বিএনএ, চট্টগ্রাম: চট্টগ্রামে মাহমুদা খানম মিতু হত্যা মামলায় আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন আরও দু’জন। এরা হলেন- বাবুলের বাসার গৃহসহকারি মনোয়ারা বেগম বাপ্পী ওরফে ফাতেমা ও বাবুলের বান্ধবী আন্তর্জাতিক সংস্থায় কর্মরত ভারতীয় বংশোদ্ভূত গায়ত্রী দেবীর বাসার গৃহসহকারী পম্পি বড়ুয়া।
রোববার (১১ জুন) চট্টগ্রামের তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ জসিম উদ্দিনের আদালতে উভয়ে সাক্ষ্য দেন।রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি মহানগর পিপি আব্দুর রশীদ বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, আজ মিতু হত্যা মামলায় বাবুলের বাসার গৃহসহকারি ও গায়ত্রী দেবীর বাসার গৃহসহকারীর সাক্ষ্যগ্রহণ হয়েছে। গায়ত্রী দেবীর বাসার গৃহসহকারী পম্পি বড়ুয়াকে আসামিপক্ষের জেরা সম্পন্ন হয়েছে। ফাতেমার জেরা অসমাপ্ত অবস্থায় আদালত সোমবার পর্যন্ত মামলার কার্যক্রম মূলতবি করেছেন। সাক্ষ্যগ্রহণের সময় আদালতের হাজতে থাকা বাবুল আক্তারকে শনাক্ত করেন পম্পি ও ফাতেমা।
সাক্ষ্যে পম্পি বড়ুয়া জানান, ২০১৩-১৪ সালে তিনি কক্সবাজারের হলিডে মোড়ে বাবুলের বান্ধবীর বাসায় কাজ করতেন। বান্ধবীর স্বামী বিদেশে থাকতেন। বান্ধবীর বাসায় মাঝে মাঝে বাবুল আক্তার সন্ধ্যার পর যেতেন এবং রাতে থাকতেন। গভীর রাতে কখন বাবুল ওই বাসা থেকে বেরিয়ে যেতেন, তারা জানতেন না। তবে তিনি বাবুল আক্তারকে চিনতেন না। মিতু হত্যার পর টেলিভিশনে ছবি দেখে বাবুলকে চিনতে পারেন। বাবুলের বান্ধবী পম্পিকে এতই আদর করতেন যে, তাকে নাইজেরিয়া নিয়ে গিয়েছিলেন।
অন্যদিকে ফাতেমা সাক্ষ্যে জানান, ২০১৩ সালে কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের বাসায় কাজে যোগ দেন তিনি। বাবুল বদলি হয়ে চট্টগ্রামে আসার পর তাকেও নিয়ে আসা হয়। কক্সবাজারে বাবুলের বাসায় তার বান্ধবী সন্তান নিয়ে মাঝে মাঝে আসতেন। বাবুলের ব্যক্তিগত কক্ষে বসে তারা কথা বলতেন, তবে ওই কক্ষে অন্য কারও ঢোকার অনুমতি ছিল না। চট্টগ্রামের বাসায় আসার পর বান্ধবীকে নিয়ে বাবুল ও মিতুর মধ্যে প্রায়ই ঝগড়া হতো। দু’জন আলাদা কক্ষে ঘুমাতেন।
প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের ৫ জুন সকালে নগরীর পাঁচলাইশ থানার ও আর নিজাম রোডে ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে যাওয়ার পথে বাসার অদূরে গুলি ও ছুরিকাঘাত করে খুন করা হয় মাহমুদা খানম মিতুকে। স্ত্রীকে খুনের ঘটনায় পুলিশ সদর দফতরের তৎকালীন এসপি বাবুল আক্তার বাদী হয়ে নগরীর পাঁচলাইশ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
২০২২ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর তদন্ত সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) সাতজনকে আসামি করে আদালতে মামলার অভিযোগপত্র দাখিল করে। ১০ অক্টোবর আদালত অভিযোগপত্র গ্রহণ করেন। চলতি বছরের ১৩ মার্চ আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত। ৯ এপ্রিল থেকে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। প্রথম সাক্ষী হিসেবে মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেনের সাক্ষ্য দেন।
অভিযোগপত্রে প্রধান আসামি করা হয়েছে মিতুর স্বামী বাবুল আক্তারকে। অভিযোগপত্রে আরও যাদের আসামি করা হয়েছে তারা হলেন- মো. কামরুল ইসলাম শিকদার মুসা, এহতেশামুল হক প্রকাশ হানিফুল হক প্রকাশ ভোলাইয়া, মো. মোতালেব মিয়া ওয়াসিম, মো. আনোয়ার হোসেন, মো. খাইরুল ইসলাম কালু এবং শাহজাহান মিয়া। অভিযোগপত্রের আসামিদের মধ্যে এখন শুধু মুসা পলাতক আছেন।
বিএনএ/এমএফ