31 C
আবহাওয়া
২:৩২ অপরাহ্ণ - সেপ্টেম্বর ২৮, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের হালচাল: সংসদীয় আসন-২৮৯ (চট্টগ্রাম-১২)

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের হালচাল: সংসদীয় আসন-২৮৯ (চট্টগ্রাম-১২)


বিএনএ, ঢাকা: বিএনএ নিউজ টুয়েন্টি ফোর দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ধারাবাহিক নির্বাচনী হালচাল প্রচার করছে। এতে ১৯৯১ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত পঞ্চম জাতীয় সংসদ থেকে ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ সংসদ নির্বাচনের ভিত্তিতে রাজনৈতিক দলগুলোর আসনভিত্তিক সাংগঠনিক হালচাল তুলে ধরার চেষ্টা করে যাচ্ছে বিএনএ নিউজ টুয়েন্টি ফোর । আজ থাকছে চট্টগ্রাম-১২ আসনের হালচাল।

আজ থাকছে চট্টগ্রাম-১১ আসনের হালচাল

চট্টগ্রাম-১২ সংসদীয় আসনটি পটিয়া উপজেলা নিয়ে গঠিত। এটি জাতীয় সংসদের ২৮৯ তম আসন।

নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, ১৯৯১ সাল থেকে ২০০৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যন্ত এই আসনটি চট্টগ্রাম-১১ নামে পরিচত ছিল। পরবর্তীতে ২০১৪ সালের সীমানা পূর্ণঃ নির্ধারনে পর আসনটি চট্টগ্রাম-১২ নামে পরিচিত হয়।

পঞ্চম সংসদ নির্বাচন: বিএনপির শাহনেওয়াজ চৌধুরী বিজয়ী বিজয়ী হন

১৯৯১ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি পঞ্চম সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এই আসনে ভোটার ছিলেন ১ লাখ ৮৭ হাজার ১ শত ৩০ জন। ভোট প্রদান করেন ১ লাখ ১০ হাজার ৩ শত ৪৩ জন। নির্বাচনে বিএনপির শাহনেওয়াজ চৌধুরী বিজয়ী হন। ধানের শীষ প্রতীকে তিনি পান ৪৮ হাজার ৭ শত ১৫ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন আওয়ামী লীগের এম এ ইউসুফ। নৌকা প্রতীকে তিনি পান ৩৯ হাজার ২ শত ১৫ ভোট ।

ষষ্ঠ সংসদ নির্বাচন :বিএনপির শাহনেওয়াজ চৌধুরীকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়

১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি ষষ্ঠ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে আওয়ামী লীগসহ সব বিরোধী দল এই নির্বাচন শুধু বর্জন করে ক্ষান্ত হয়নি, প্রতিহতও করে। নির্বাচনে বিএনপি,ফ্রিডম পার্টি এবং কিছু নামসর্বস্ব রাজনৈতিক দল, অখ্যাত ব্যক্তি প্রতিদ্বন্দ্বীতা করেন। এই নির্বাচনে বিএনপির শাহনেওয়াজ চৌধুরীকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। ষষ্ঠ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত এই সংসদের মেয়াদ ছিল মাত্র ১১ দিন। তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিল পাশ হওয়ার পর এই সংসদ বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়।

সপ্তম সংসদ নির্বাচন:বিএনপির গাজী মোহাম্মদ শাহজাহান বিজয়ী হন

১৯৯৬ সালের ১২জুন সপ্তম সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে ভোটার ছিলেন ১ লাখ ৫৭ হাজার ৭ শত ৬০ জন। ভোট প্রদান করেন ১ লাখ ১৬ হাজার ৫ শত ৭৫ জন। নির্বাচনে বিএনপির গাজী মোহাম্মদ শাহজাহান বিজয়ী হন। ধানের শীষ প্রতীকে তিনি পান ৪৯ হাজার ২ শত ৪৮ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন আওয়ামী লীগের মোছলেম উদ্দীন আহমেদ । নৌকা প্রতীকে তিনি পান ৪২ হাজার ৭ শত ৭৪ ভোট।

