বিএনএ ডেস্ক: রাজধানীর কামরাঙ্গীরচরে এসপিএ ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও হাসপাতালে এক ভুয়া ডাক্তারের বিষয়ে তথ্য নিতে গেলে ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক হাসান মিসবাহ ও ক্যামেরাপার্সন সাজু মিয়ার ওপর হামলা ও মারধর করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (৯ আগস্ট) বিকেলে ডায়গনস্টিক সেন্টারটির মালিক ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা দুই সাংবাদিককে মারধর করেন। তাদের ক্যামেরা ভাংচুর করা হয়। ছিনিয়ে নেয়া হয় মোবাইল ফোন ও গাড়ির কাগজপত্র। শুধু তাই নয়, প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে তাদেরকে একটি কক্ষে আটকে রাখা হয়। পরে পুলিশ এসেও দুই সাংবাদিকের ওপর চড়াও হয়।
হামলার শিকার সাংবাদিক হাসান মিসবাহ জানান, এসপিএ ডায়াগনস্টিক সেন্টারে একজন ভুয়া চিকিৎসক বসেন। তিনি অন্য একজন চিকিৎসকের বিএমডিসি নম্বর ব্যবহার করে ওই হাসপাতালের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা পদে আছেন বহাল তবিয়তে। রোগীও দেখেন তিনি।
হাসান মিসবাহ জানান, হাসপাতালের স্বত্বাধিকারী ডাক্তার ওসমানীকে ওই ভুয়া চিকিৎসকের বিষয়ে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি ক্ষেপে যান। তখন তাকে মেসবাহ বলনে, আপনি এই হাসপাতালের মালিক ও একজন ডাক্তার। আপনার নামের পাশেও বিএমডিসি নম্বর লেখা নেই। এটা লেখা থাকলে ভাল হয়।
কথোপকথনের মাঝে ডাক্তার ওসমানী সাংবাদিক হাসান মিসবাহ বলেন, তুই কি আমাকে ভুয়া ডাক্তার মনে করছিস? তুই জানিস আমি কে? দাঁড়া তোকে দেখাচ্ছি। এই তোকে ইন্টারভিউ দেব না। এক পর্যায়ে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে হাসান মিসবাহর চশমা ভেঙে ফেলেন।
হাসান মিসবাহ জানান, ওসমানীর অফিস থেকে বের হয়ে তিনি গাড়ির কাছে যান। তখন ওসমানী সাঙ্গপাঙ্গ নিয়ে হামলা তাদের ওপর হামলা করেন। ড্রাইভারের কাছ থেকে মোবাইল গাড়ির কাগজ নিয়ে নেয়। এরপর ওসমানী সাংবাদিক মিসবাহর মোবাইল কেড়ে নিয়ে ভেঙে ফেলেন। ক্যামেরা পারসন সাজু এবং ড্রাইভারকে ১৫-২০ জন মিলে মারধর করে। পরে গণমাধ্যমকর্মীদের একটা রুমে নিয়ে আটকে রাখা হয়।
সাংবাদিক মিসবাহ আরও জানান, কিছুক্ষণ পর দুজন পুলিশ সদস্য ঘটনাস্থলে আসেন। তাদের একজনের নাম মিলন হোসেন। তিনি পরিচয় জানতে চাইলে আমরা পরিচয় দেই। এরপর কার্ড চাইলে ক্যামেরা পারসন সাজু ভাই তার কার্ড বের করে দেন।
কার্ড হাতে নিয়ে পুলিশ সদস্য মিলন বললেন-তোরা ভূয়া সাংবাদিক। তখন আমি আবার আমার পরিচয় দেই এবং জানাই যে অফিসের অ্যাসাইনমেন্ট নিয়ে এখানে এসেছি। আপনি অফিসে ফোন দেন। উনি কোনো কথা না শুনে চেয়ার থেকে উঠে আমার দিকে তেড়ে আসেন এবং আমার মুখে আঘাত করেন।
লালবাগ বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মো. জাফর হোসেন জানান, খবর পেয়ে অন্য পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে সাংবাদিকদের উদ্ধার করেন। এ সময় দুইজনকে আটক করা হয়। এছাড়া সাংবাদিকদের মারধর করার দায়ে কামরাঙ্গরচর থানার এসআই মিলন হোসেনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
বিএনএ/এ আর