বিএনএ,চট্টগ্রাম: প্রেমের ফাঁদে ফেলে অপহরণ, ধর্ষণ ও মুক্তিপণ দাবি করা একটি চক্রের চার সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। চক্রটি সরল প্রকৃতির মেয়েদের টার্গেট করে প্রথমে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে। পরবর্তীতে প্রেমের সম্পর্কের টানে পাহাড়ে নিয়ে ভিডিও ধারণ করে। এরপর দলবদ্ধভাবে প্রেমিকা ও কথিত প্রেমিককে রুমে আটক করে রাখে। জোরপূর্বক ধর্ষণ করে ও মৃত্যুর হুমকি দিয়ে মুক্তিপণ দাবি ও আদায় করে। মুক্তিপণ আদায় শেষে প্রেমিক ও তথাকথিত প্রেমিকাকে ছেড়ে দেয়।
শনিবার (১০ এপ্রিল) সন্ধ্যা থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত চট্টগ্রাম নগরীর আকবরশাহ থানার মীর আউলিয়া মাজারের পাহাড় ও শাপলা আবাসিক এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে কোতোয়ালী থানা পুলিশ। পাশাপাশি ১৬ বছর বয়সী ভুক্তভোগী তরুণীকে উদ্ধার করা হয়েছে। রোববার (১১ এপ্রিল) বিষয়টি জানিয়েছেন কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নেজাম উদ্দীন।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল থানার ৪ নম্বর মনিরবাগ ইউনিয়নের আব্দুল মোতালিব মিয়ার ছেলে কালু মিয়া প্রকাশ রাজু (১৯), একই এলাকার মৃত রমজান মিয়ার ছেলে মো. সোহেল মিয়া (১৯), কুমিল্লা জেলার ব্রাহ্মণপাড়া থানার জিরন ১ নম্বর ওয়ার্ডের নুরুল ইসলামের ছেলে মো. দুলাল বাবুর্চি (৩৭) ও চট্টগ্রাম জেলার বাঁশখালী উপজেলার মৃত নুরুল ইসলামের ছেলে মো. তারেক আকবর (১৯)।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ওই গৃহকর্মী নগরীর কোতোয়ালী থানার রহমতগঞ্জের একটি বাসায় কাজ করেন। গত শুক্রবার দুপুর ১২টার দিকে সে কাজ শেষ করে রহমতগঞ্জ রোডে আসা মাত্রই এক সপ্তাহের পরিচয়ের প্রেমিক কালু মিয়া ও কালুর চাচাত ভাই মো. সোহেল মিয়ার (১৯) সঙ্গে দেখা হয়ে যায়। পাহাড়ে বেড়াতে যেতে বললে রাজি না হলে একটি সিএনজি অটোরিকশাতে তুলে আকবরশাহ থানার একটি পাহাড়ে অপহরণ করে নিয়ে যায়। সেখানে কালু মিয়া ওই গৃহকর্মীর সঙ্গে পাহাড়ের নির্জনস্থানে ধস্তাধস্তি করে। হঠাৎ দেখতে পান একজন তাদের মোবাইলে ভিডিও করছেন। তাদের ভয়ভীতি দেখিয়ে সবাই মিলে শাপলা আবাসিক মডেল পল্লী নবাব মিয়ার বাড়িতে একটি রুমে আটক করে গৃহকর্মীর কাছ থেকে ৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। আসামিরা গৃহকর্মীর বোন ও ভাইয়ের মোবাইলে ফোন করে মুক্তিপণের টাকা দাবি করে। গত শুক্রবার রাতে কালু মিয়া গৃহকর্মীকে ধর্ষণ করে।
কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নেজাম উদ্দীন বলেন, শনিবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে এক নারীকে অপহরণ করে মুক্তিপণ দাবির খবর পাই। এরপর নগরের আকবরশাহ থানার মীর আউলিয়া মাজারের পাহাড় ও শাপলা আবাসিক এলাকায় অভিযান চালিয়ে ঘটনার সাথে যুক্ত চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ ঘটনায় ভিকটিম বাদি হয়ে গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা করেছে। নারী ও শিশু নির্যাতন আইনের ৭/৮/৯(১)/৩০ ধারায় একটি মামলা রেকর্ড হয়েছে বলে।
বিএনএনিউজ/মনির