YouTube player

অষ্টম সংসদ নির্বাচন: বিএনপির গাজী মোহাম্মদ শাহজাহান বিজয়ী হন

২০০১ সালের পহেলা অক্টোবর অষ্টম সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে ভোটার ছিলেন ২ লাখ ৯ হাজার ৩ শত ৪২ জন। ভোট প্রদান করেন ১ লাখ ৫৪ হাজার ৩৬ জন। নির্বাচনে বিএনপির গাজী মোহাম্মদ শাহজাহান বিজয়ী হন। ধানের শীষ প্রতীকে তিনি পান ৭৯ হাজার ৯ শত ১৪ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন আওয়ামী লীগের মোছলেম উদ্দীন আহমেদ । নৌকা প্রতীকে তিনি পান ৬৩ হাজার ২ শত ৫০ ভোট।

নবম সংসদ নির্বাচন: আওয়ামী লীগের সামছুল হক চৌধুরী বিজয়ী হন

২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর নবম সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে ভোটার ছিলেন ২ লাখ ১৬ হাজার ৫ শত ৬৪ জন। ভোট প্রদান করেন ১ লাখ ৮৮ হাজার ৩ শত ৩৮ জন। নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সামছুল হক চৌধুরী বিজয়ী হন। নৌকা প্রতীকে তিনি পান ১ লাখ ৩ হাজার ৮ শত ৬৯ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন বিএনপির গাজী মো: শাহজাহান। ধানের শীষ প্রতীকে তিনি পান ৭৫ হাজার ১ শত ৫৬ ভোট।

দশম সংসদ নির্বাচন:আওয়ামী লীগের সামছুল হক চৌধুরী বিজয়ী হন

২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সামছুল হক চৌধুরী বিজয়ী হন। নৌকা প্রতীকে তিনি পান ১ লাখ ২৮ হাজার ২ শত ১৪ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন জাতীয় পার্টির সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী । লাঙ্গল প্রতীকে তিনি পান ১০ হাজার ১ শত ৯৭ ভোট।

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধিনে র্নিবাচনের দাবিতে, বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট এই নির্বাচনে অংশ গ্রহন করেনি।

একাদশ সংসদ নির্বাচন: আওয়ামী লীগের সামছুল হক চৌধুরী বিজয়ী হন

২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর একাদশ সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে ভোটার ছিলেন ২ লাখ ৮৫ হাজার ৯ শত ৬১ জন। ভোট প্রদান করেন ২ লাখ ৪১ হাজার ১ শত ৫৯ জন।

নির্বাচনে প্রার্থী ছিলেন ৮ জন। নৌকা প্রতীকে আওয়ামী লীগের সামছুল হক চৌধুরী, ধানের শীষ প্রতীকে বিএনপির এনামুল হক, লাঙ্গল প্রতীকে জাতীয় পার্টির নুরুচ্ছফা সরকার, হাতপাখা প্রতীকে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের দেলওয়ার হোসেন সাকী, মোমবাতি প্রতীকে ইসলামী ফ্রন্টের এম এ মতিন, চেয়ার প্রতীকে ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের মঈন উদ্দীন চৌধুরী. টেলিভিশন প্রতীকে ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট- বি এন এফ এর দীপক কুমার পালিত এবং মই প্রতীকে সমাজতান্ত্রিক দল বাসদের সাইফুদ্দীন মো; ইউনুচ প্রতিদ্বন্দ্বীতা করেন।

নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সামছুল হক চৌধুরী বিজয়ী হন। নৌকা প্রতীকে তিনি পান ১ লাখ ৮৩ হাজার ১ শত ৭৯ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন বিএনপির এনামুল হক । ধানের শীষ প্রতীকে তিনি পান ৪৪ হাজার ৬ শত ৯০ ভোট।

