বিএনএ, ডেস্ক : এরশাদবিরোধী আন্দোলনে যুবলীগ কর্মী নূর হোসেন বুকে ও পিঠে ‘স্বৈরাচার নিপাত যাক, গণতন্ত্র মুক্তি পাক’ স্লোগান লিখে রাজপথে মিছিলে নেমেছিলেন। সেদিন পুলিশের গুলিতে তিনি মারা যান। ১৯৮৭ সালে তাঁকে হত্যার আজকের এই দিনে ঢাকার জিরো পয়েন্টে শহীদ নূর হোসেন চত্বরে বিক্ষোভ মিছিলের ডাক দিয়েছে আওয়ামী লীগ। দলটি ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে এ কর্মসূচি ঘোষণা করার পর তা উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে।
আওয়ামী লীগের ওই কর্মসূচির বিরুদ্ধে অন্তর্বর্তী সরকারের কঠোর অবস্থানের কথা তুলে ধরে শনিবার ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়াও এক ফেসবুক পোস্টে কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগকে রাজপথে কোনো মিছিল-সমাবেশ বা কর্মসূচি পালন করতে না দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তাঁরা।
রোববার রাত থেকে আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয় ও গুলিস্তান জিরো পয়েন্ট দখলে নিয়েছে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও বিএনপির অঙ্গ সংগঠন যুবদল, জামায়াত ইসলামীর ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্র শিবির। তারা আওয়ামী লীগকে যে কোনো মূল্যে প্রতিহত করার ডাক দিয়েছে। অলিগলিতে বসানো হয়েছে পাহারা। আওয়ামী লীগকে রাজপথে প্রতিহত করার ঘোষণা দেন বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের আহবায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ।
আওয়ামী লীগকে প্রতিহত করার এমন ঘোষণার মধ্যেও সকালের দিকে বেশ কিছু আওয়ামী লীগ কর্মী দলীয় কার্যালের সামনে জড়ো হওয়ার চেষ্টা করে। সেখানে আগে থেকে অবস্থানকারিরা তাদের মারধর করে বেশ কয়েকজনকে পুলিশে সোপর্দ করে। এর আগের রাতে ঢাকা মেট্টোপলিটন পুলিশ ১০ জনকে ট্রাম্পের প্লেকার্ডসহ গ্রেপ্তার করে। আওয়ামী লীগ কর্মীরা যাতে বিক্ষোভ করতে না পারে তার জন্য রাজধানীর পল্টন ও গুলিস্থানের অলিগলিতে বসানো হয়েছে পাহারা।
রাজধানীর গুলিস্থানের জিরো পয়েন্টের এই উত্তেজনার ঢেউ আছড়ে পড়েছে সারাদেশে। টান টান উত্তেজনার মধ্যে স্বরাস্ট্র মন্ত্রণালয় সারাদেশে ১৯১ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করেছে। সর্তক রয়েছে সেনাবাহিনীও। জন গুরুত্বপূর্ণস্থানে টহল জোরদার করেছে পুলিশ ও র্যাব।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা, মনে করেন, আওয়ামী লীগের ক্ষমতাচ্যূত হওয়ার নেপথ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ডেমোক্রেট পার্টির প্রেসিডেন্ট জো-বাইডেন প্রশাসনের একটি বড়ো ভূমিকা রয়েছে। কেননা, প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে মার্কিন ডেমোক্রেট পার্টির নীতি নির্ধারক সাবেক প্রেসিডেন্ড বারাক ওবামা, সাবেক প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন, তার স্ত্রী সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট হিলারি ক্লিনটনসহ অনেকের সঙ্গে ব্যক্তিগত সুসস্পর্ক রয়েছে। তারই ধারাবাহিকতায় ছাত্র-জনতার গণ বিপ্লবের মাধ্যমে ক্ষমতাসীন হয়েছেন তিনি। কিন্তু গত ৫ই নভেম্বর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। নির্বাচনের তিন দিন আগে ট্রাম্প বাংলাদেশে রাজনৈতিক অস্থিতিশীল অবস্থা ও সংখ্যালঘু হিন্দুদের নির্যাতনের বিষয়ে ‘টুইট’ করেছেন। এতে বিব্রতকর ও অস্বস্থিতে পড়েছে ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।
বিএন এ নিউজ,শামীমা চৌধুরী শাম্মী/এইচমুন্নী