বিএনএ, চবি: রসায়ন বিভাগের অধ্যাপকের বিরুদ্ধে একই বিভাগের স্নাতকোত্তরের এক ছাত্রীকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে চলমান আন্দোলন অব্যাহত রেখেছে বিভাগের শিক্ষার্থীরা। অভিযুক্ত শিক্ষককে স্থায়ী বহিষ্কার না করা পর্যন্ত আন্দোলন চলবে বলে জানান আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারী) বেলা ১১টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে বিভিন্ন স্লোগান দিয়ে আন্দোলন করতে থাকে শিক্ষার্থীরা।
এ ঘটনায় ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি কাজ করছে। কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. জরিন আখতার। আজ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন এ ঘটনার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার কথা থাকলেও এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত তা প্রতিবেদন জমা দেয়নি। এজন্য শিক্ষার্থীরা স্থায়ী বহিষ্কার না হওয়া পর্যন্ত এ আন্দোলন চলমান থাকবে বলে জানান। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আশ্বাস দিলেও মাঠে থেকেই বিচার নিশ্চিত করতে চাই তারা।
এমন জঘন্য অপকর্মের বিরুদ্ধে প্রশাসনের কাছে বিচার চাই শিক্ষার্থীরা। আন্দোলনের বিষয়ে রসায়ন বিভাগের ২০১৭-১৮ সেশনের শিক্ষার্থী ইফতি বলেন, আজ ১০ম দিনের মতো আমরা আন্দোলন করছি। আমাদের বোনকে ধর্ষণচেষ্টার মতো জঘন্য ব্যক্তিকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে যাতে এরকম নিকৃষ্ট কাজ কেউ করার চিন্তাও মাথায় না আনে। প্রশাসন থেকে প্রতিবেদন জমা দিতে গড়িমসি করছে। আজকের মধ্যে যদি তদন্ত প্রতিবেদন না দেয় তাহলে আমাদের আন্দোলন আরো কঠোর হবে।
আন্দোলনরত অন্যান্য শিক্ষার্থীরা বলেন, আমরা এতোদিন আন্দোলন করছি তবে আমরা আজও তদন্ত প্রতিবেদন পায়নি। আমাদের দুটি দাবি, আমরা ‘অভিযুক্ত শিক্ষকের স্থায়ী বহিষ্কার চাই, বিশ্ববিদ্যালয় বাদী হয়ে তার নামে মামলা করতে হবে’। চূড়ান্ত শাস্তি নিশ্চিত না হওয়া অবধি আমরা ক্লাস বর্জন করবো।
উল্লেখ্য, গত ৩১ জানুয়ারি উপাচার্য বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন ভুক্তভোগী ছাত্রী, তিনি লিখেন, থিসিস চলাকালীন আমার সুপারভাইজার কর্তৃক যৌন হয়রানি ও নিপীড়নের শিকার হই। থিসিস শুরুর পর থেকে তিনি আমার সঙ্গে বিভিন্ন যৌন হয়রানিমূলক; যেমন- জোর করে হাত চেপে ধরা, শরীরের বিভিন্ন অংশে অতর্কিত ও জোরপূর্বক স্পর্শ করা, অসংগত ও অনুপযুক্ত শব্দের ব্যবহার করেছেন। কেমিক্যাল আনাসহ আরও বিভিন্ন বাহানায় তিনি আমাকে তার রুমে ডেকে নিয়ে জোরপূর্বক ঝাপটে ধরতেন। এর মধ্যে গত ১৩ জানুয়ারি আনুমানিক ১২টা নাগাদ কেমিক্যাল দেয়ার কথা বলে রুমে ডেকে নিয়ে দরজা বন্ধ করে ধর্ষণের চেষ্টা করেন।
এমতাবস্থায় তিনি শারীরিক ও মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। তার পক্ষে দৈনন্দিন ও প্রাতিষ্ঠানিক কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়া অসম্ভব হয়ে পড়েছে। থিসিস ল্যাবে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলে জানান ওই ছাত্রী।
বিএনএ/সুমন/এইচ.এম/ হাসনা