বিএনএ ডেস্ক: বাংলাদেশে পবিত্র মাহে রমজান মাস শুরু হয়েছে। রমজানের চাঁদ দেখা যাওয়ায় মঙ্গলবার এশার নামাজের পর তারাবির নামাজ আদায় করেন বাংলাদেশের মুসলমানরা। এরপর ভোররাতে সেহেরি খেয়ে রোজা রাখা শুরু করেন তারা।রহমত, মাগফিরাত ও নাজাতের এই মাসে মহান আল্লাহর অফুরন্ত করুণা লাভের জন্য ইবাদত বন্দেগিতে নিজেদের সঁপে দেবেন ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা।
করোনা মহামারির মধ্যে অতিলোভী ব্যবসায়ীদের মুনাফাবৃত্তিকে মেনে নিয়ে মুসলমানরা পবিত্র রমজান পালন করছেন। পাশাপাশি সাধ্যানুযায়ী ইফতার ও সেহরির ব্যবস্থা করবেন তারা।
রজমান মাসে মুসলমানদের জীবনধারায় ব্যাপক পরিবর্তন আসে। খাদ্যাভাস থেকে ঘুম, কথা বলা থেকে পথচলা, প্রতিটি ক্ষেত্রেই সংযমের এ মাসের প্রভাব পড়ে। দিনের বেলা পানাহার থেকে বিরত থাকা ছাড়াও জাগতিক মোহ, কাম, ক্রোধ, লোভ-লালসা দমন করে আত্মশুদ্ধির সাধনা পুরো রমজান মাস জুড়ে চলবে।রোজা রাখার পাশাপাশি সাধ্যমতো দান-খয়রাত ও নফল ইবাদতের মধ্য দিয়ে ইসলামে অত্যন্ত মর্যাদাপূর্ণ এই মাসের দিনগুলো অতিবাহিত করবেন মুসলমানরা।
রহমত ও বরকতের দিক দিয়ে রমজান মাস বছরের অন্য ১১ মাস থেকে ভিন্ন। এ সম্পর্কে মহানবী হজরত মুহাম্মদ সাল্লাহু আ্লাইহে ওয়াসালাম বলেছেন, রমজান মাসের প্রথমাংশে রহমত, দ্বিতীয়াংশে মাগফিরাত অর্থাৎ ক্ষমা, আর তৃতীয়াংশে নাজাত তথা দোজখ থেকে মুক্তি।
রমজান মাস দোয়া কবুলের মাস। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘রমজান মাসে প্রত্যেক মুসলিমের দোয়া কবুল করা হয়।’ (মুসনাদ আহমদ)।
আখেরি নবী মদিনায় হিজরত করে যাওয়ার দ্বিতীয় বছরে রমজানের সিয়াম পালনের বিধান নিয়ে পবিত্র কোরান নাযিল হয়।(সুরা বাকারার ১৮৩ নম্বর আয়াত)। ঘোষণা করা হয়, হে মুমিনরা, তোমাদের প্রতি সিয়াম পালন আবশ্যিক করা হলো, যেমন তা আবশ্যিক করা হয়েছিল তোমাদের আগে যারা ছিল তাদের প্রতি, যাতে তোমরা মুত্তাকি হতে পার।
পবিত্র এ মাসে যে ব্যক্তি কোনো নেক কাজের মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য লাভের চেষ্টা করবেন, তার জন্য থাকবে অন্য মাসে একটি ফরজ আদায়ের সমান প্রতিদান। আর যে ব্যক্তি একটি ফরজ আদায় করবেন, তার জন্য থাকবে অন্য মাসে সত্তরটি ফরজ আদায়ের সমান প্রতিদান। যে ব্যক্তি কোনো রোজাদারকে ইফতার করাবেন, তার জন্য রয়েছে গুনাহ মাফ ও জাহান্নাম থেকে মুক্তি এবং রোজাদারের মতোই তাকে প্রতিদান দেয়া হবে। কিন্তু রোজাদারের প্রতিদান কমানো হবে না।
মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, ঈমান ও ইহতিসাবের সঙ্গে যে ব্যক্তি সিয়াম আদায় করবেন, তার পূর্বেকার পাপগুলো ক্ষমা করে দেয়া হবে। যাহা বুখারি ও মুসলিম শরীফে আছে।
মহানবী আরও ইরশাদ করেছেন, রমজান মাস শুরু হলে জান্নাতের দরজাগুলো খুলে দেয়া হয়; সারা মাস তা আর বন্ধ করা হয় না। জাহান্নামের দরজাগুলো বন্ধ করা হয়; সারা মাস তা আর খোলা হয় না। আল্লাহর পক্ষ থেকে ঘোষণা করা হয়, হে কল্যাণ অন্বেষণকারী, তুমি অগ্রসর হও। আর হে অকল্যাণ অন্বেষণকারী, তুমি নিবৃত্ত হও।
বহু ফজিলত ও পুণ্যময় বৈশিষ্ট্যে ভরা এ মাসটিতেই পবিত্র কোরান নাজিল হয়। এ মাসেই রয়েছে সহস্র মাসের চেয়ে সেরা একটি রাত-লাইলাতুল কদর। আগামি ৯ মে দিবাগত রাতে পবিত্র লাইলাতুল কদর পালিত হবে।আরবি ‘রামাদ’ শব্দ থেকে এই মাসের নাম এসেছে । এর অর্থ ‘তপ্ত’ বা ‘শুষ্কতা’।
বিএনএনিউজ/আরকেসি