কারচুপির অভিযোগে বিএনপি নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নির্বাচন বর্জন ও ফলাফল প্রত্যাখান করে।
পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, পঞ্চম, ষষ্ঠ, সপ্তম ও অষ্টম সংসদে বিএনপি এবং নবম, দশম ও একাদশ সংসদে আওয়ামী লীগ বিজয়ী হয়।

দৈবচয়ন পদ্ধতিতে জরিপ

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনএ নিউজ টুয়েন্টি ফোর এর গবেষণা টিম দৈবচয়ন পদ্ধতিতে সারাদেশে জরিপ চালায়। জরিপে অংশগ্রহণকারি বেশীরভাগ ভোটার ১৯৯১ সালের পঞ্চম, ১৯৯৬ সালের সপ্তম, ২০০১ সালের অষ্টম ও ২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সুষ্ঠু, নিরেপক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক হয়েছে বলে অভিমত ব্যক্ত করেন। তারই ভিত্তিতে বিএনএ নিউজ টুয়েন্টি ফোর চট্টগ্রাম-১২ আসনে পঞ্চম, সপ্তম, অষ্টম ও নবম এই ৪টি নির্বাচনের প্রদত্ত ভোটের পরিসংখ্যানকে মানদন্ড ধরে আওয়ামী লীগ,বিএনপি, জাতীয় পার্টি ও জামায়াত ইসলামীর সাংগঠনিক শক্তি বিশ্লেষণের মাধ্যমে একটি কল্পানুমান উপস্থাপনের চেষ্টা করেছে।

অনুসন্ধানে দেখা যায়, চট্টগ্রাম-১২ সংসদীয় আসনে ১৯৯১ সালের পঞ্চম সংসদ নির্বাচনে ভোট প্রদান করেন ৫৮.৯৭% ভোটার। প্রদত্ত ভোটের মধ্যে আওয়ামী লীগ ৩৫.৫৪%, বিএনপি ৪৪.১৫%, জাতীয় পার্টি ১০.৭৪% স্বতন্ত্র ও অন্যান্য ৯.৫৭% ভোট পায়।

১৯৯৬ সালের সপ্তম সংসদ নির্বাচনে ভোট প্রদান করেন ৭৩.৮৯% ভোটার। প্রদত্ত ভোটের মধ্যে আওয়ামী লীগ ৩৬.৬৯%, বিএনপি ৪২.২৫%, জাতীয় পার্টি ১৪.৭১%, জামায়াত ইসলামী ৩.১৮% স্বতন্ত্র ও অন্যান্য ৩.১৭% ভোট পায়।
২০০১ সালের অষ্টম সংসদ নির্বাচনে ভোট প্রদান করেন ৭৩.৫৮% ভোটার। প্রদত্ত ভোটের মধ্যে আওয়ামী লীগ ৪১.০৬%, ৪ দলীয় জোট ৫১.৮৮%, জাতীয় পার্টি ১.০০% স্বতন্ত্র ও অন্যান্য ৬.০৬% ভোট পায়।

২০০৮ সালের নবম সংসদ নির্বাচনে ভোট প্রদান করেন ৮৬.৯৭% ভোটার। প্রদত্ত ভোটের মধ্যে ১৪ দলীয় জোট ৫৫.১৫%, ৪ দলীয় জোট ৩৯.৯০%, স্বতন্ত্র ও অন্যান্য ৪.৯৫% ভোট পায়।

চট্টগ্রাম-১২ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য আওয়ামী লীগের শামসুল হক চৌধুরী। সংসদ সদস্যের পাশাপাশি বর্তমানে তিনি জাতীয় সংসদের হুইপের দায়িত্বেও রয়েছেন। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি আবারও মনোনয়ন চাইবেন।

এবার তার মনোনয়ন নিশ্চিত নয়। শামসুল হক চৌধুরীর বিরুদ্ধে দলের ভিতরে-বাহিরে রয়েছে অসংখ্য অভিযোগ। বিশেষ করে তার ছেলের কিছু বির্তকিত কর্মকান্ডের কারণে জনপ্রিয়তা কমেছে। যার টেউ লেগেছে দলে। আওয়ামী লীগের একটা বড় অংশ শামসুল হক চৌধুরীর বিরোধিতা করছে।

