বিএনএ ডেস্ক : দেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি পদে ক্ষমতাসীন দলের মনোনয়ন পেয়েছেন দুদকের সাবেক কমিশনার, অবসরপ্রাপ্ত বিচারক ও আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন চুপ্পু। মনোনয়ন পেয়ে গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন তিনি। এ সময় সরকারপ্রধান তাকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান। রাষ্ট্রপতি পদে মনোনয়ন দেয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন।
রোববার (১২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে গণমাধ্যমে দেয়া প্রতিক্রিয়ায় মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন বলেন, ‘আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করছি। বঙ্গবন্ধুকন্যা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। কারণ, তিনি আমাকে রাষ্ট্রপতি পদে প্রার্থী হিসেবে মনোনীত করেছেন। এ মুহূর্তে আমার প্রতিক্রিয়া এটুকুই।’
এর আগে, বেলা ১১টার দিকে মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিনকে নিয়ে প্রধান নির্বাচন ভবনে যান আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্বে একটি টিম। সেখানে মনোনয়ন ফরম তোলা ও জমাদানের প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করা হয়।
সংসদে আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকায় বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. সাহাবুদ্দিনই হচ্ছেন বাংলাদেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি। যা এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র।
১৯৪৯ সালে পাবনায় জন্মগ্রহণ করা সাহাবুদ্দিন চুপ্পু একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। ছাত্রজীবনে পাবনা জেলা ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী ও সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণকারী সাহাবুদ্দিন চুপ্পু ১৯৮২ সালে বিসিএস (বিচার) ক্যাডার হিসেবে যোগ দেন। বিচারকের বিভিন্ন পদে চাকরি শেষে ২৫ বছর পর ২০০৬ সালে জেলা ও দায়রা জজ হিসেবে অবসর নেন।
২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতায় আসার পরপরই আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মী এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জনগোষ্ঠীর উপর হামলা হয়, যাতে হত্যা, ধর্ষণ ও লুণ্ঠনের ঘটনা ঘটে। পরে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এলে ওসব ঘটনার তদন্তে ‘কমিশন’ গঠন করা হয়, যার প্রধান ছিলেন সাহাবুদ্দিন চুপ্পু।
২০১১ সাল থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত মো. সাহাবুদ্দিন চুপ্পু দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সাবেক কমিশনার চুপ্পু একাদশ সংসদ নির্বাচনে টাঙ্গাইলের একটি আসন থেকে নৌকার প্রার্থী হওয়ার আগ্রহ দেখিয়েছিলেন বলে জানা গেছে।
১৯৯১ সালে সংসদীয় ব্যবস্থায় ফেরার পর ক্ষমতাসীন দলের মনোনীত ব্যক্তিই রাষ্ট্রপতি হয়েছেন। পঞ্চম সংসদে মাত্র একবার রাষ্ট্রপতি পদে ভোটের প্রয়োজন পড়েছিল। ওই নির্বাচনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী আবদুর রহমান বিশ্বাস জয়ী হয়ে রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করেছিলেন।
রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে শুধু সংসদের সদস্যরাই ভোটার। চলমান একাদশ সংসদে আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা আছে। ফলে সবকিছু ঠিকঠাকভাবে শেষ হলে সাহাবুদ্দিনের পরবর্তী রাষ্ট্রপ্রধান হওয়ার বিষয়টি সময়ের ব্যাপার মাত্র।
রাষ্ট্রপতি হিসেবে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাওয়া সাহাবুদ্দিন চুপ্পু ২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতায় আসার পর আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জনগোষ্ঠীর ওপর হামলা, হত্যা, ধর্ষণ ও লুণ্ঠনের ঘটনা তদন্তে পরবর্তী সময়ে গঠিত কমিশনের প্রধান ছিলেন।
২০১১ সাল থেকে ২০১৬ সাল দুদকের কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। পরে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও প্রধানমন্ত্রী রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচটি ইমামের মৃত্যুতে খালি থাকা প্রচার ও প্রকাশনা উপকমিটির চেয়ারম্যান পদে তাকে মনোনীত করা হয়।
আগামী ২৩ এপ্রিল রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের মেয়াদ শেষ হচ্ছে। তবে সংবিধান অনুযায়ী, পরবর্তী রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হয়ে শপথ না নেওয়া পর্যন্ত বর্তমান রাষ্ট্রপতি নিজ পদে বহাল থাকবেন।
রাষ্ট্রপতি নির্বাচন আইনে মনোনয়নপত্র দাখিল সম্পর্কে বলা আছে, মনোনয়নপত্র দাখিলের জন্য নির্ধারিত দিন ও সময়ের মধ্যে কোনো সংসদ সদস্য রাষ্ট্রপতি পদে নির্বাচিত হওয়ার যোগ্যতাসম্পন্ন কোনো ব্যক্তিকে ওই পদের জন্য মনোনীত করে নির্বাচনী কর্তার কাছে একটি মনোনয়নপত্র দিতে পারবেন, যে মনোনয়নপত্রে প্রস্তাবক হিসেবে তার স্বাক্ষর থাকবে এবং সমর্থক হিসেবে অন্য একজন সংসদ সদস্যের স্বাক্ষর থাকবে; সেই সঙ্গে যিনি রাষ্ট্রপতি পদের জন্য মনোনীত হতে যাচ্ছেন, তারও ওই মনোনয়নে সম্মতিসূচক স্বাক্ষরিত বিবৃতি থাকবে।
বিএনএ/বিএম,ওজি