দিকী বলেন, কে বা কারা তালা দিয়েছে আমরা এখনও সঠিক বলতে পারছি না। তবে কোটার বিরুদ্ধে আন্দোলন যারা করছে তারা যে যৌক্তিক আন্দোলন করছে তাদের এখানে কেউ ছিলো না।’
উল্লেখ্য, গত ১১ জুলাই বিকেল ৩ টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন আনসার ক্যাম্পের সামনে শিক্ষার্থীদের ওপর লাঠি চার্জ করে পুলিশ। এর জবাবে শিক্ষার্থীরাও ইট-পাথর নিক্ষেপ করেন। পরবর্তীতে পুলিশ কাঁদুনে গ্যাস, টিয়ারশেল, ফাঁকা গুলি ছুড়েন। ফলে তিন সাংবাদিকসহ অন্তত ২০ জন শিক্ষার্থী আহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। পরবর্তীতে বিকেল ৪ টা থেকে রাত ১১ টা পর্যন্ত ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে রাখে শিক্ষার্থীরা৷
বিএনএ/আদনান, এমএফ/হাসনা