বিএনএ, ঢাকা: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্ব মানবাধিকার দিবস উপলক্ষ্যে এক বাণীতে বলেছেন, তার সরকার গণতন্ত্র ও মানবাধিকার পূর্ণ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে বৈষম্যমুক্ত সমাজ বিনির্মাণে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।
আগামীকাল রবিবার ১০ ডিসেম্বর বিশ্ব মানবাধিকার দিবস।
শনিবার (৯ ডিসেম্বর) দেয়া বাণীতে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগের ফলে বাংলাদেশ মানবাধিকারের বিভিন্ন ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি করেছে। আমরা আমাদের সকল নাগরিকের জন্য শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা এবং অর্থনৈতিক সুযোগের সমতা নিশ্চিত করতে অক্লান্ত পরিশ্রম করছি। আমরা নারী, শিশু ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর অধিকার রক্ষায় পদক্ষেপ নিয়েছি। মানবাধিকার লঙ্ঘনের শিকার, বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের নিরাপদ আশ্রয়ের ব্যবস্থা করে আমরা বিশ্ব দরবারে মানবাধিকার রক্ষার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছি।
অথচ তাঁর সাথেই সবচেয়ে বেশি মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে
শেখ হাসিনা বলেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এদেশের মানুষকে হাজার বছরের শোষণ ও বঞ্চনা থেকে মুক্তি দেওয়ার লক্ষ্যে সারাজীবন আন্দোলন-সংগ্রাম করেছেন। তিনি এমন বাংলাদেশ গড়তে চেয়েছিলেন যেখানে প্রতিটি মানুষ মানবিক মর্যাদা, সাম্য ও ন্যায়বিচারের নিশ্চয়তা লাভ করবে। এ অঞ্চলের মানুষের রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য তিনি বারবার কারাবরণ করেছেন।জাতির পিতার নিঃস্বার্থ সংগ্রাম, অত্যন্ত বলিষ্ঠ ও দূরদর্শী নেতৃত্বে আমরা স্বাধীনতা অর্জন করেছি। অথচ তাঁর সাথেই সবচেয়ে বেশি মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে।
এদেশে মানবাধিকার বলে আর কিছু ছিলো না
বাংলাদেশের জনগণের পক্ষে বিশ্বের শোষিত-নিপীড়িত মানুষের ন্যায়সঙ্গত সংগ্রামের প্রতি সংহতি প্রকাশ করে,প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যা করার পর এদেশে মানবাধিকার বলে আর কিছু ছিলো না। সেই কালরাতে আমাদের পরিবারের ১৮জন সদস্যকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। খুনিদের যাতে কেউ বিচার করতে না পারে সেজন্য দায়মুক্তি অধ্যাদেশ প্রণয়ন করে আমাদের স্বজনদের হত্যার বিচার চাওয়ার অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছিল। ১৯৯৬ সালে সরকার গঠনের পূর্বে আমরা এই বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ডের বিচার চেয়ে মামলা করতে পারিনি। সরকার গঠনের পর সেই কালো আইন বাতিল করে দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় আমরাই প্রথম উদ্যোগ নিয়েছিলাম। এরপর থেকে আমরা সকল মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিচারের ব্যবস্থা করেছি। জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থা প্রতিষ্ঠা করেছি।
ন্যাশনাল ইনকোয়ারি কমিটি
নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা ও ধর্ষণ প্রতিরোধে কমিশনের উদ্যোগে ন্যাশনাল ইনকোয়ারি কমিটি করা হয়েছে। মানবাধিকার সুরক্ষায় আমাদের সরকারের পক্ষ থেকে কমিশনকে সব ধরনের সহযোগিতা দেওয়া হচ্ছে।
ফিলিস্তিন, সিরিয়াসহ বিশ্বব্যাপী মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিপক্ষে জোরালো প্রতিবাদ
আমরা জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে অবদান রেখে যাচ্ছি, যা বিশ্ব পরিমণ্ডলে আমাদের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছে। ফিলিস্তিন, সিরিয়াসহ বিশ্বব্যাপী মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিপক্ষে জোরালো প্রতিবাদ জানিয়ে আসছি। বাংলাদেশ সরকার মানবাধিকার সুরক্ষার লক্ষ্যে মানবাধিকার সংক্রান্ত আটটি আন্তর্জাতিক দলিলে স্বাক্ষর ও অনুসমর্থন করেছে। বাংলাদেশ ২০২৩-২০২৫ মেয়াদে জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিল (ইউএনএইচআরসি)-এর নির্বাচিত সদস্য হিসেবে কাজ করছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বিএনএ,এসজিএন