20 C
আবহাওয়া
১০:১৯ পূর্বাহ্ণ - নভেম্বর ২৫, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » পটিয়ায় ত্রাস সৃষ্টিকারী বিচ্ছুর দুই ভাই নবাব-মহব্বত অধরা

পটিয়ায় ত্রাস সৃষ্টিকারী বিচ্ছুর দুই ভাই নবাব-মহব্বত অধরা

পটিয়ায় ত্রাস সৃষ্টিকারী বিচ্ছুর দুই ভাই নবাব-মহব্বত অধরা

বিএনএ,চট্টগ্রাম: চট্টগ্রামের পটিয়ায় দীর্ঘ ১৬ বছর আওয়ামীলীগ সরকারের ক্ষমতার অপব্যবহার করে শত কোটির টাকার মালিক বনে যাওয়া নবাব-মহব্বত আইনের চোখকে ফাঁকি দিয়ে ধরা ছোঁয়ার বাইরে রয়েছে। এ নিয়ে সাধারণ মানুষদের মাঝে চরম ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০০৯ সালে চট্টগ্রাম-১২ পটিয়া সংসদীয় আসনে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ থেকে মননোয়ন পেয়ে সাংসদ নির্বাচিত হন সামশুল হক চৌধুরী ওরফে (বিচ্ছু)। তার দুই ভাই মুজিবুল হক চৌধুরী নবাব ও ফজলুল হক চৌধুরী মহব্বত। মুজিবুল হক নবাব পেশায় দর্জী ও ফজলুল হক চৌধুরী মহব্বত পেশায় কৃষক হলেও তার ভাই সামশুল হক চৌধুরী ২০০৯ সালে সংসদ সদস্য হওয়ার পরে পাল্টে যায় তাদের ভাগ্য। তারা দুই ভাই মিলে পটিয়ায় গড়ে তোলেন অপরাধের সাম্রাজ্য।টানা তিনবার পরপর সংসদ সদস্য ও হুইপ থাকাকালীন তাদের অপরাধ এর খতিয়ান দিন দিন প্রসারিত হতে থাকে।

উপজেলায় গরু চোর চক্রের সাথে সখ্যতা করে জঙ্গলখাইন ইউনিয়নের নাইখাইন এলাকায় জোরপূর্বক অসহায় মানুষের জায়গা দখল করে একটি বিশাল ডেইরী ফার্ম দেন। এই ডেইরী ফার্মে চট্টগ্রামের বিভিন্ন উপজেলা থেকে গরু চোরেরা গরু চুরি করে এনে বিক্রি করে বলেও বিশ্বস্ত একটি সূত্র নিশ্চিত করে।

আরো জানা যায়, মুজিবুল হক চৌধুরী নবাব দর্জী থেকে বনে যান উপজেলা যুবলীগের সদস্য। গত ১৬ বছরে চট্টগ্রাম শহরে কালো টাকা দিয়ে কিনে নেন কয়েকটি ফ্ল্যাট, জায়গা জমি ও ব্যবসায়ীক স্পেজ। সরকারী সব ঠেন্ডার ভাগিয়ে নিয়ে কমিশনে অন্যদের দিয়ে করিয়ে নেন কাজ। তদবির বানিজ্য, থানা কন্ট্রোল, মাটি লুট করার টিকেট গাড়িপ্রতি ২ থেকে ৩ হাজারে, বালু মহাল দখল, চাঁদাবাজী, জায়গা দখল, মাদক, অস্ত্রের সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রন সহ তাদের কথার বাইরে গেলে মামলা থেকে রেহায় পেতেন না অসহায় মানুষ। এছাড়াও এই দুইভাই একশর অধিক জায়গা জোরপূর্বক নিজেদের নামে করিয়ে নেওয়ার অভিযোগ আছে। উপজেলা সাব রেজিষ্ট্রী অফিসে মহব্বত চৌধুরী ১০০টি দলিল সৃজণ করে বলেও সূত্রে জানা যায়। তাছাড়াও আশ্রয়ন প্রকল্প থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিতেন তারা।

সম্প্রতি বৈষম্য বিরোধী আন্দোলন চলাকালীন সময়ে হামলার শিকার হওয়া ভুক্তভোগীর ভাই সাবেক হুইপ সামশুল হক চৌধুরীকে ১নং আসামী করে আদালতে মামলা করায় ধলঘাট ইউনিয়ন বিএনপি নেতা মো. মিজানুর রহমানকে চুরি মামলায় ফাঁসিয়ে জেলে পাঠানোর অভিযোগ রয়েছে। এই ঘটনার নৈপত্যে ছিল হুইপের ভাই মুজিবুল হক চৌধুরী নবাব।

স্থানীয়রা জানান, হুইপ এর সাইনবোর্ড বিক্রি করে তারা বনে যান বিলাশবহুল গাড়ি বাড়ির মালিক। নবাব মাধ্যমিকের গন্ডী পেরোতে না পারলেও বিসিএস কর্মকর্তাদের করতেন দুর্ব্যবহার। তারা দুই ভাই মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি ও অত্যাচার করে আসলেও প্রশাসন তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নিচ্ছেন না বলেও তারা জানান।

উপজেলার সিনিয়র এক বিএনপি নেতা নাম প্রকাশ না করা শর্তে বলেন, তারা দীর্ঘ ১৬ বছর মানুষের উপর অত্যাচার, নিপিড়ন চালিয়েছে, শতকোটি টাকা সম্পদ গড়েছে তারা। তিনি বলেন, বিএনপি নেতাদের মিথ্যা হয়রানী মূলক মামলা দিয়ে ঘরছাড়া করেছে এই দুই স্বৈরাচারী ভাই। ছাত্রদের আন্দোলনে হামলার ঘটনায় তাদের সম্পৃক্ততা থাকলেও তারা কোন মামলার আসামী হননি। এদের আইনের আওতায় আনার জন্য প্রশাসনের প্রতি জোর দাবি জানান তিনি।

শোভনদন্ডী গ্রামের মাওলানা রফিক জানান, তাদের জায়গা দখলে নিতে তাদের প্রশাসন দিয়ে হয়রানী, মামলা দিয়ে ঘরছাড়া করেছিলেন। আমরা হুইপ সামশুল ও তার ভাইদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছি।
হিলচিয়া গ্রামের মোহাম্মদ ইদ্রিছ জানান, আওয়ামীলীগের শাষণামলে হুইপের ভাই নবাব ও মহব্বত মিথ্যা মামলা দিয়ে তাদের ফাঁসিয়ে দেন। এই শোষকদের বিরুদ্ধে কোন ধরনের ব্যবস্থা নিচ্ছেন না। কোন মামলাও তাদের বিরুদ্ধে হয়নি।

বিএনএনিউজ/নাবিদ

Loading


শিরোনাম বিএনএ