এ আসনের আওয়ামী লীগের অন্তত আধা ডজন প্রার্থী মনোনয়ন প্রত্যাশী। এদের মধ্যে বেশিরভাগ শামসুল হক চৌধুরী বিরোধী হিসাবে পরিচিত। মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে রয়েছেন বিজিএমইএ পরিচালক নাছির উদ্দিন, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোতাহারুল ইসলাম চৌধুরী, কেন্দ্রীয় যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বদিউল আলম, সংরক্ষিত মহিলা আসনের সাবেক সংসদ সদস্য চেমন আরা তৈয়ব, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক নির্বাহী সদস্য সেলীম নবী, মেজর জেনারেল এমএ আবদুল ওয়াদুদ বীর বিক্রম, পটিয়া পৌরসভা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মেয়র আইয়ুব বাবুল, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মণ্ডলীর সদস্য ও নজির আহমদ দোভাষ ফাউন্ডেশন চেয়ারম্যান ডক্টর জুলকারনাইন চৌধুরী জীবন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাবেক মেয়র অধ্যাপক হারুনুর রশিদ, জাতীয় ফুটবল দলের ম্যানেজার সত্যজিৎ দাশ রুপু।

বিএনপি নির্বাচনে না গিয়ে নির্বাচন প্রতিহত করার ঘোষণা দিয়েছে। ফলে বিএনপি নির্বাচনী ট্রেন থেকে স্বেচ্ছায় নেমে গেছে। নির্বাচনে গেলে এ আসন থেকে মনোনয়ন চাইবেন, বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য শাহজাহান জুয়েল। এ ছাড়া বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মধ্যে রয়েছেন দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক এনামুল হক, পটিয়া পৌরসভার সাবেক মেয়র ইদ্রিস মিয়া।

এছাড়াও জাতীয় পার্টি থেকে দলীয় মনোনয়ন চাইবেন সাবেক সংসদ সদস্য ও কেন্দ্রীয় নেতা সিরাজুল ইসলাম সিরাজ এবং একাদশ জাতীয় সংসদের প্রার্থী নুরুচ্ছফা সরকার।

ইসলামী ফ্রন্টের চেয়ারম্যান এম এ মতিন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ থেকে ড. বেলাল নুর আজিজী এ আসন থেকে দলীয় মনোনয়ন চাইবেন।

নির্বাচনী ভাবনায়, হুইপ সামশুল হক চৌধুরী এমপি বলেন, এই আসনটি ৩৩ বছর ধরে আওয়ামী লীগের হাতের নাগালের বাহিরে ছিল। ২০০৮ সালে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার ওপর তিন দফা আস্থা রেখেছেন। এবার রাখবেন এমন প্রত্যাশা করেন হুইপ সামশুল হক।

চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি মোহাম্মদ নাসির বলেন, পটিয়ার মানুষ এক ব্যক্তির স্বেচ্চাচারিতা ও অন্যায় আচরণ থেকে মুক্ত হতে চায়। পটিয়ার হারানো গৌরব ফিরিয়ে আনা, প্রত্যাশিত উন্নয়ন ও প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্ন স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে পরিবর্তন দরকার বলে মনে করেন নাসির।

কেন্দ্রীয় যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. বদিউল আলম বলেন, দীর্ঘ ৪৪ বছর তৃনমুলের মানুষের সুখ-দ:খের সাথী হয়ে কাজ করছেন। তৃণমূলের একজন বঙ্গবন্ধুর আর্দশের সৈনিক ও আওয়ামী লীগের কর্মী হিসাবে দল ও প্রধানমন্ত্রী নিশ্চয়ই মূল্যায়ন করবেন এমন প্রত্যাশা বদিউল আলমের।

বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য গাজী শাহজাহান জুয়েল বলেন, বিএনপি এখন একদফা আন্দোলনে ব্যস্ত। নির্বাচন নিয়ে ভাবছে না। বিএনপি যদি দলগতভাবে নির্বাচনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় তবে মনোনয়ন চাইবেন এবং জিতবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

দক্ষিণ জেলা বিএনপির সিনিয়র সদস্য, সাবেক পটিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ইদ্রিস মিয়া বলেন, বর্তমান সরকারের অধীনে কোন নির্বাচনে তারা অংশ নিবেন না। সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হলে দলীয় মনোনয়ন চাইবেন। পটিয়াকে বিএনপির ঘাঁটি উল্লেখ করে ইদ্রিচ মিয়া আরও বলেন, জনগণ ভোট দিতে পারলে আওয়ামী লীগ প্রার্থী বিপুল ভোটে পরাজিত হবে ।

তথ্য উপাত্ত বিশ্লেষণে দেখা যায়, চট্টগ্রাম-১২ (পটিয়া) আসনে ১৯৭৩ সালের প্রথম সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নুরুল ইসলাম চৌধুরী সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে স্বপরিবারে হত্যার পর রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের হাওয়া এই আসনটিতেও লাগে। জিয়াউর রহমানের আমলে অনুষ্ঠিত ১৯৭৯ সালের দ্বিতীয় সংসদ নির্বাচনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন বিএনপির নজরুল ইসলাম। জিয়ার মৃত্যু পরবর্তী সময় জেনারেল এরশাদ ক্ষমতা গ্রহনের পর অনুষ্ঠিত ১৯৮৬ সালের তৃতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টির চৌধুরী হারুনুর রশীদ এবং ১৯৮৮ সালের চতুর্থ সংসদ নির্বাচনে সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

১৯৯১সালের পঞ্চম সংসদ নির্বাচনে বিএনপির শাহ নেওয়াজ চৌধুরী মন্টু এবং ১৯৯৬ সালের ষষ্ঠ ও ২০০১ সালের সপ্তম সংসদ নির্বাচনে বিএনপির গাজী শাহজাহান জুয়েল সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। আওয়ামী লীগকে আসনটি পুনরুদ্ধারের জন্য অপেক্ষায় থাকতে হয় ৩৩ বছর। ২০০৮ সালের নবম সংসদ নির্বাচনে আসনটি বর্তমান সংসদ সদস্য শামশুল হক চৌধুরীর মাধ্যমে আওয়ামী লীগের ঘরে আসে। যা এখনো অব্যাহত আছে।

আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক অবস্থা বেশ মজবুত হলেও অন্তঃদলীয় কোন্দল খুব প্রবল। দুইগ্রুপে বিভক্ত হয়ে আছে আওয়ামী লীগ। যা নির্বাচনে সরাসরি প্রভাব পড়বে। সেকারণে এই আসনে আওয়ামী লীগকে নির্ভার বলা যাবে না। অন্যদিকে বিএনপিতে দলীয় কোন্দল নেই। প্রকাশ্য সাংগঠনিক তৎপরতা না থাকলেও তৃণমুল পর্যায়ে প্রচুর ভোট রয়েছে। ভোট ব্যাংক আছে জামায়াত ইসলামীরও। যা বিএনপিকে এগিয়ে নিবে। সেই দিক থেকে বিএনপিকে নির্ভার বলা য়ায়।

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক হলে জাতীয় সংসদের ২৮৯ তম সংসদীয় আসন চট্টগ্রাম-১২ (পটিয়া) আসনটিতে জয়-পরাজয় নির্ভর করছে বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা না করার ওপর। বিএনপি প্রতিদ্বন্দ্বীতা করলে আওয়ামী লীগের জয়লাভ কঠিন হবে। বিএনপি নির্বাচন বর্জন করলে খুব সহজে বিজয়ী হবে আওয়ামী লীগ এমনটাই মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

বিএনএ/ শাম্মী, রেহানা, এমএফ, ওয়াইএইচ

Loading


শিরোনাম বিএনএ