27 C
আবহাওয়া
২:১৮ পূর্বাহ্ণ - জুলাই ১৫, ২০২৫
Bnanews24.com
Home » মনিপুরে তেরঙা নামলো, উড়লো সাতরঙা পতাকা!

মনিপুরে তেরঙা নামলো, উড়লো সাতরঙা পতাকা!


বিএনএ ডেস্ক : উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে ভারতের উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় মণিপুর রাজ্য। একজন সাবেক সেনাকে পিটিয়ে হত্যার পাশাপাশি রাজভবন ও জেলা প্রশাসক ভবনসহ বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। শুধু হামলা চালিয়ে ক্ষান্ত হয়নি জেলা প্রশাসকের অফিসে টাঙানো তেরঙা পতাকা নামিয়ে সাতরঙা পতাকা উড়ালো শিক্ষার্থীরা।
ভারতের সংবাদ মাধ্যম ইন্ডিয়া টুডের উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় সংস্করণ ও অনলাইন সংবাদমাধ্যম ইস্টমোজোর প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

YouTube player

ইন্ডিয়া টুডে বলেছে, মণিপুরের শিক্ষার্থীরা সোমবার সেখানকার প্রধান প্রধান সরকারি ভবনে হামলা চালিয়েছে। শিক্ষার্থীদের এই বিক্ষোভ তীব্র আকার ধারণ করেছে। ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা রাজভবন ও থাউবালের জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে হামলা চালিয়েছে।

এর আগে, রাজ্যের নিরাপত্তা ব্যবস্থায় বড় ধরনের পরিবর্তনের দাবিতে রাজধানী ইম্ফলের রাস্তায় নেমে আসে হাজার হাজার শিক্ষার্থী। এ সময় তারা রাজ্যের নিরাপত্তা নিশ্চিতে সরকারি প্রশাসন ব্যর্থ হয়েছে বলে অভিযোগ করে।

বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীরা রাজ্যের বর্তমান নিরাপত্তা উপদেষ্টাকে অপসারণ ও মণিপুরে শান্তি ফেরাতে রাজ্য সরকারের হাতে সর্বোচ্চ ক্ষমতা দেওয়ার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতি দাবি জানায়। বিক্ষোভকারীরা বলছে, চলমান সংকটকে আরও ভালোভাবে মোকাবেলা করার জন্য নিরাপত্তা অভিযানের দায়িত্ব স্থানীয় কর্তৃপক্ষের নেওয়া উচিত।

বিক্ষোভে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বীরেন সিংয়ের বাসভবনে হামলার চেষ্টা করেছে। নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে টিয়ারগ্যাস নিক্ষেপ ও লাঠিচার্জ করেছেন। পরে ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা রাজভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে মণিপুরের বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের সরকারি অফিস থেকে একটি পতাকা নামিয়ে সেখানে নতুন করে আরেকটি পতাকা উড়ানোর ভিডিও ভাইরাল হয়েছে।

ইস্টমোজোর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শিক্ষার্থীরা নতুন করে যে পতাকাটি উড়িয়েছেন সেটি কাঙ্গলিপাক বা সালাই ট্যারেট পতাকা বলে ধারণা করা হচ্ছে।

‘‘কাঙ্গলিপাক বা সালাই ট্যারেট পতাকা’’ একটি আয়তাকার সাত রঙের পতাকা। প্রাচীনকালের মেইতি জাতিগোষ্ঠীর সাতটি বংশের প্রতিনিধিত্বের কথা তুলে ধরতে মণিপুরে অনেকেই এই পতাকা ব্যবহার করেন।

মণিপুরের শিক্ষার্থীদের সরকারি অফিসে নতুন পতাকা উত্তোলনের এই ঘটনা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দিয়েছে।

প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী, শিক্ষার্থীরা মণিপুরে ভারতের তেরঙা জাতীয় পতাকা নামিয়ে নতুন একটি সাতরঙা পতাকা উত্তোলন করেছে বলে জানা গেছে। ইস্টমোজো বলছে, রাজ্যের থাউবাল জেলার ডেপুটি কমিশনারের কার্যালয়ে এই ঘটনা ঘটেছে। ভবনের ছাদে উঠে শিক্ষার্থীরা একটি সাত রঙের পতাকা উড়িয়েছে। এই সময় সেখানে উপস্থিত লোকজনকে উল্লাস প্রকাশ করতে দেখা যায়।

থাউবালের ডেপুটি কমিশনার সুভাষ সিং ইস্টমোজোকে বলেছেন, শিক্ষার্থীরা একটি পুরোনো সালাই ট্যারেট পতাকা নামিয়ে নতুন পতাকা উত্তোলন করেছে। তবে নতুন পতাকাটি কিছুক্ষণ পরই নামিয়ে ফেলা হয়েছে। বিষয়টি পরিষ্কার করে তিনি বলেন, ‘‘আমরা সাধারণত প্রধান ফটকে পতাকা উত্তোলন করি না। আমাদের মূল অফিস ভবনে তেরঙা উড়ানো হয়।’’

এদিকে মনিপুরের রাজধানী ইম্ফলের পশ্চিম জেলার সেকমাই থেকে সাবেক এক সেনা সদস্যের মরদেহ উদ্ধার করেছে দেশটির পুলিশ। দেখে মনে হয়েছে তাকে পিটিয়ে মারা হয়েছে। নিহত সেনা সদস্যের নাম লিমখোলাল মাতে। তিনি আসাম রেজিমেন্টের হাবিলদার ছিলেন।

লিমখোলাল ভুলবশত মেতেই ও কুকি নামে দুই জনজাতির মধ্যকার ‘বাফার জোন’ অতিক্রম করেছিলেন বলে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমসের এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। মাতে কাংপোকপির মটবুংয়ের বাসিন্দা ছিলেন। সংঘর্ষ এড়াতে মেতেই ও কুকি জনজাতির আবাসস্থলের মধ্যবর্তী স্থানে কেন্দ্রীয় আধা-সামরিক বাহিনীকে মোতায়েন করা হয়েছে। যা বাফার জোন নামেও পরিচিত। মেতেইরা পাহাড়ের উপত্যকায় বাস করলেও কুকিরা বাস করে পাহাড়ের ওপরে। গত বছর সহিংসতা শুরু হওয়ার পর থেকে দুই সম্প্রদায়ের মানুষ একে অপরের এলাকায় প্রবেশ করা এড়িয়ে চলছে।

এদিকে মণিপুরের সামাজিক সংগঠন কমিটি অন ট্রাইবাল ইউনিটি দাবি করেছে, গত ৮ সেপ্টেম্বর একটি বোমা বিস্ফোরণে এক নারী নিহত হয়েছেন। এর আগে ৭ সেপ্টেম্বর মণিপুরের জিরিবাম জেলায় সহিংসতায় ছয়জন নিহত হয়।

মণিপুরে সহিংসতায় গত সপ্তাহে ড্রোন এবং রকেট ব্যবহার করা হয়। পরিস্থিতি মোকাবেলার প্রচেষ্টা সত্ত্বেও মৃত্যুর ঘটনা ঘটেই চলেছে।

শামীমা চৌধুরী শাম্মী/হাসনা

Loading


শিরোনাম বিএনএ