বিএনএ, স্পোর্টস ডেস্ক: বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিতে নতুন ইতিহাস গড়ল বাংলাদেশ। এদিন মেহেদী হাসান মিরাজ ঘূর্ণিতে নির্ধারিত ২০ ওভারে ১১৭ রানে অলআউট হয় সফরকারীরা। জবাবে ৭ বল বাকি থাকতেই ৬ উইকেট হারিয়ে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় টাইগাররা। তিন ম্যাচের সিরিজে বাংলাদেশ এগিয়ে ২-০ ব্যবধানে।
রোববার (১২ মার্চ) মিরপুরের শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে প্রথমে বোলিং করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল বাংলাদেশের অধিনায়ক সাকিব। তবে সিরিজে ঘুরে দাঁড়ানোর লক্ষ্যে ইংল্যান্ডের হয়ে আজ ব্যাটিংয়ে ওপেন করতে নামেননি অধিনায়ক জস বাটলার।
ব্যাট করতে নেমে ইনিংসের তৃতীয় ওভারে উইকেট হারায় ইংল্যান্ড। ওপেনিংয়ে দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে রদবদল করে জস বাটলারের দল। বাঁহাতি ব্যাটার মালান আজ সফরকারীদের হয়ে ইনিংসের সূচনা করেন। প্রথম ওভারে ১০ রান তুলে ঝড়ো শুরুর ইঙ্গিত দিলেও তাসকিন আহমেদের স্বীকার হন ইংলিশ ওপেনার মালান।
শুরু ধাক্কা সামলে পাওয়ার প্লেতে দলের হাল ধরেন ফিল সল্ট ও মঈন আলী। প্রথম ৬ ওভারে ১ উইকেট হারিয়ে ৫০ রান তুলে এই দুই টপ অর্ডার ব্যাটার।
কিন্তু পাওয়ার প্লের পরই ইংলিশ শিবিরে আঘাত হানেন সাকিব আল হাসান, হাসান মাহমুদ ও মেহেদী হাসান মিরাজ। ৭ রানের ব্যবধানে ৩ উইকেট হারিয়ে বিপাকে পড়ে ইংল্যান্ড। দলীয় ৫৭ রানে ৪ উইকেটের পতন ঘটে ইংলিশদের। একে একে সাজঘরে ফিরে যান সল্ট, অধিনায়ক বাটলার ও অভিজ্ঞ মঈন আলী।
পঞ্চম উইকেট জুটিতে দলের হাল ধরেন বেন ডাকেট ও স্যাম কারান। তবে মেহেদী হাসান মিরাজের করা ১৫তম ওভারে জোড়া উইকেটের পতনে বিপাকে পড়ে ইংল্যান্ড। দলীয় ৯১ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে ধুঁকতে থাকা ইংল্যান্ড দ্রুতই অলআউট হওয়ার শঙ্কায় পড়ে। তবে শেষ বেন ডাকেটের ইনিংসে লড়াইয়ের পুঁজি পায় ইংলিশরা। নির্ধারিত ২০ ওভারে সব উইকেট হারিয়ে ১১৭ রান সংগ্রহ করে সফরকারীরা।
ইংল্যান্ডের দেয়া ১১৮ রানের লক্ষ্যে বাংলাদেশের হয়ে ওপেনিংয়ে ব্যাট করতে আসে লিটন দাস ও রনি তালুকদার। দেখে শুনেই শুরু করে এই দুই ওপেনার স্যাম কারনের প্রথম ওভারে নেন ৭ রান। পরে ক্রিস ওকসের ওভারে ১ চারে নেন ৮ রান। ফলে ভালো শুরু করেছিল এই দুই ওপেনার।
তবে স্যাম কারানের তৃতীয় ওভারে শর্ট বলে তুলে মারতে গিয়েছিলেন লিটন, কিন্তু ব্যাটে নিয়ন্ত্রণ ছিল না তেমন। ফলে ডিপ মিডোউইকেটে ফিল সল্টের হাতে ধরা পড়েন ফর্মখরায় ভুগতে থাকা বাংলাদেশ ওপেনার। ৯ বলে ৯ রানেই থেমেছেন তিনি, তৃতীয় ওভারে প্রথম উইকেট হারিয়েছে বাংলাদেশ।
এরপর উইকেট আসে নাজমুল হাসান শান্ত সঙ্গ দিচ্ছিলেন ওপেনার রনিকে। তবে পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে জোফার আর্চারের বলে মইন আলির কাছে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন আট বছর পর জাতীয় দলে সুযোগ পাওয়া রনি। ১৪ বলে করেন ৯ রান।
এরপর ক্রিজে নাজমুল হোসেন শান্তর সঙ্গে ভাল সঙ্গ দিচ্ছিলেন দিচ্ছেন তৌহিদ হৃদয়। তবে অফ স্টাম্পের বেশ বাইরে শর্ট বলে খেলতে গিয়ে ফেরেন তৌহিদ হৃদয়। জায়গা বানিয়ে খেলতে গিয়ে ক্যাচ দিলেন পয়েন্টে। আন্তর্জতিক টি-টোয়েন্টিতে নিজের প্রথম ওভারেই উইকেটের দেখা পেলেন লেগ স্পিনার রেহান আহমেদ।
এরপর উইকেটে আসেন মিরাজ। ১৬ বলে ২০ রানের ক্যামিয় খেলেন। শর্ট মিডউইকেটে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তিনি। বোলিংয়ে দুর্দান্ত মিরাজ ব্যাটিংয়েও রেখেছেন অবদান। অন্যদিকে একপাশ আগলে রাখেন নাজমুল হাসান শান্ত। তবে দলের চাপের মুহূর্তে সঙ্গ দিতে পারেননি ক্যাপ্টেন সাকিব আল হাসান। মঈন আলির বলে লং অফে ক্রিস জর্ডানের হাতে ধরা পড়েন সাকিব। দলীয় ১০০ রানে পঞ্চম উইকেট হারায় বংলাদেশ। সাত নম্বরে নেমে আফিফও ব্যর্থ এদিন, ৩ বলে ২ রান করেই ফেরেন আর্চারের ১৪৮ কি.মি. গতির বোলিংয়ে। ১০৫ রানেই ষষ্ঠ উইকেট হারায় বাংলাদেশ।
শেষ দুই ওভারে বাংলাদেশের জয়ের জন্য দরকার ছিলো ১৩ রান। ১৯তম ওভারে ক্রিস জর্ডানের প্রথম বলেই বলে বাউন্ডারি হাকিয়ে বাংলাদেশকে জয়ের দিকে নিয়ে যান শান্ত। ওই ওভারের চতুর্থ আর পঞ্চম বলে টানা দুই চারে বাংলাদেশকে জয়ের বন্দরে ভেড়ান তাসকিন আহমেদ।
৪ উইকেটে বাংলাদেশের জয় নিশ্চিত করে মাঠ ছাড়েন শান্ত আর তাসকিন।আগের ম্যাচেই ফিফটি করে ম্যাচসেরা হওয়া শান্ত আজও অপরাআজিত থেকেই মাঠ ছাড়েন ৪৭ বলে ৪৬ রানের ম্যাচ জেতানো ইনিংস খেলে।
বাংলাদেশের হয়ে ৪ উইকেট শিকার করেন স্পিনার মেহেদি হাসান মিরাজ।
বিএনএ/এমএফ