26 C
আবহাওয়া
৬:২৬ পূর্বাহ্ণ - সেপ্টেম্বর ২৮, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » কোরবানির আগে চট্টগ্রামে ছড়িয়ে পড়ছে ক্ষুরা রোগ

কোরবানির আগে চট্টগ্রামে ছড়িয়ে পড়ছে ক্ষুরা রোগ


বিএনএ, চট্টগ্রাম: কোরবানির ঈদের বাকি আর তিন দিন। এর মধ্যে চট্টগ্রামের বিভিন্ন উপজেলায় গরুর লাম্পি স্কিন রোগ ও ক্ষুরা রোগ ছড়িয়ে পড়ায় ভয়ের মধ্যে পড়েছেন খামারিরা। খবর নিয়ে জানা গেছে এই রোগ বেশি ছড়িয়ে পড়েছে চট্টগ্রামের আনোয়ারা  উপজেলা, বোয়ালখালী উপজেলা, সাতকানিয়া উপজেলা ও হাটহাজারী উপজেলাসহ আরো বেশ কয়েকটি উপজেলা।

দেখা গেছে গত এক সপ্তাহে শুধু আনোয়ারা উপজেলায় এই রোগে ৪ টি গরু মারা যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এর মধ্যে এই উপজেলার হাইলধর গ্রামে এক খামারির ২টি গরুর মৃত্যু হয়েছে বলে জানান খামারি নুর মোহাম্মদ। এই গরু গুলো কোরবানির জন্য মোটাতাজা করা হয়েছে বলে জানান ওই খামারি। উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ড. সমরঞ্জন বড়ুয়া বলেন‌, বাইরে থেকে গরু আসায় এই‌ রোগের প্রকোপ বেড়েছে। আমরা প্রাণিসম্পদ হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছি। কোরবানির গরু ছাড়া অন্য গরু গুলোকে টিকা ও ভ্যাকসিন সংকট থাকায় খামারীদের বাইরে থেকে কিনে চিকিৎসা করতে হচ্ছে।

বিভিন্ন উপজেলার প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তাদের সাথে কথা বললে তারা জানায় , লাম্পি স্কিন রোগ বা এলএসডি ভাইরাসে আক্রান্ত গরু দিয়ে কোনো অবস্থাতেই কোরবানি দেওয়া চলবে না।

এ রোগে আক্রান্ত পশুর মধ্যে ২০ শতাংশ মারা যায়; বাকি ৮০ শতাংশ ভালো হয়ে গেলেও রোগটির নির্দিষ্ট কোনো ভ্যাকসিন বা চিকিৎসা নেই।

মূলত গরু ও খামারকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য খামারিদের পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা। তবে এ রোগে মানুষের আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা নেই।

যদিও খামারিদের অভিযোগ, এই রোগের  চিকিৎসা ও ঔষধ এর দাম ঊর্ধ্বমুখী হওয়ার নিঃস্ব হয়ে খামার করা ছেড়ে দিয়েছে অনেকেই। অনেক সময় এই রোগ দেখা দেওয়ার সাথে সাথে গরুর মৃত্যু হয়। চিকিৎসা দেওয়ার মত সুযোগ থাকে না।

পটিয়া উপজেলার  রুবেল নামের এক খামারি জানান, তার গোয়ালে থাকা ৭টির গরুর মধ্যে ৫টিতে ক্ষুরা রোগে আক্রান্ত হয় আমার। আর ছোট দুইটা বকনা বাছুরের মধ্যে ঘা দেখা দিয়েছে। তিনি তার গরুগুলোকে বাঁচাতে নানা চেষ্টা করে যাচ্ছেন বলে জানান।

চট্টগ্রাম জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রামে এবার মোটাতাজা করা হয়েছে ৮৫ লাখ ২৩হাজার ৫৯টি গবাদিপশু। এর মধ্যে ষাড় গরু রয়েছে ৩৪৮২৭৬টি। বলদ রয়েছে ১৪০৩৫৫টি ও গাভী রয়েছে ৩৭৮৪৪টি। এছাড়াও মহিষ মোটাতাজা করা হয়েছে ৭১হাজার ৩৬৫। ছাগাল ১৯৫৭৮২, ভেড়া ৫৮৬৯২ ও অন্যান্য ৪৪টি পশু কোরবানির জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে।

সাতকানিয়া উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান বলেন, চলতি মাসের গত ১০ দিন হাসপাতালে ৩০০টি পশুর চিকিৎসা দেওয়া হয়। যার মধ্যে লাম্পি স্কিন আক্রান্ত ১০০টি পশু, ক্ষুরা রোগে আক্রান্ত ২৫টি । গড়ে অসুস্থ গরুর চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে ৩০টি গরুর।

চট্টগ্রাম জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. নজরুল ইসলাম বলেন, এটা একটি মহামারি রোগ। সারা বছর এই রোগ থাকে। আমরা ভ্যাকসিন করে থাকি। আসলে কোরবানির এই সময়ে ভ্যাকসিন করা যায় না। মূলত পশু জবাইয়ের ২০ দিন আগে ভ্যাকসিন করতে হয়। এটা মূলত বাইরের বিভিন্ন জায়গা থেকে গরু আসায় আবার হাটবাজার থেকে গরু গুলো ফিরিয়ে নেওয়ার ফলে এই রোগ ছড়িয়ে পড়ছে। খামারিরা সচেতন থাকলেও বেপারিরা সচেতন না থাকাতে এই রোগ বেশি ছড়িয়ে পড়ছে। এই মুহুর্তে গরু গুলোর ভ্যাকসিন  ছাড়া অন্য চিকিৎসা দিয়ে বিশেষ করে গবাদি পশুর যত্ন নেওয়া ছাড়া আর বিকল্প নেই।

বিএনএনিউজ/নাবিদ/এইচ.এম/এইচমুন্নী

Loading


শিরোনাম বিএনএ