বিএনএ, ফরিদপুর: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মেয়ে দুর্নীতি করতে পারে না।
মঙ্গলবার (১০ অক্টোবর) পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের ঢাকা-ভাঙ্গা অংশের উদ্বোধন শেষে বিকেলে ভাঙ্গায় আওয়ামী লীগের জনসভায় এ কথা বলেন তিনি।
সরকারপ্রধান বলেন, পদ্মা সেতু নির্মাণ করার জন্য ২০০১ সালে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়। কিন্তু বিএনপি ক্ষমতায় এসে বন্ধ করে দেয়। আসলে ধ্বংস করাই তাদের চরিত্র। দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় এসে আবার উদ্যোগ নেই। অনেকে বলেছিল এটা সম্ভব না।
ফরিদপুরবাসীর কাছে নৌকায় ভোট চেয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, স্বাধীনতার মার্কা নৌকা। উন্নয়নের প্রতীক নৌকা। নৌকায় ভোট দিয়ে স্বাধীনতা পেয়েছেন। এ নৌকায় ভোট দেয়ার কারণে এত উন্নয়ন সমৃদ্ধি। এ অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে নৌকায় ভোট দিন। মিলিটারি ডিক্টেটরের আমলে কেউ ভোট দিতে পারতো না। কথাই তো আছে, ১০টা হোন্ডা ২০টা গুন্ডা ভোট ঠান্ডা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, লুটেরা বিএনপি এতিমের অর্থ আত্মসাৎ করেছে। দুর্নীতি করে সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি বিএনপির নেতা। জামায়াত যুদ্ধাপরাধী। এরা দেশকে ধ্বংস করে দেবে। ধ্বংসের হাত থেকে নৌকাই আপনাদের রক্ষা করবে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষ পাশে থাকলে অসাধ্য সাধন করা যায়। পদ্মা সেতু করে দিয়ে সেটা আবারও প্রমাণ করলাম। জাতির পিতা বলেছিলেন, বাংলাদেশের মানুষকে দাবায়ে রাখতে পারবা না। আসলেই পারেনি।
সরকারপ্রধান বলেন, ব্যাংকের এমডি থাকতে দেইনি বলে সেই ক্ষোভে হিলারি ক্লিনটনকে বলে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়ন বন্ধ করে দিয়েছিলেন। আমি চ্যালেঞ্জ নিয়েছিলাম, বলেছি নিজেদের অর্থে করবো, করেছি।
শেখ হাসিনা বলেন, ফরিদপুর পুরনো শহর, কিন্তু সবসময় অবহেলিত ছিল। আমরা সরকারে এসে উন্নয়ন করেছি। ফরিদপুরের মেডিকেল কলেজকে সম্প্রসারিত ও সেবার আধুনিকায়ন আমরাই করেছি। আমি জানি, ফরিদপুরে বিশ্ববিদ্যালয় নেই। ইনশাআল্লাহ, আবার সরকারে এলে সেটা করে দেবো।
তিনি বলেন, আমার বাবা-মা, ভাই-বোন কেউ নেই। আছে শুধু বাংলাদেশের জনগণ। তাদের জন্যই আমার কাজ। জিয়া-এরশাদ-খালেদা লুটপাট আর দুর্নীতিতে মত্ত ছিল। তাদের সময়ে কেউ ভোট দিতে পারেনি। লুট করেছে তারা। আমরা সরকারে এসে সব ধরনের সেবা নিশ্চিত করেছি। কমিউনিটি ক্লিনিক, স্কুল-কলেজ, রাস্তাঘাট করে দিয়েছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ দেশের মানুষের জন্য কাজ করে, দেশের কল্যাণে কাজ করে। সেদিকে লক্ষ্য রেখেই আমরা কাজ করছি। দেশকে আমরা আরো উন্নত করতে চাই।
ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শামীম হকের সভাপতিত্বে এতে আরও বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী জাফর উল্যাহ। জনসভায় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারাও অংশ নেন।
এর আগে মুন্সিগঞ্জের লৌহজং উপজেলার মাওয়া রেলস্টেশন থেকে একটি বিশেষ ট্রেনে যাত্রা শুরু করে ফরিদপুরের ভাঙ্গার রেলওয়ে স্টেশনে এসে পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সময় তার বোন শেখ রেহানা সঙ্গে ছিলেন।
ভাঙ্গায় জনসমাবেশ শেষে বিকেলে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় নিজ বাড়িতে যাবেন প্রধানমন্ত্রী। সাড়ে ৫টায় টুঙ্গিপাড়ায় পৌঁছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ, ফাতেহা পাঠ ও মোনাজাতে অংশ নেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রাতে টুঙ্গিপাড়ায় নিজ বাড়িতে থাকবেন বঙ্গবন্ধু কন্যা।
তার আগে তিনি ঢাকা-ভাঙ্গা রেলপথ উদ্বোধন করেন। উদ্বোধনের পর ট্রেনে ওঠার আগে নিজ হাতে টিকিট কাটেন প্রধানমন্ত্রী। এরপর বাঁশি বাজিয়ে ও সবুজ পতাকা নাড়িয়ে রেল চলাচলের সংকেত দেন তিনি।
বিএনএ/এমএফ