বিএনএ,চবি: সিএনজি অটোরিকশা চালক কর্তৃক দুই ছাত্রকে মারধরের ঘটনায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) চক্রাকারে বাস সার্ভিস চালুর দাবি জানাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীকে মারধর করে আবার সিএনজি চলাচল বন্ধ রাখায় এ দাবি জোরালো হচ্ছে।
সোমবার (১১ এপ্রিল) রাতে অতিরিক্ত ভাড়া না দেয়ায় তিন ছাত্রকে মারধর করেন এক সিএনজি অটোরিকশা চালক। শিক্ষার্থীরা তাৎক্ষণিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটক অবরোধ করলে সেই সিএনজির মালিককে হেফাজতে নেয় পুলিশ। তবে অভিযুক্ত সিএনজি চালক পলাতক রয়েছেন।
এদিকে সিএনজি মালিককে আটকের প্রতিবাদে মঙ্গলবার সকাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয় অভ্যন্তরে ও জিরো পয়েন্ট থেকে ১নং গেট পর্যন্ত সিএনজিচালিত অটোরিকশা চলাচল বন্ধ রাখে সিএনজি মালিকরা। বিকাল সাড়ে তিনটার দিকে মালিককে ছেড়ে দিলে ধর্মঘট প্রত্যাহার করা হয়।
সিএনজি মালিক সমিতির সভাপতি খোরশেদ আলম বাংলাদেশ নিউজ এজেন্সি (বিএনএ)কে বলেন, ‘ভাড়া নিয়ে ছাত্রদের সাথে ড্রাইভারের বাকবিতণ্ডার জেরে হাতাহাতি হয়। এ ঘটনায় শুধুমাত্র সিএনজি চালককে দোষারোপ করে তাকে পুলিশ ফাঁড়িতে আসতে বলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। সিএনজি চালক না আসলে মালিককে হাটহাজারী থানায় নিয়ে যায়। অহেতুক একজন সিএনজি মালিককে থানায় প্রেরণের প্রতিবাদে আমরা গাড়ি চলাচল বন্ধ রেখেছিলাম।’
এদিকে সিএনজি ধর্মঘটের কারণে পর্যাপ্ত পরিমাণ বিকল্প পরিবহণ না থাকায় রোজা রেখেই বেশ ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে শিক্ষার্থীদের। অতিরিক্ত ভাড়া দিয়েও রিকশা পাওয়া যায়নি। এজন্য অনেক শিক্ষার্থীকে বাধ্য হয়ে পায়ে হেঁটে যেতে হয়েছে নির্ধারিত গন্তব্যে।
শিক্ষার্থীরা বলছেন, আগে এক নং গেট থেকে বিশ্ববিদ্যালয় ও ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে একাধিক বাস সার্ভিস চালু ছিল। পরে সিএনজি সিন্ডিকেটের কারণে সেটি বাতিল হয়। ফলে সিএনজি-রিকশার কাছে জিম্মি হয়ে পড়ে শিক্ষার্থীরা। বিশাল আয়তনের ক্যাম্পাসে অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে চলাচল করতে হয় তাদের।
জাফর ইকবাল নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘এক নং গেট থেকে বাস সার্ভিস চালু হওয়া এখন সময়ের দাবি। না হয় লোকালদের হাতে জিম্মি থেকে যাবে চবিয়ানরা।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র রুহুল আমিন বলেন, ‘বড় ভাইদের কাছে শুনেছি ক্যাম্পাসে আগে চক্রাকারে বাস সার্ভিস ছিল। এতে সুবিধা হচ্ছে ছাত্রছাত্রীদের যানবাহনের ব্যয় কমে। কিন্তু সিএনজি ওয়ালাদের কাছে বারবার হেনস্তা হওয়ার পরও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না।’
তবে এই দাবির সাথে দ্বিমতও করছেন কেউ কেউ। দর্শন বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র বাপ্পারাজ হাওলাদার বলেন, ‘আসলে সমস্যা হচ্ছে, এখানে শিক্ষার্থীদের স্বার্থটা কেউ দেখে না। সিএনজি চালক, দোকানদারসহ আর যা কিছু আছে, সবাই কোন না কোনভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আত্মীয়। সিএনজির সাথে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরাও জড়িত আছে। এজন্য এই সিন্ডিকেট ভাঙছে না কেউ। কিন্তু চক্রাকারে বাস সার্ভিস কোন ভালো বিকল্প না। এতে ক্যাম্পাসে জ্যাম লাগবে, হাটার জায়গা তো থাকবে না। বরং যাতায়াতের জন্য তাৎক্ষণিক গাড়ি পাওয়া যাবে না।’
এ বিষয়ে জানতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর ড. শহীদুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বাংলাদেশ নিউজ এজেন্সি (বিএনএ)কে বলেন, ‘আমরা সিএনজি মালিকদের সাথে বসব। এর একটা স্থায়ী সমাধানের চেষ্টা করব। আর শিক্ষার্থীরা যে দাবিটা তুলেছে, তা আমরা ভেবে দেখব।’
বিএনএ/নবাব, এমএফ