বিএনএ, ঢাকা : করোনা পরবর্তী সময়ে বেড়েছে দেশের আমদানি ব্যয়। সেই তুলনায় রেমিট্যান্স এবং রপ্তানি আয় বাড়ছে না । ফলে মাত্রাতিরিক্ত আমদানি ব্যয় পরিশোধ করতে গিয়ে বাংলাদেশের বিদেশি মুদ্রার সঞ্চয়ন বা রিজার্ভ কমে যাচ্ছে। মঙ্গলবার (১০ মে) এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নে (আকু) প্রায় ২২৪ কোটি ডলার পরিশোধের পর রিজার্ভ নেমে এসেছে ৪১ বিলিয়ন ডলারের ঘরে।
বর্তমানে যে রিজার্ভ আছে তা দিয়ে ছয় মাসের আমদানি দায় মেটানো সম্ভব। গত আগস্টে আট মাসের আমদানি দায় মেটানোর মতো রিজার্ভ ছিল। তখন রিজার্ভের পরিমাণ ৪৮ বিলিয়ন ডলারের ঘর ছাড়ায়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত কয়েক মাসে রিজার্ভ কমে এ পর্যায়ে নেমেছে। এর আগে ধারাবাহিকভাবে যা বাড়ছিল। ১০ বছর আগে ২০১৩ সালের জুন শেষে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ছিল মাত্র ১৫ দশমিক ৩২ বিলিয়ন ডলার। পাঁচ বছর আগে ছিল ৩৩ দশমিক ৬৮ বিলিয়ন ডলার। সেখান থেকে বেড়ে গত বছরের আগস্টে প্রথমবারের মতো ৪৮ দশমিক শূন্য ৬ বিলিয়ন ডলার হয়। গত কয়েক মাসে ধরে রিজার্ভ ধারাবাহিকভাবে কমছে। সাম্প্রতিক সময়ের মধ্যে রিজার্ভ সর্বনিম্ন পর্যায়ে নামে গত ৮ মে। ওই দিন রিজার্ভ দাঁড়ায় ৪৩ দশমিক ৯৯ বিলিয়ন ডলারে। মঙ্গলবার ২ দশমিক ২৪ বিলিয়ন ডলারের আকু পরিশোধের পর রিজার্ভ ৪২ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমেছে।
এদিকে রিজার্ভ কমে যাওয়ায় সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। অস্বাভাবিক আমদানি ব্যয় কমাতে বিলাসপণ্যে এলসি মার্জিনের হার আরও বাড়িয়ে ৭৫ শতাংশ পর্যন্ত নির্ধারণের একটি প্রস্তাব উচ্চপর্যায়ের বিবেচনায় রয়েছে। এর আগে গত ১১ এপ্রিল জ্বালানি, অত্যাবশ্যকীয় খাদ্যপণ্য, ওষুধসহ কিছু পণ্য ছাড়া অন্য ক্ষেত্রে নূ্যনতম এলসি মার্জিন ২৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়।
এলসি মার্জিন বৃদ্ধির পাশাপাশি আমদানিকে ব্যয়বহুল করতে ডলারের দর বাড়ানো হচ্ছে। শুধু চলতি বছরের এ কয়েক মাসে আন্তঃব্যাংকে প্রতি ডলারের দর ৯০ পয়সা বাড়িয়ে ৮৬ টাকা ৭০ পয়সা নির্ধারণ করা হয়েছে।
পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর বলেন, আমদানি বাড়লে রিজার্ভ কমবে এটাই স্বাভাবিক। তবে এতে উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই। এখনও মোটামুটি সন্তোষজনক রিজার্ভ আছে। তবে, যে করেই হোক এখন আমদানিতে লাগাম টানতে হবে। একইসঙ্গে রেমিট্যান্স ও রফতানি আয় আরও বাড়ানোর দিকে নজর দিতে হবে।
বিএনএনিউজ/এইচ.এম।