বিএনএ, ঢাকা : বাংলাদেশের বিপক্ষে ২-০তে টেস্ট সিরিজ জিতল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। মিরপুরের শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে প্রথম ইনিংসে ৪০৯ রান করে ক্যারিবীয়রা। জবাবে ২৯৬ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ। এতে প্রথম ইনিংসে ১১৩ রানে এগিয়ে যায় সফরকারীরা।
দ্বিতীয় ইনিংসে ১১৭ রানে গুটিয়ে যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এতে জয়ের জন্য বাংলাদেশের লক্ষ্য দাঁড়ায় ২৩১। ২৩১ রানে লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ১০ উইকেট হারিয়ে ২১৩ রান করে বাংলাদেশ। ফলে ১৭ রানে জিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
জয়ের জন্য ২৩১ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ে বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইনআপ। সৌম্য সরকারের বিদায়ে দলের স্কোর দাঁড়ায় ৫৯/১। আর তামিম ৫০ রান করে আউট হলে দলের স্কোর ৭০/২। এর পর থেকে ব্যাটিং বির্পযয়ে পড়ে বাংলাদেশ।
১২. ১ ওভারে ব্র্যাথওয়েটের বলে শায়নে মোসলির ক্যাচে পরিণত হন সৌম্য সরকার। তিনি করেছেন ৩৪ বলে ১ চারে ১৩ রান। দলীয় স্কোর ৫৯/১।
১৬.২ ওভারে ব্র্যাথওয়েটের বলে কর্নওয়ালের ক্যাচে পরিণত হন তামিম ইকবাল। ৪৬ বলে ৯ চারে ৫০ রান করেন তামিম। দলের স্কোর ৭০/২। ও ২১.৩ ওভারে কর্নওয়ালে বলে শায়নে মোসলির তালুবন্দি হন নাজমুল ইসলাম শান্ত। ৩১ বলে ২ চারে ১১ রান করেন তিনি। ৩ উইকেটে রান ৭৮।
৩০.২ ওভারে ওয়ারিক্যানের বলে ডি সিলভার গ্লাভসবন্দি হয়ে মাঠ থেকে বিদায় নেয় মুশফিকুর রহিম। ৩০ বলে ১ চারে ১৪ রান করেন মুশফিক। ৪ উইকেটে রান ১০১।
৩৩.৩ ওভারে কর্নওয়ালের বলে শায়নে মোসলির ক্যাচে পরিণত হন মো মিঠুন। ১২ বলে ১ ছক্কায় ১০ রান নেয় মিঠুন। ৫ উইকেটে রান ১১৫।
৪১.১ ওভারে ওয়ারিক্যানের বলে ক্যাম্পবেলে গ্লাভসবন্দি হয়ে মাঠ ছাড়েন দলের অধিনায়ক মুমিনুল হক। ৬৮ বলে ৩ চারে ২৬ করেন তিনি। ৬ উইকেটে রান ১৪৭।
৪৪.২ ওভারে কর্নওয়ালে বলে ডি সিলভার তালুবন্দি হয়ে সাজঘরে ফিরেন লিটন দাস। ৩৫ বলে ব্যক্তিগত ২২ রান সংগ্রহ করেন লিটন। ৭ উইকেটে রান ১৫৩। ৫০.১ ওভারে কর্নওয়ালের এলবি ডব্লিউর ফাঁদে পড়েন তাইজুল। ২৫ বলে ৮ রান নেন তাইজুল। ৮ উইকেটে রান ১৬৩।
৫৫.৪ ওভারে ব্র্যাথওয়েটের বলে এলবি ডব্লিউ হয়ে গ্যালারিতে ফিরেন নাঈম হাসান। ২০ বলে ১ চারে ১৪ রান করে নাঈম। ৯ উইকেটে রান ১৮৮।
৫৫.৩৬ ওভারে ওয়ারক্যিানের বলে ক্যাম্পবেলে ক্যাচে পরিণত হন মেহেদী হাসান মিরাজ। ৫৬ বলে ৩ চার ও ২ ছক্কায় ৩১ রান করেন মিরাজ।১০ উইকেটে রান ২১৩। ৬১.৩ ওভারে ১০ উইকেট হারিয়ে ২১৩ করে স্বাগতিকরা।
