বিএনএ চট্টগ্রাম: পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ, স্বাদেও অনন্য। মিষ্টি লাগে, ভেতরে শক্ত বিচিও খুব কম। আকারেও আকর্ষণীয়। পাকলে ভেতরের অংশ সাদা, হলুদ কিংবা লালচে হয়ে ওঠে। ‘কাঞ্চননগর পেয়ারা’ এর নাম- কেননা বিশেষ এই জাতের পেয়ারার চাষবাস একমাত্র চট্টগ্রামের চন্দনাইশের কাঞ্চননগর গ্রামে। বৃহস্পতিবার সকালে পেয়ারার ছবি তুলেছেন বাংলাদেশ নিউজ এজিন্সির (বিএনএ) ফটো সাংবাদিক বাচ্চু বড়ুয়া।এই পেয়ারা বদলে দিয়েছে কয়েক হাজার চাষির জীবন, ঘুচিয়েছে বেকারত্বের অভিশাপও। কাঞ্চননগর গ্রামের কয়েকটি পাহাড়ে এবার চাষাবাদ হয়েছে প্রচুর পেয়ারা। চলতি মৌসুমে পেয়ারা বিক্রিও হচ্ছে বেশ। কাঞ্চননগরের পেয়ারা সুস্বাদু হলেও ন্যায্যমূল্য পাচ্ছেন না বলে জানিয়েছে পেয়ারা চাষিরা। রাস্তার বেহাল দশা হওয়ার কারণে পাঁচ মাইল পাহাড়ি পথ পাড়ি দিয়ে আনতে হয় বাজারে।
স্থানীয়রা জানান, আশপাশের কয়েকটি জেলাসহ চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকার হাজার গ্রামে যায় কাঞ্চননগরের পেয়ারা। এই পেয়ারার জন্য বছরজুড়ে অপেক্ষা করেন বন্দরনগরীর বাসিন্দারা। অনেকে দলবেঁধে ঘুরতে গিয়ে পরিবার ও আত্মীয়স্বজনের জন্য নিয়ে আসেন এই পেয়ারা। ব্রিটিশ আমলে কাঞ্চননগরের ছোট একটি বাগানে পেয়ারা চাষ করা হয়েছিল। লাভজনক হওয়ায় বর্তমানে কাঞ্চননগরের বিভিন্ন পাহাড়ে এই জাতের পেয়ারার পাঁচশর বেশি বাগান গড়ে উঠেছে। অনেক তরুণ বিনিয়োগ করছেন পেয়ারা চাষে। সংরক্ষণাগারের ব্যবস্থা থাকলে সম্ভাবনাময় এই পেয়ারা থেকে আয়-উপার্জন আরও বাড়ত।প্রতিদিন ভোরের আলো ফুটতে না ফুটতেই চোখে পড়ে পাহাড় থেকে পেয়ারা নিয়ে দলে দলে নেমে আসছেন চাষিরা। লাল কাপড়ের বিশেষ এক ধরনের পুঁটলিতে বাঁধা পেয়ারা কাঁধে নিয়ে বিক্রির উদ্দেশ্যে কাদামাটি ও পানি মাড়িয়ে আশপাশের ছোট-বড় হাটে ছুটছেন তারা। সেখানে বাঁশের তৈরি বিশেষ ভারে সাজিয়ে রাখা হয় এই পেয়ারা।কাঞ্চননগর পেয়ারার সবচেয়ে বড় হাট বসে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক লাগোয়া রওশন হাটে। এই সড়ক দিয়ে যাতায়াত করার সময় যে কারও চোখে পড়বে সড়কের দুই পাশজুড়ে লাল কাপড়ে মোড়ানো পেয়ারার ভার নিয়ে বসে আছেন বিক্রেতারা।কাঞ্চননগর গ্রামের অনেক পরিবারেই এখন উপার্জনের একমাত্র মাধ্যম পেয়ারার চাষাবাদ ও বিক্রি। পাহাড়ের পাদদেশে নতুন পলি জমা পড়ে বলে কাঞ্চননগর গ্রামের মাটি খুবই উর্বর। এ কারণে ফলন আসা পর্যন্ত গাছের গোড়ায় রাসায়নিক সার কিংবা কীটনাশক ছিটানোর প্রয়োজন হয় না।
বিএনএনিউজ২৪/ এমএইচ