22 C
আবহাওয়া
১২:০৫ পূর্বাহ্ণ - নভেম্বর ২২, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » পান্তাভাত কী ‘শক্তিবর্ধক! ভিত্তি কী

পান্তাভাত কী ‘শক্তিবর্ধক! ভিত্তি কী

পান্তাভাত

বিএনএ, রিপোর্ট: বাংলা নববর্ষ নিয়ে যারা আবেগি তাদের কাছে পান্তাভাত খুব কদরের,জরুরি বিষয়। সে দিন অবশ্যই চাই-ই। পান্তা-ইলিশ হলেতো কথাই নেই।
বাংলাদেশের শহরাঞ্চলে বাংলা নববর্ষ উদযাপনে পান্তা-ইলিশ অপরিহার্য বলে ধরে নেয়া হয়।যদিও বাংলা নববর্ষের আগে ইলিশ মাছ কেনা সবার পক্ষে খুব সহজ না।

“রাখাল ছেলেরা বা মাঠে কৃষিকাজ করা কৃষকরা সাধারণ সময়েই সকালে পান্তা ভাত খেয়ে কাজ করতে যেত। আর পান্তা ভাতের সাথে সাধারণত লবণ, কাঁচা মরিচ, শুকনো পোড়া মরিচ ও পেঁয়াজ খাওয়ার প্রচলন ছিল।

গ্রামের অনেক মধ্যবিত্ত পরিবারের নারীরা সেহেরিতে থেকে যাওয়া অতিরিক্ত ভাতে টিউবওয়েলের পানি মিশিয়ে রেখে দিতেন, ইফতারের সময় খেতেন। ফলে গরমের দিনে সেভাত নষ্ট হত না। সকালে যারা গ্রামের বাড়ি থেকে চাকরি বা অন্য কোন কাজে বের হতেন তারাও পান্তাভাত খেতেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশ্ব ধর্ম এবং সংস্কৃতি বিভাগের অধ্যাপক নিরঞ্জন অধিকারী বলেন, এই চল শুরু হওয়ার কোনো নির্দিষ্ট সময় না থাকলেও কৃষিভিত্তিক সামন্তবাদী সমাজের প্রসার শুরু হওয়ার সাথেই এটি শুরু হয়, “নববর্ষ উদযাপনের সাথে পান্তা খাওয়ার এই চলের ধর্মীয়, সাংস্কৃতিক এবং সামাজিক দিক থেকে ঐতিহাসিক যোগসূত্র রয়েছে। আমাদের লোকজ সংস্কৃতির সাথে এটি সরাসরি যুক্ত।”

ভাত বেশ কিছু সময় পানিতে ভিজিয়ে রেখে খেলে তা ‘শক্তিবর্ধক’ হিসেবে কাজ করে বলে ধারণা ছিল তখনকার গ্রামের মানুষদের। কিন্তু এই ধারণার বৈজ্ঞানিক ভিত্তি আসলে কতটা রয়েছে?

পান্তাভাত কী ‘শক্তিবর্ধক! ভিত্তি কী

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুষ্টিবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক নজরুল ইসলাম খান বলেন, “পান্তা ভাত হলো এনার্জি গিভিং ফুড (শক্তিদায়ক খাবার)। তবে এতে সাধারণ ভাতের চেয়ে খুব একটা বেশি পুষ্টিগুণ নেই।”

“তবে ভাত পানিতে ভিজিয়ে রাখা হয় বলে এটি কিছুটা ফারমেন্টেড (গাঁজানো) হয়। এটি হজমে সুবিধা করে এবং গরমের দিনে এটি খেলে মানুষের আরামের ঘুম হয়।”

তবে কিছু বিশেষ পুষ্টি উপাদানের ক্ষেত্রে সাধারণভাবে রান্না করা ভাতের চেয়ে পান্তা ভাত কয়েকগুণ বেশি সমৃদ্ধ থাকে বলে প্রকাশিত হয়েছে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউটের সাম্প্রতিক এক গবেষণায়।

কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউটের পুষ্টি বিভাগের পরিচালক মনিরুল ইসলাম জানান, “সাধারণ রান্না করা ভাতে মাইক্রো নিউট্রিয়েন্ট আবদ্ধ অবস্থায় থাকে যা শরীর শোষণ করতে পারে না।”

“রান্না করা ভাতকে ৮ থেকে ১২ ঘন্টা পানিতে ভিজিয়ে রাখলে সেই ভাতের মধ্যে থাকা ক্যালসিয়াম এবং আয়রন বহুগুণ বেড়ে যায় এবং তা সহজে শরীর শোষণ করতে পারে।”

পরিচালক মনিরুল ইসলাম জানান, ক্ষেত্র বিশেষে এই ভাতের ক্যালসিয়াম সাড়ে তিনশো গুণ পর্যন্ত এবং আয়রন প্রায় ষাট গুণ পর্যন্ত বাড়তে পারে।

তবে পান্তা ভাতে ব্যবহার করা পানির জীবাণুমুক্ত হওয়ার বিষয়টিকে বেশি গুরুত্ব দেন তিনি।

“ভাত ভেজানোর পানি অবশ্যই বিশুদ্ধ খাবার পানি হওয়া উচিত, নাহলে সেখানে ই-কোলাই [এক ধরনের নেগেটিভ ব্যাকটেরিয়া] থাকতে পারে।”

তাই পহেলা বৈশাখ বাইরের পান্তাভাত খেতে একটু সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে সবাইকে।

সূত্র: বিবিসি বাংলা
এসজিএন

Loading


শিরোনাম বিএনএ