বিএনএ, বগুড়া: বগুড়ার শাজাহানপুরে পারিবারিক শত্রুতার জেরে পাঁচ বছরের শিশু রোমানকে হত্যা ও মরদেহ গুমের দায়ে ১২ বছর পর ২ জনের মৃত্যুদণ্ড এবং ১ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তদের ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্তকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে তাকে আরও এক মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়েছে।
সোমবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে বগুড়ার তৃতীয় অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ বেগম রুবাইয়া ইয়াসমিন এ রায় দেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুইজন হলেন- জেলার শাজাহানপুরের ক্ষুদ্র কুষ্টিয়া গ্রামের আব্দুল খালেক ও চোপি নগর দক্ষিণ পাড়ার আব্দুল মাজেদ। তবে এই দুইজন পলাতক রয়েছেন।
রায়ে ক্ষুদ্র কুষ্টিয়া গ্রামের আব্দুর রাজ্জাককে যাবজ্জীবন সাজা দেওয়া হয়েছে। তিনি আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০১১ সালের ২৩ আগস্ট শাজাহানপুরের চোপি নগর এলাকার মাহবুর রহমানের ছেলে রোমানকে হত্যার পর মরদেহ গুম করে আসামিরা। পরে ওই বছরের ২৮ আগস্ট একই এলাকার খলিল নামে একজনের বাড়ির সেপটিক ট্যাংক থেকে রোমানের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী জহুরুল ইসলাম বলেন, রোমান হোসেনের দাদার নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আসামি খালেক ও মাজেদের সঙ্গে দ্বন্দ্ব শুরু হয়েছিল। এছাড়া নিহতের পরিবারের সঙ্গে তাদের জমি সংক্রান্ত বিরোধ ছিল। এসবের প্রতিশোধ নিতে আব্দুল খালেক ও আব্দুল মাজেদ শিশু রোমানকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। তারা আব্দুর রাজ্জাকের মাধ্যমে রোমানকে চকলেটের লোভ দিয়ে নিয়ে আসেন। এ কাজের জন্য আব্দুর রাজ্জাককে ৮ হাজার টাকা দেন খালেক ও মাজেদ।
পরে খালেক ও মাজেদ মিলে রোমানকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন। এ সময় ওই শিশুর মরদেহ এলাকার এক প্রতিবেশীর বাড়ির সেপটিক ট্যাংকের ভেতর গুম করে রাখেন। রোমান নিখোঁজের পর খালেকের আচরণে সন্দেহ হওয়ায় তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে ঘটনা স্বীকার করেন। এ সময় তিনি মাজেদ ও রাজ্জাকের সম্পৃক্ততার কথা জানান। পরে তাদের দেওয়া তথ্য মতে রোমানের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
আইনজীবী জহুরুল ইসলাম জানান, আসামিরা হত্যার দায় স্বীকার করে ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে জবানবন্দি দিয়েছেন। আজ সোমবার বিচারক বেগম রুবাইয়া ইয়াছমিন শিশু রোমান হত্যা মামলায় আসামি আব্দুল খালেক ও আব্দুল মাজেদকে মৃত্যুদণ্ড দেন। আব্দুর রাজ্জাককে যাবজ্জীবন সাজা দেওয়া হয়।
বিএনএ/ বিএম,ওজি