বিএনএ বিশ্ব ডেস্ক: পাঁচ দিনে আটটি প্রাদেশিক রাজধানী দখল করে নিয়েছে জঙ্গি সংগঠন তালেবান।মঙ্গলবার(১০ আগস্ট) এক দিনেই দু’টি প্রাদেশিক রাজধানীর নিয়ন্ত্রণ নেয় তারা।
বাঘলান প্রদেশের রাজধানী পুল-ই-খুমরির দখল নেয়ার মাধ্যমে উত্তরাঞ্চলীয় তিনটি প্রদেশের সীমান্তে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করে জঙ্গি সংগঠনটি।কাবুলের প্রায় ২শ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত পুল-ই-খুমরির আইনপ্রণেতা মামুর আহমাদজাই সংবাদ মাধ্যমকে জানান, মাত্র দুই ঘণ্টায় লড়াইয়ে শহরটি দখল করেছে তালেবান।
এদিকে, ফারাহ প্রদেশে গভর্নরের কার্যালয়, পুলিশের প্রধান কার্যালয়, প্রদেশের কেন্দ্রীয় কারাগারের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে জঙ্গি সংগঠনটি। ফারাহ শহরের কাছেই একটি সামরিক ঘাঁটি থেকে স্থানীয় নিরাপত্তা বাহিনী পিছু হঠেছে বলে জানিয়েছেন এক আইনপ্রণেতা।
ফারাহর মাধ্যমে ইরানের সঙ্গে আফগানিস্তানের দ্বিতীয় সীমান্ত এলাকা কব্জা করল তালেবান। আফগানিস্তানের দক্ষিণ-পশ্চিমে সংগঠনটির দখলকৃত দ্বিতীয় প্রাদেশিক রাজধানী এটি। গত শুক্রবার প্রতিবেশি নিমরুজ প্রদেশের রাজধানী জারাঞ্জ দখলে নেয় তারা।
এর আগে চলতি সপ্তাহে কুন্দুজ ও তাখার প্রদেশ দখল করে তালেবান। এর ফলে কেন্দ্রীয় রাজধানী কাবুল থেকে উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশ বাদাখশান পর্যন্ত বিস্তৃত ৩৭৮ কিলোমিটার সংযোগ সড়কের প্রায় পুরোটাই এখন তালেবানের দখলে।
যাত্রী ও পণ্য পরিবহণে আফগানিস্তানের বাণিজ্যে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এ সড়ক। সেইসঙ্গে এ পথ ধরে মাদকসহ অবৈধ পণ্য চোরাচালানও হয়।
সংবাদ মাধ্যম রয়টার্সকে জানায়, তালেবান বাহিনী এখন দেশটির ৬৫ ভাগ এলাকা নিয়ন্ত্রণ করছে। আরও ১১টি প্রাদেশিক রাজধানী দখল করার পর্যায়ে রয়েছে জঙ্গি সংগঠনটি। কাবুল যাতে উত্তর থেকে আর কোনো সহায়তা না পায় এখন সেই চেষ্টাই করছে তারা।
অন্যদিকে, আফগান নিরাপত্তা বাহিনীতে সেনাবাহিনী এবং পুলিশ মিলিয়ে তিন লাখের বেশি সদস্য রয়েছে।একটি বিমান বাহিনীও আছে। আফগান কম্যান্ডো সেনা ইউনিট নিয়ে গর্বিত দেশটির সরকার।এই বাহিনীর ক্যাডেটদের যুক্তরাষ্ট্রে নিয়ে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে।
মে মাস থেকে তালেবানের শহর দখলের ঝটিকা অভিযান শুরুর পর থেকে এমন একটি ‘সুসজ্জিত’ বাহিনীর দুর্বলতা প্রকাশ পেতে শুরু করে। আর নিরাপত্তা বাহিনীর সেই দুর্বলতা নিয়ে উদ্বিগ্ন কাবুল সরকার।
উল্লেখ্য, আফগানিস্তানে অভিযান শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত দেশটির পুনর্গঠনে যুক্তরাষ্ট্র যতো টাকা খরচ করেছে তার চেয়ে আফগান নিরাপত্তা বাহিনী গঠনে অন্তত ৬০ শতাংশ বেশি খরচ করেছে। গত বছর পর্যন্ত এই খাতে প্রায় ৮ হাজার ৯০০ কোটি ডলার খরচ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এ বছর আফগান সেনাবাহিনীকে বাড়তি ৩৩০ কোটি ডলার দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে দেশটি।
বিএনএনিউজ/আরকেসি