ডা. আহমেদ ফজলুল মতিন কর্নেল (অব.) ১৯২৯ সালের ১ মে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম-আব্দুল হামিদ ও মাতার নাম-মাছুমা খাতুন। তিনি ১৯৪৫ সালে চাঁদপুরের বনাখাল উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ম্যাট্রিক, ১৯৪৭ সালে হরগঙ্গা কলেজ থেকে আই.এস.সি এবং ১৯৫৩ সালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাশ করেন। কর্মজীবনের শুরুতে ঢাকা মেডিকেল কলেজের চক্ষু বিভাগের অনারারি হাউজ সার্জন হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
১৯৫৩ সালের ৩ অক্টোবর পাকিস্তান আর্মি মেডিকেল কোরে যোগদান করেন এবং ১৯৭২ সাল পর্যন্ত পাকিস্তানের বিভিন্ন সামরিক হাসপাতালে চাকুরি করেন। ১৯৭৪ থেকে ১৯৭৬ সাল পর্যন্ত ছিলেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের পরিচালক। ১৯৮৭ সালে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল থেকে রেডিওলজিস্ট হিসেবে অবসর গ্রহণ করেন। বর্তমানে পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারে কনসালটেন্ট রেডিওলজিস্ট পদে কর্মরত আছেন।
১৯৪৭ সালে ঢাকা মেডিকেল কলেজের দ্বিতীয় ব্যাচের ছাত্র তিনি, থাকতেন ২নং ব্যারাকের ২নং রুমে। ১৯৪৭ থেকে ১৯৫২ ভাষা-আন্দোলনের এই পথ পরিক্রমায় তিনি নানা গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার সাথে সরাসরি জড়িত ছিলেন, কখনো পুলিশি নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। ১৯৪৭ সালের ১২ ডিসেম্বর পলাশি ব্যারাকে বাংলা ভাষা বিরোধীদের প্রতিরোধ, ১৯৪৮ সালে জিন্নাহ’র বক্তব্যের প্রতিবাদ, ১৯৫০ সালে বাংলা ভাষার বিকৃতি রোধে রেডিও পাকিস্তান অফিসে অবস্থান ধর্মঘট ও প্রতিবাদসহ বায়ান্নর একুশের আন্দোলনেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তিনি তখন ৫ম বর্ষের ছাত্র। গুলিবর্ষণের পর প্রথম শহীদ মিনার নির্মাণসহ আন্দোলনের শেষ দিনগুলোতেও তিনি ব্যারাকে অবস্থান করে সক্রিয় ভূমিকা রাখেন।
জনাব আহমেদ ফজলুল মতিন বর্তমানে কর্মজীবনের পাশাপাশি সাধারণ মানুষের কল্যাণে নিভৃতে কাজ করে যাচ্ছেন। ‘ফওজিয়া মতিন মেমোরিয়াল ওয়েলফেয়ার ট্রাস্ট’ গঠন করে সাহিত্য, সংস্কৃতি, শিক্ষার উন্নয়ন এবং গরিব ও মেধাবীদের বৃত্তি প্রদানসহ সমাজ উন্নয়নমূলক কাজ করে যাচ্ছেন।
সূত্র: যারা অমর ভাষা সংগ্রামে, লেখক: এমআর মাহবুব
সম্পাদনায়: মনির ফয়সাল
পড়ুন আগের পর্ব: ভাষা সৈনিক(৪) আহমদ রফিক পর্ব: ০৩