বিএনএ ডেস্ক: গরিব হওয়ার যন্ত্রণা আমি বুঝি। এবারের বাজেটসহ গত তিনবারের কোনো বাজেটই গরিব মারার ছিল না। আমরা সবসময় দেশের জনগণের কথা চিন্তা করে বাজেট দেই। গত তিন বছরে আপনারা ঠকেননি। আমরা কখনই গরিব মারার বাজেট দেইনি বলে মন্তব্য করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
শুক্রবার (১০ জুন) বিকেলে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলনে এ মন্তব্য করেন তিনি। অর্থমন্ত্রী বলেন, এবার যে বাজেট প্রণয়ন করা হয়েছে, সেটি তিনি মনে করেন দেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর বাজেট। সবাইকে উদ্বুদ্ধ করার জন্যই এবারের বাজেট দেয়া হয়েছে।
অর্থমন্ত্রী বলেন, একটা বিষয় মনে রাখতে হবে, যখনই কোনো চ্যালেঞ্জ আসে, চ্যালেঞ্জ শুধু একা আসে না, সুযোগও নিয়ে আসে। যেমন, আমাদের রপ্তানি আয় বেড়েছে। এই মুহূর্তে বিশ্বের কোনো দেশের ৫০ বিলিয়ন ডলারের রপ্তানি আয় নেই। কিন্তু আমরা করছি। সেজন্যই বলি, চ্যালেঞ্জের সঙ্গে সঙ্গে অনেক সুযোগ তৈরি হয়।’
মোস্তফা কামাল বলেন, বর্তমানে দেশে অনেক পণ্যের দাম একটু বেশি, এটা সত্য। তবে এটা হয়েছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে। এর ফলে সারাবিশ্বেই নিত্যপণ্যের দাম ঊর্ধ্বমুখী। এখানে কারও হাত নেই। এজন্য অনেকে গরিব মারার বাজেট বলছে। তবে আমরা গরিববান্ধবসহ দেশের সাধারণ জনগণকে গুরুত্ব দিয়েই আগামী বাজেট তৈরি করেছি।
অর্থমন্ত্রী বলেন, আগামী অর্থবছরের বাজেট দেশের দরিদ্র ও ব্যবসায়ীদের সমভাবে সাহায্য করবে। প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর কথা মাথায় রেখে বাজেট প্রণয়ন করা হয়েছে। বাজেটে তারা লাভবান হবে। বাজেটে ব্যবসায়ীরাও লাভবান হবে। এ বাজেট থেকে সবাই উপকৃত হবে।’
সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেন, ‘বাজেটে শিক্ষা খাতে বরাদ্দ নিয়ে হতাশ হওয়ার কিছু নেই। এখন কতটা দক্ষতার সঙ্গে বাজেট বাস্তবায়ন করতে পারি সেদিকে আমাদের মনোযোগ দিতে হবে।’
কৃষিমন্ত্রী মুহাম্মদ আবদুর রাজ্জাক বলেন, ‘৩-৪ মাসের আমদানিতে সহায়তা করতে পারলে বৈদেশিক রিজার্ভকে সাধারণত সন্তোষজনক বলে মনে করা হয়। আমাদের ৪২ বিলিয়ন ডলারের বেশি রিজার্ভ আছে। এতে বেশ কয়েক মাসের আমদানি চালানো যাবে।’
এসময় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেকও স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন। বলেন, ‘বাজেটে গবেষণা ও উন্নয়ন, ভ্যাকসিন উৎপাদন এবং অসংক্রামক রোগের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ওপর জোর দেয়া হয়েছে এবং স্বাস্থ্য সরঞ্জাম আমদানিতে শুল্ক কমানো হয়েছে।’
‘যখনই আমরা টাকা চেয়েছি, অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে পেয়েছি। অর্থ মন্ত্রণালয় একদিনে ১ বিলিয়ন ডলার পর্যন্ত অর্থছাড় দিয়েছে। আমি আশা করি অর্থ মন্ত্রণালয় এবং অন্যান্য মন্ত্রণালয় তাদের সহযোগিতা অব্যাহতভাবে বাড়াতে থাকবে,’ বলেন তিনি।
পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী শামসুল আলম বলেন, ‘উচ্চ মূল্যস্ফীতির চাপ মাথায় রেখে সারের দাম বাড়ানো হয়নি।
প্রস্তাবিত বাজেটের আকার ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকা। অর্থমন্ত্রী হিসেবে আ হ ম মুস্তফা কামালের এটি চতুর্থ বাজেট। আর বাংলাদেশের জন্য ৫১তম। পাশাপাশি রাষ্ট্র পরিচালনায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের ২০তম বাজেট হলেও ২০০৮ সাল থেকে বর্তমান সরকার টানা বাজেট দিয়ে যাচ্ছে।
বিএনএ/ এ আর