20.7 C
আবহাওয়া
৬:১৫ পূর্বাহ্ণ - নভেম্বর ২২, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » টাকার বিনিময়ে কিশোরীর যৌন ছবি সংগ্রহ, বিবিসির সংবাদ উপস্থাপক বরখাস্ত

টাকার বিনিময়ে কিশোরীর যৌন ছবি সংগ্রহ, বিবিসির সংবাদ উপস্থাপক বরখাস্ত

ব্রিটিশ ব্রডকাস্টিং করপোরেশন(বিবিসি)

বিশ্ব ডেস্ক : বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যম ব্রিটিশ ব্রডকাস্টিং করপোরেশন(বিবিসি)র এক সংবাদ উপস্থাপকের বিরুদ্ধে মাসিক টাকার বিনিময়ে এক কিশোরীর যৌনতাপূর্ণ ছবি গ্রহণ করার অভিযোগ ওঠেছে। প্রায় তিন বছর ধরে ওই কিশোরীর কাছ থেকে তিনি যৌন ছবি নিয়েছেন অভিযোগ ওই কিশোরীর মায়ের।

যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যম দি সান এরই মধ্যে কিশোরীর মায়ের অভিযোগের বরাত দিয়ে রোববার (৯ জুলাই২০২৩) একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। যেখানে বিবিসির বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় একজন পুরুষ উপস্থাপকের বিষয়ে এসব অভিযোগের কথা বলা হয়। বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে নিয়ে ইতোমধ্যে সেই উপস্থাপককে বরখাস্ত করেছে প্রভাবশালী ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম কর্তৃপক্ষ।

নাম প্রকাশে বিধিনিষেধ

ব্রিটেনে কারও বিরুদ্ধে আদালতে আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগ গঠন না হলে তাঁর নাম প্রকাশে বিধিনিষেধ থাকায় ওই উপস্থাপকের নাম প্রকাশ করা হয়নি।

৪৮ লাখ ৪৩ হাজারের বেশি টাকা

যুক্তরাজ্যেরই দ্য সান পত্রিকা গত শুক্রবার অভিযোগের বিষয়টি প্রথম প্রকাশ্যে আনে। ভুক্তভোগীর মা অভিযোগ করেন, তিন বছর আগে থেকে তাঁর সন্তানকে যৌনতাপূর্ণ ছবির জন্য অর্থ দিয়ে আসছেন বিবিসির একজন পুরুষ উপস্থাপক। তিনি তাকে মোট ৩৫ হাজার পাউন্ড( বাংলাদেশি টাকায় ৪৮ লাখ ৪৩ হাজারের বেশি) দিয়েছেন। যে সময় প্রথম অর্থ দেওয়া শুরু হয়েছিল, তখন তার বয়স ছিল ১৭ বছর।

কোকেনে আসক্ত

এই অর্থ দিয়ে তাঁর মেয়ে নেশা করে এবং সে কোকেনে আসক্ত হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেন কিশোরির মা। এ ঘটনায় ওই পরিবার গত ১৯ মে বিবিসির কাছে অভিযোগ করেন। কিন্তু এরপরও ওই উপস্থাপককে দায়িত্ব থেকে সরায়নি বিবিসি কর্তৃপক্ষ। সান পত্রিকায় খবরটি প্রকাশ হওয়ার পর এ নিয়ে তুমুল আলোচনা হয়।

অন্তর্বাস পরা ছবি

কিশোরীর মা শুক্রবার (৭ জুলাই) দি সানকে জানিয়েছেন, যৌনতাপূর্ণ ছবির জন্য বিবিসির উপস্থাপক তার কিশোরী মেয়েকে অর্থ দিয়েছেন। মেয়ের ফোনে তার অন্তর্বাস পরা ছবি দেখে তিনি বিষয়টি স্পষ্ট হয়েছেন।
ওই মহিলা জানান, আমি অভিযুক্ত তারকা উপস্থাপককে টিভিতে দেখতে খুব ভাল লাগে। হঠাৎ তার বাসায় সোফাতে শুধু অন্তর্বাস পরা ছবি দেখে তাকে আামি চিনতে পেরেছি। খুব মর্মাহত হয়েছি।

মেট্রোপলিটন পুলিশ

বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, কর্পোরেশন “বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করতে” পরে মেট্রোপলিটন পুলিশের সাথে দেখা করবে। বিবিসি বলেছে যে এটি মে মাস থেকে একটি অভিযোগের তদন্ত করছে, যখন এটি প্রথম সচেতন হয়েছিল, এবং বৃহস্পতিবার এটিতে “ভিন্ন প্রকৃতির” নতুন অভিযোগ আনা হয়েছিল।

