বিএনএ, গাইবান্ধা :গাইবান্ধায় পৌরসভার নির্বাচন আর মাত্র একদিন বাকী। আগামী ১৬ জানুয়ারী এ নির্বাচনে ভোট গ্রহণ।নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রতিক পাওয়ার হতে প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থীরা ভোটারদের দ্বারে দ্বারে গিয়ে ভোট প্রার্থনা করেছেন সকাল হতে সন্ধ্যা পর্যন্ত । এ নির্বাচনে আওয়ামীলীগ ও বিএনপি মনোনীত প্রার্থী থাকলেও জাতীয় পার্টি মনোনীত প্রার্থী নেই। তবে নির্বাচনে মেয়র পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী রয়েছেন ৬ জন । মেয়র প্রার্থীগণ রাত দিন ভোটাদের দ্বারে দ্বারে নানান প্রতিশ্রুতি ফুলঝুড়ি নিয়ে ভোট চাইছেন। মেয়র প্রার্থীর পাশাপাশি সাধারন কাউন্সিলর ও মহিলা কাউন্সিলররাও ব্যস্ত সময় পার করেছেন। ১৪ জানুয়ারী রাত ১২ টা হতে নির্বাচনের পরের দিন রাত ১২ টা পর্যন্ত সকল ধরণের প্রচার প্রচারণা মিছিল সমাবেশ পৌর এলাকায় বন্ধ থাকবে বলে নির্বাচন্ কমিশন সূত্রে জানা যায়।
গত ৩০ ডিসেম্বর প্রতীক বরাদ্দের পর ভোটের পালে জোরেসোরে হাওয়া লেগেছে জেলার গাইবান্ধা ও সুন্দরগঞ্জ পৌরসভা জুড়ে। প্রতীক পেয়ে পশ্চিমের হিমেল হাওয়ায় নৌকা, ধানের শীষ, রেলইঞ্জিন, নারকেল গাছ, মোবাইল ফোন, চামুচ, জগ আর ক্যারাম বোর্ড মার্কা নিয়ে মেতে উঠেছেন আট মেয়র প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকরা। এ ছাড়া অন্যান্য কাউন্সিলর প্রার্থী ও তাদের কর্মী-সমর্থকরাও উল্লাসিত হয়ে ওঠেন। প্রতিক বরাদ্দের পর শুরু হয় আনুষ্ঠানিক প্রচারণা। প্রচারণা শুরুর পর থেকে নির্বাচনী আমেজ সৃষ্টি হয় পৌর শহরের সর্বত্র। এদিকে পৌরসভা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দেশের দুই বড় রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের নৌকা ও বিএনপির ধানের শীষের সাথে আওয়ামী লীগের তিন বিদ্রোহীর ভোটযুদ্ধ নির্বাচনী পরিবেশকে করে তুলেছে উৎসবমুখর। মেয়র আর কাউন্সিলর প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদের শ্লোগানে শ্লোগানে প্রকম্পিত হয়ে ওঠে গোটা গাইবান্ধা পৌর শহর।
নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী দলীয় ও স্বতন্ত্রসহ ৮ মেয়র প্রার্থী এবং তাদের কর্মী-সমর্থকরা নির্বাচনী প্রচার প্রচারণায় প্রতিদিন ভোর থেকে রাত পর্যন্ত গণসংযোগ, উঠোন বৈঠক, জনসভা ও পথসভা করে ব্যস্ত সময় পার করেছেন। এ ছাড়া সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর এবং সাধারণ কাউন্সিলরসহ ৫৮জন প্রার্থী ও তাদের সমর্থকরাও বিভিন্ন পাড়া-মহল্লায় ঘুরে ঘুরে নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছেন। এ পৌরসভায় ১৭ সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর এবং ৪১ জন সাধারণ কাউন্সিলর প্রার্থী নিজের ওয়ার্ড ভিত্তিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
উল্লেখ্য, গাইবান্ধা জেলা শহর নিয়ে গঠিত পৌরসভা, গাইবান্ধা পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দিতা করছেন আওয়ামীলীগের বর্তমান মেয়র শাহ্ মাসুদ জাহাঙ্গীর কবীর (নৌকা), বিএনপির মো. শহিদুজ্জামান শহীদ (ধানের শীষ), স্বতন্ত্র মো. আনওয়ার-উল-সরওয়ার (রেল ইঞ্জিন), মতলুবর রহমান (নারিকেল গাছ), মো. শামছুল আলম (মোবাইল ফোন), মো. আহসানুল করিম (চামুচ), মো. মির্জা হাসান (জগ) এবং ফারুক আহমেদ (ক্যারাম বোর্ড) প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। পৌর নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর বিপক্ষে অংশ নেয়ায় আওয়ামীলীগ থেকে আহসানুল করিম, ফারুক আহমেদ ও মতলুবর রহমানকে বহিষ্কার করা হয়েছে বলে জানা গেছে। আগামী ১৬ জানুয়ারী গাইবান্ধা পৌরসভা নির্বাচনে ৩১টি ভোটকেন্দ্রে ১৫৩টি ভোটকক্ষে ৫১ হাজার ৩শ’ ৮৭ জন ভোটার ভোট প্রদান করবেন নারী পুরুষ ভোটারগণ। এনির্বাচন সফল করতে নির্বাচন কমিশনের পাশাপাশি জেলা পুলিশসহ আইন শৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা ও জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাগণ নিজ নিজ প্রস্তুতি গ্রহন করছেন। শান্তিপূর্ন পরিবেশে অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানে তারা বদ্ধপরিকর। শান্তিপূর্ণ পরিবেশের নির্বাচনে ভোট গ্রহন অনুষ্ঠানে সাধারণ ভোটারগণ দাবী তোলায় পরিবেশ স্বাভাবিক রাখতে সকলের সার্বিক সহযোগী কামনা করেছে নির্বাচন কমিশন।
একই দিন ১৬ জানুয়ারী শনিবার জেলার সুন্দরগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে । এ পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে সাতজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাঁরা হলেন- আওয়ামী লীগের আব্দুল্লাহ আল মামুন (নৌকা), বিএনপির মশিউর রহমান সবুজ (ধানের শীষ), জাতীয় পার্টির আব্দুর রশিদ ডাবলু (লাঙ্গল), এনডিপির আহসান হাবীব মাসুদ (সিংহ), স্বতন্ত্র খয়বর হোসেন মওলা (নারিকেল গাছ), স্বতন্ত্র দেবাশীষ কুমার সাহা (মোবাইল), স্বতন্ত্র আল শাহাদাত জিকো (জগ)।পৌরসভায় মোট ভোট সংখ্য ১৪ হাজার ৭১ জন। এছাড়া সংরক্ষিত মহিলা ১১ জনসহ কাউন্সিলর পদে ৩৩ জন নির্বাচন করছেন।এর মধ্যে পুরুষ ৬ হাজার ৮৬৩ জন এবং নারী ভোটার ৭ হাজার ২০৮ জন। ৯টি ওয়ার্ডে ৯টি কেন্দ্রের ৪৪টি কক্ষে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা সেকেন্দার আলী জানান, সুন্দরগঞ্জ পৌরসভায় ব্যালটের মাধ্যমে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। শান্তিপূর্ণ পরিবেশে অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানে সকল ধরণের প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে নির্বাচন কমিশন।
বিএনএ/ আশরাফুল্ ইসলাম,ওজি