বিএনএ, গাজীপুর: গাজীপুরের টঙ্গী, সদর ও শ্রীপুর উপজেলায় বিভিন্ন দাবিতে বিক্ষোভ করেছে বিভিন্ন কারখানার শ্রমিকরা। এসময় কারখানায় ভাঙচুর, মহাসড়ক অবরোধ করে বিভিন্ন দাবি জানানো হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ২৫টি কারখানায় ছুটি ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ।
জানা যায়, মঙ্গলবার সকাল ৯টা থেকে গাজীপুরের টঙ্গীতে ১৩ দফা দাবি জানিয়ে বিক্ষোভ শুরু করে এমট্রানেট গ্রুপের লিমিটেড কারখানার শ্রমিকরা। এসময় তাদের সঙ্গে আন্দোলনে অংশ নেয় পিনাকি গ্রুপ, ড্রেস ম্যান ও নোমান গ্রুপের শ্রমিকরা। এসময় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কয়েকহাজার শ্রমিক অংশ নেয়। পরে দুপুর আড়াইটার দিকে কারখানা কর্তৃপক্ষ, পুলিশ আন্দোলনকারী শ্রমিকদের সঙ্গে বৈঠক করে তাদের দাবি মেনে নেন।
শ্রমিকদের দাবি মেনে নেওয়ার পর এমট্রানেট গ্রুপের মানব সম্পদ কর্মকর্তা সুজন, প্রোডাকশন ম্যানেজার লাকি আক্তার, সফিউল্লাহ, সুমন, সুপারভাইজার, মো. রানা, রফিক, মুসা, নিলুফা, শান্তা, ফরিদ ও ওয়াহিদের পদত্যাগের দাবিতে দুপুর ৩টার পর থেকে আবারো আন্দোলনে নামে শ্রমিকরা।
টঙ্গীর এমট্রানেট গ্রুপের শ্রমিক মো. রফিকুল ইসলাম জানান, তাদের দাবিগুলো কয়েক বছর যাবৎ মৌখিক ও লিখিতভাবে উপস্থাপন করে আসছেন। মঙ্গলবার সকালে তারা পাঁচটি পোশাক কারখানার শ্রমিকরা একত্রে দাবিগুলো নিয়ে আন্দোলন করেছে।
অপরদিকে, মঙ্গলবার সকালে গাজীপুরের শ্রীপুরের গড়গড়িয়া মাস্টারবাড়ী এলাকার মেঘনা গ্রুপের হাই ফ্যাশন কারখানার শ্রমিকরা ১৪ দফা দাবিতে কর্মবিরতি শুরু করে। একপর্যায়ে তারা ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে অবস্থান নেয়।
এসময় পার্শ্ববর্তী হাউ আর ইউ টেক্সটাইল লিমিটেডের শ্রমিকদের বের করে আনতে গেলে হামলার শিকার হন হাই ফ্যাশনের শ্রমিকরা। এসময় উত্তেজিত শ্রমিকরা হাউ আর ইউ টেক্সটাইল এ ঢুকে ভাঙচুর চালায়।
এদিকে, জয়দেবপুর থানার নতুন বাজার এলাকার এসএম নীটওয়্যার লিমিটেডের শ্রমিকরা মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৮টায় কারখানায় প্রবেশ করে হাজিরা বোনাসসহ ১০ দফা বৃদ্ধির দাবিতে কর্মবিরতির ঘোষণা দেয়। পরবর্তীতে অ্যাসরোটেক্স লিমিটেডের শ্রমিকরা বেলা ১২টার দিকে কারখানার প্রধান গেটে ইট পাইকেল ছুঁড়তে থাকে। এসময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কারখানায় ছুটি ঘোষণা করা হয়।
কারখানা ছুটি ঘোষণা করা হলে এসএম নীটওয়্যার ও অ্যাসরোটেক্স লিমিটেডের শ্রমিকরা এ্যাপারেলস্-২১ লি. ও গ্রীণ ফাইবার কম্পোজিট লিমিটেড কারখানার গেটে গেলে কারখানা কর্তৃপক্ষ ওই দুটি কারখানায় ছুটি ঘোষণা করেন। পরে বেলা ১টার দিকে শ্রমিকরা যার যার অবস্থান থেকে সরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। দুপুরে পোড়াবাড়িতে ৫ মাসের বকেয়া বেতনের দাবিতে বিক্ষোভ করে ভার্গো লিমিটেডের শ্রমিকরা।
গাজীপুর শিল্পাঞ্চল পুলিশ-২ এর পুলিশ সুপার সারোয়ার আলম বলেন, মঙ্গলবার বিভিন্ন দাবিতে আবারও শ্রমিক বিক্ষোভের ঘটনা ঘটে। সকাল থেকে বিভিন্ন কারখানার শ্রমিকরা নানা দাবি নিয়ে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করেন। এতে ২৫টি কারখানায় ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। কারখানা কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের সঙ্গে আলোচনায় দুপুরের পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সেনাবাহিনী, বিজিবির সঙ্গে মিলে পুলিশ কাজ করছে।
বিএনএনিউজ/ বি এম/এইচমুন্নী