পুলিশের সাথে যোগাযোগের পাশাপাশি কর্পোরেশন নিজস্ব অনুসন্ধান চালাচ্ছে এবং যুবকের পরিবারের সাথে কথা বলছে।

টিম ডেভি

বিবিসি মহাপরিচালক টিম ডেভি ১১ জুলাই ২০২৩ কর্পোরেশনের বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশের পর একটি নির্ধারিত ব্রিফিংয়ের জন্য মিডিয়ার মুখোমুখি হবেন, তবে নাম প্রকাশ না করা উপস্থাপকের সাথে জড়িত ক্রমবর্ধমান সঙ্কট ইভেন্টে প্রাধান্য পাবে বলে মনে হচ্ছে।

টাকার বিনিময়ে কিশোরীর যৌন ছবি সংগ্রহ, বিবিসির সংবাদ উপস্থাপক বরখাস্ত হবার ঘটনাটি এখন বিশ্ব মিডিয়া জগতে হৈচৈ ফেলে দিয়েছে।

এদিকে ডেইলি মিরর ইউকে জানায় :

বিবিসি উপস্থাপকের নাম প্রকাশ্যে আসছে না কেন?

মিডিয়া আইন বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, মানহানি এবং তার গোপনীয়তা লঙ্ঘনের ভয়ে মিডিয়া সাময়িকভাবে বরখাস্ত বিবিসি উপস্থাপকের নাম প্রকাশ্যে প্রকাশ করছে না।

 

মার্ক স্টিফেনস, মিডিয়া আইন বিশেষজ্ঞ এবং হাওয়ার্ড কেনেডির অংশীদার, বলেছেন যে স্যার ক্লিফ রিচার্ড আগস্ট ২০১৪ সালে বার্কশায়ারের সানিংডেলে তার বাড়িতে সাউথ ইয়র্কশায়ার পুলিশের অভিযানের কভারেজের জন্য বিবিসির বিরুদ্ধে গোপনীয়তার মামলা জিতেছিল তখন আইনটি পরিবর্তন করা হয়েছিল।

 

স্যার ক্লিফের বিরুদ্ধে ঐতিহাসিক যৌন অপরাধের মিথ্যা অভিযোগ আনা হয়েছিল। তিনি অভিযোগ অস্বীকার করেন এবং তাকে কখনই গ্রেফতার করা হয়নি এবং জুন ২০১৬ সালে প্রসিকিউটররা ঘোষণা করেছিলেন যে তিনি কোনও অভিযোগের মুখোমুখি হবেন না।

 

মিঃ স্টিফেনস বলেছিলেন: “জুলাই ২০১৮ সালে, ক্লিফ রিচার্ডের ক্ষেত্রে আইনটি পরিবর্তিত হয়েছিল এবং যা সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল যে তদন্ত চলাকালীন, গোপনীয়তার অধিকার এবং মত প্রকাশের স্বাধীনতা বা জনসাধারণের জানার অধিকারের মধ্যে ব্যক্তিগত বিষয় ভারসাম্য বজায় রাখাকে সমর্থন করা হয়েছিল।

“তাই সান এবং অন্য কোন সংবাদপত্র উপস্থাপককে চিহ্নিত করেনি, এবং এর একটি অংশ ছিল এই সোশ্যাল মিডিয়ার উন্মাদনা এড়ানোর জন্য যার নাম ব্যান্ড করা হচ্ছে।

 

“তাই মূলত, বিচারক, মিস্টার জাস্টিস মান, (ক্লিফ রিচার্ড) মামলায় বলেছিলেন যে কভারেজ এবং সোশ্যাল মিডিয়া শ্বাসরুদ্ধকর এবং চাঞ্চল্যকর ছিল এবং তদন্তের পর্যায় শেষ না হওয়া পর্যন্ত তিনি যা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, সেখানে কোনও নামকরণ করা উচিত নয়।

“এটি বেশ বিতর্কিত পরিবর্তন ছিল কিন্তু এটি একটি চমত্কার উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন ছিল এবং এটি এখানে প্রভাবিত হয়েছে, এবং এই ধরনের সবকিছুর উপর বসে আছে, তা নাগরিক অভিযোগ হোক বা অপরাধী হোক।”

বিএনএনিউজ২৪,জিএন

Loading


শিরোনাম বিএনএ