বিএনএ, ঢাকা: আশির দশকের হিন্দি সিনেমার গানের মতোই এখন পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) ও পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন) ক্ষমতা ভাগাভাগি সংক্রান্ত চুক্তি করেছে । পাঁচ বছরের মধ্যে আড়াই বছর প্রধানমন্ত্রীত্ব করবে পিপিপি এবং আড়াই বছর পিএমএল-এন। অর্থাৎ ফিফটি ফিফটি ফর্মূলাতেই হবে ক্ষমতার ভাগাভাগি। পাকিস্তানের রাজনৈতিক ইতিহাসে ফিফটি- ফিফটি ফর্মূলাটি বেশ আলোড়ন তুলেছে।
পাকিস্তানের ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির ২৬৪টি আসনে গণনা শেষ হয়ে গেলেও কোনও দলই এককভাবে ‘জাদুসংখ্যা’ ছুঁতে পারেনি। ত্রিশঙ্কু ফলাফল হওয়ায় জোট সরকারই ক্ষমতায় আসতে চলছে বলে মনে করা হচ্ছে।
কেন্দ্র ও প্রদেশে জোট সরকার গঠনের প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে ৮ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনের পর রোববার তাদের প্রথম বৈঠকে অর্ধেক মেয়াদের জন্য প্রধানমন্ত্রী নিয়োগের ধারণাটি আলোচনা করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ২০১৩ সালে বেলুচিস্তানে পিএমএল-এন এবং ন্যাশনাল পার্টি (এনপি) একই পন্থায় ক্ষমতা ভাগাভাগি করেছিল। তখন দুটি দলের দুই মুখ্যমন্ত্রী আড়াই বছর করে পাঁচ বছরের মেয়াদ পূর্ণ করেছিলেন।
লাহোরের বিলাওয়াল হাউজে রোববারের বৈঠকে দুই পক্ষই সাধারণ নির্বাচনের পর দেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য সহযোগিতা করতে নীতিগতভাবে সম্মত হয়েছে।
বৈঠকে পিপিপি-পার্লামেন্টারিয়ান প্রেসিডেন্ট আসিফ আলি জারদারি, পিপিপি চেয়ারম্যান বিলাওয়াল-ভুট্টো জারদারি ও পিএমএল-এন থেকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ উপস্থিত ছিলেন। পিএমএল-এন প্রতিনিধি দলে ছিলেন আজম নাজির তারার, আয়াজ সাদিক, আহসান ইকবাল, রানা তানভীর, খাজা সাদ রফিক, মালিক আহমেদ খান, মরিয়ম আওরঙ্গজেব ও শেজা ফাতিমা।
উভয় দলের নেতারা বিরাজমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট এবং দেশের উন্নতির জন্য সহযোগিতামূলক প্রচেষ্টার অপরিহার্যতা নিয়ে একান্ত আলোচনা করেছেন।
পরে এক যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠিত বৈঠকে জাতির স্বার্থ ও মঙ্গলকে সবকিছুর ঊর্ধ্বে রাখার অঙ্গীকার ব্যক্ত করা হয়।
যৌথ বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, আলোচনার মূল বিষয়গুলো ছিল পাকিস্তানের সামগ্রিক পরিস্থিতির মূল্যায়ন, ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক কৌশল নিয়ে আলোচনা এবং বোর্ড জুড়ে স্থিতিশীলতা ও অগ্রগতি প্রচারের লক্ষ্যে সুপারিশ বিনিময়।
উভয় দলই পাকিস্তানকে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা থেকে দূরে সরিয়ে সমৃদ্ধি ও স্থিতিস্থাপকতার দিকে নিয়ে যাওয়ার জন্য তাদের নিবেদন নিশ্চিত করেছে।
নওয়াজ এবং বিলওয়াল যখন সরকার গঠনের তোড়জোড় শুরু করেছেন, সেই সময় রাস্তায় নামার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই)। ভোটে কারচুপির অভিযোগ তুলে নির্বাচন কমিশনের দফতরগুলির সামনে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন পিটিআই সমর্থকেরা। ইতিমধ্যেই রাওয়ালপিন্ডি এবং লাহোরের পূর্ব প্রান্তের একাধিক জায়গা থেকে পুলিশ এবং পিটিআই সমর্থকদের মধ্যে খণ্ডযুদ্ধের খবর পাওয়া গিয়েছে। সব মিলিয়ে পাকিস্তান একটি অস্থির সময় পার করছে।
বিএনএ/ শামীমা চৌধুরী শাম্মী, ওজি/ হাসনা