রোববার ( ১৪ ফেব্রুয়ারি) মিরপুরের শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আগের তিন ৩ উইকেট হারানো ওয়েস্ট ইন্ডিজ এদিন প্রথম সেশনে হারায় আরও ৩ উইকেট। চট্টগ্রাম টেস্টের ঘাতক কাইল মেয়ার্সকে এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলেন আবু জায়েদ রাহি। ১৬ বলে ১ চারে ৬ রান করেন তিনি। ৫ উইকেটে দলের স্কোর ৬৫।
তার আগে ২৫.১ ওভারে জোমেল ওয়ারিকানকে একইভাবে সাজঘরের পথ দেখান রাহি। ২২ বলে ব্যক্তিগত ২ রানে আউট হন তিনি। ৪ উইকেটে রান ৫০। ৩৪.২ ওভারে তাইজুল ইসলামের বলে লিটন দাসের দুর্দান্ত স্টাম্পিংয়ের শিকার হন জার্মেইন ব্ল্যাকউড। ১০ বলে ১ ছক্কায় ৯ রান তুলেন ব্ল্যাকউড। ৬ উইকেটে রান ৭৩।
লাঞ্চ থেকে ফিরে ৪৯.৩ ওভারে জসুয়া ডি সিলভাকে সৌম্য সরকারের ক্যাচে পরিণত করেন তাইজুল। ৫৩ বলে ৪ চারে ২০ রান নেন তিনি। ৭ উইকেটে রান ১০৪। এরপর ৫১.২ ওভারে তাইজুলের বলে শান্তর তালুবন্দি হন আলজারি জোসেফ। ৮ বলে ১ ছক্কায় ৯ রানে মাঠ ছাড়েন তিনি। ৮ উইকেটে রান ১১৪।
৫২.১ ওভারে এনক্রুমাহ বোনারকে বোল্ড করে টাইগার শিবিরে চূড়ান্ত স্বস্তি আনেন নাঈম। ১২০ বলে ৩ চারে ৩৮ রান ফিরেন বোনার। ৯ উইকেটে রান ১১৬। তারপর ৫২.৫ ওভারে রাহকিম কর্নোয়ালকে মুশফিকের ক্যাচে পরিণত করে নাঈম। ৫ বলে ১ রানে আউট হন তিনি। ১০ উইকেটে রান ১১৭। এতে দ্বিতীয় ইনিংসে ১১৭ রানে গুটিয়ে যায় সফরকারীরা।
বাংলাদেশের পক্ষে উইকেট পেয়েছেন তাইজুল ইসলাম ৪টি, নাঈম হাসান ৩টি, আবু জায়েদ ২টি ও মেহেদী হাসান মিরাজ ১টি। ওয়েস্ট ইন্ডিজের ব্র্যাথওয়েট ৩টি কর্নওয়াল ৫টি ও ওয়ারিক্যানের ২ টি উইকেট পেয়েছেন।
এর আগে চট্টগ্রাম টেস্টে কাইলি মায়ার্সের ইতিহাস গড়া ডাবল সেঞ্চুরিতে তিন উইকেটে জিতেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। প্রথম ইনিংসে ৪৩০ ও ২২৩ রানে দ্বিতীয় ইনিংস ঘোষণা করে বাংলাদেশ। জবাবে প্রথম ইনিংসে ২৫৯ ও দ্বিতীয় ইনিংসে ৩৯৫ রান সংগ্রহ করে জয়ের বন্দরে পৌঁছে গিয়েছিল ক্যারিবীয়রা।
প্রায় ১ বছর পর টেস্ট খেলতে নেমেছিল বাংলাদেশ দল। কাগজে-কলমে বর্তমান ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলের চেয়ে বাংলাদেশ বেশ শক্তিশালী। কারণ ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলে তাদের নিয়মিত অধিনায়কসহ মূল তারকা খেলোয়াড়দের অধিকাংশই বাংলাদেশ সফরে আসেননি। তাছাড়া ঘরের মাঠে বাংলাদেশ এখন আগের চেয়ে শক্তিশালী। দেশের মাটিতে টাইগাররা ক্যারিবীয়দের কুপোকাত করবে এমনটা ভাবাই ছিল স্বাভাবিক। কিন্তু সেই আশা পুরণ করতে পারলো না টাইগাররা। একদিন আগেই হোয়াইটওয়াস হলো বাংলাদেশ।
বিএনএনিউজ/আমিন