বিএনএ, রাউজান (চট্টগ্রাম): চট্টগ্রামের রাউজানে হাজারো মানুষের ভালবাসায় সিক্ত হলেন পঞ্চমবারের মতো নব নির্বাচিত সংসদ সদস্য এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী। ১৯৯৬ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী হয়ে চট্টগ্রাম-৬ (রাউজান) আসনে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করেন এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী। নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী পরাজিত করেন এবিএম ফজলে করিম চৌধুরীকে।
পরবর্তী ২০০১ সাল, ২০০৯ সাল, ২০১৪, ২০১৮, ২০২৪ সালের সংসদ নির্বাচনে টানা পঞ্চমবারের মতো চট্টগ্রাম-৬ (রাউজান) আসন থেকে নৌকা প্রতীক নিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী।
জানা যায়, এ আসন থেকে ১৯৭০ সালের তৎকালীন পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী হিসাবে রাউজান-হাটহাজারী সংসদীয় আসন থেকে জাতীয় পরিষদের স্পিকার ফজলুল কাদের চৌধুরীকে বিপুল ভোটে পরাজিত করে জাতীয় পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে মুজিবনগর সরকারের মুখপাত্র হিসাবে প্রকাশিত ‘জয় বাংলা’ পত্রিকার সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য হিসাবে দায়িত্ব পালন করে ছিলেন।
১৯৭২ সালে ৩২ সদস্য বিশিষ্ট বাংলাদেশ সংবিধান কমিটির সদস্য হয়ে সংবিধান প্রণয়নে অবদান রাখেন। ১৯৭৩ সালের প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে তৎকালীন চট্টগ্রাম-৬ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৭৫ সালে বাকশাল গঠিত হলে তিনি চট্টগ্রাম উত্তর জেলার গভর্নর নিযুক্ত হন।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের সদস্যদের নির্মমভাবে হত্যা করার পর থেকে ১৯৭৯ সালের সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রাম-৬ (রাউজান) আসন থেকে মুসলিম লীগের প্রার্থী মরহুম সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী, আওয়ামী লীগের প্রার্থী মরহুম আবদুল্লাহ আল হারুনকে পরাজিত করে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
রাউজান এবং রাঙ্গুনিয়া দুটি আসন থেকে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ায় রাঙ্গুনিয়া আসন রেখে রাউজান আসন ছেড়ে দেয় সালাউদ্দিন। পরবর্তী উপ-নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী সাবেক শিল্পমন্ত্রী মরহুম জহির উদ্দিন খান চট্টগ্রাম-৬ (রাউজান) আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
১৯৯১ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি পঞ্চম সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টির সালাউদ্দীন কাদের বিজয়ী হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন আওয়ামী লীগের আবদুল্লাহ আল হারুন। ১৯৯৬ সালের ১২ জুন সপ্তম সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে বিএনপির গিয়াস উদ্দীন কাদের চৌধুরী বিজয়ী হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন আওয়ামী লীগের এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী। ২০০১ সাল থেকে ২০২৪ সালের সংসদ নির্বাচনে টানা পঞ্চমবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী।
আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী চট্টগ্রাম-৬ (রাউজান) আসনের সংসদ সদস্য হয়ে রাউজানে ব্যাপক উন্নয়নমূলক কাজ করেন। সন্ত্রাসের জনপদ রাউজানকে শান্তির জনপদে পরিণত করেন।
পঞ্চমবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে শপথ গ্রহণ করার পর রোববার (১৪ জানুয়ারী) রাউজানে এলে সর্বস্তরের মানুষের ভালবাসায় সিক্ত হন এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী। উপজেলা প্রশাসন, উপজেলা আওয়ামী লীগ, উপজেলা যুবলীগ, ছাত্রলীগ, পৌরসভা, রাউজানের ১৪টি ইউনিয়ন, দলিল লেখক সমিতি, রাউজান গার্ল গাইডস, স্কাউট, রাউজান প্রেস ক্লাব এবং বিভিন্ন সামাজিক সাস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ফুল ও বৃক্ষের চারা দিয়ে এবিএম ফজলে করিম চৌধুরীকে সংবর্ধিত করেন।
রাউজান প্রেস ক্লাবের সভাপতি শফিউল আলমের নেতৃত্বে আম গাছের চারা উপহার দেওয়ার সময়ে উপস্থিত ছিলেন রাউজান প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি মীর আসলাম, প্রদীপ শীল, সিনিয়র সহভাপতি নেজাম উদ্দিন রানা, সহসভাপতি জিয়াউর রহমান, কার্যনির্বাহী সদস্য কামাল হাবিবি, সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান, যুগ্ন সম্পাদক লোকমান আনচারী, অর্থ সম্পাদক শাহাদাৎ হোসেন সাজ্জাদ, প্রচার প্রকাশনা সম্পাদক আবিদ মাহমুদ প্রমুখ।
বিএনএনিউজ/ শফিউল আলম/ রেহেনা/ বিএম