22 C
আবহাওয়া
১২:১৬ পূর্বাহ্ণ - নভেম্বর ২২, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » অবশেষে পদ্মা অয়েলের সিবিএ নেতা নাছির কারাগারে

অবশেষে পদ্মা অয়েলের সিবিএ নেতা নাছির কারাগারে

অবশেষে পদ্মা অয়েলের সিবিএ নেতা নাছির কারাগারে

বিএনএ, চট্টগ্রাম: জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় পদ্মা অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের নাছির উদ্দিন নামে এক সাবেক সিবিএ নেতাকে কারাগারে পাঠিয়েছে চট্টগ্রামের একটি আদালত। সে পদ্মা অয়েল কোম্পানি লিমিটেড ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের সাবেক সাধারণ সম্পাদক বলে জানা যায়।

মঙ্গলবার (৯ জানুয়ারি) চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা ও স্পেশাল জজ ড. বেগম জেবুননেছার আদালতে আত্মসমর্পণ করলে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেয়া হয়।

মহানগর দায়রা জজ আদালতের প্রশাসনিক কর্মকর্তা দীপেন দাশগুপ্ত বলেন, নাছির উদ্দিনের বিরুদ্ধে ২ কোটি ১১ লাখ ৭১ হাজার ১৩০ টাকা জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ করেছিল দুদক। তিনি আজ আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করলে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোরে আদেশ দেন।

এদিকে মামলার নথিপত্র পর্যালোচনা করে জানা যায়, নাছির উদ্দিন প্রথমে অস্থায়ী ‘সিকিউরিটি গার্ড’ পদে পদ্মা অয়েল কোম্পানিতে যোগদান করলেও পরে ১৯৮৬ সালের ২৩ আগস্ট ২৩০ টাকা বেসিক বেতনে ‘পিয়ন’ হিসেবে চাকরি নিয়মিত হয় তার। ২০১৪ সালের ‘ট্যাংক লরী হেলপার’ থেকে ‘চেকার’, পরের ছয় মাসের মাথায় ‘ক্লারিক্যাল সুপারভাইজার’ পদোন্নতি পান।

নাছির উদ্দিনের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের প্রাথমিক প্রমাণ পাওয়ায় ২০১৯ সালে সম্পদ বিবরণী দাখিলের নির্দেশ দেয় দুদক। পরবর্তীতে একই বছরের ১২ মে সম্পদ বিবরণী দাখিল করেন। দুদকের কাছে তিনি ২৭ লাখ ২৬ হাজার ৯০০ টাকার স্থাবর সম্পদ অর্জনের তথ্য প্রদান করেন। এর মধ্যে আনোয়ারার চাতরীতে ১ লাখ ৬৮ হাজার ১৫০ টাকায় ৫২ শতক কৃষি জমি ও আলোচ্য জমিতে ২৫ লাখ ৫৮ হাজার ৭৫০ টাকা ব্যয়ে একটি কমিউনিটি সেন্টার নির্মাণ করার কথা উল্লেখ করেন।

অথচ দুদকের অনুসন্ধানে দেখা যায়, প্রকৌশলী দ্বারা পরিমাপে কমিউনিটি সেন্টারটি নির্মাণ ব্যয় পাওয়া যায় ১ কোটি ৪২ লাখ ৮৭ হাজার ১৩৪৪ টাকা। এখানে তিনি ১ কোটি ১৭ লাখ ২৮ হাজার ৩৮৪ টাকা গোপন করেন। এছাড়া সাব-রেজিস্ট্রার অফিসের রেকর্ডপত্র যাচাইককালে তার নিজ নামে ২৬ লাখ ৬৮ হাজার টাকার সম্পদ ক্রয়ের তথ্য পাওয়া যায়। সবমিলিয়ে তিনি ১ কোটি ৪৩ লাখ ৯৬ হাজার ৩৮৪ টাকা স্থাবর সম্পদ অর্জনের তথ্য গোপন করেছেন।

এর বাইরে তিনি তার দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণীতে ১ কোটি ২ লাখ ৯৪ হাজার ৪৭৪ টাকার অস্থাবর সম্পদ অর্জনের ঘোষণা দেন। কিন্তু যাচাইকালে তার নামে মোট ১ কোটি ৭০ লাখ ৬৯ হাজার ২২০ টাকার অস্থাবর সম্পদ অর্জনের তথ্য পাওয়া যায়। এরমধ্যে তিনি লাইফ ইন্সুরেন্স, পলিসি স্কিম, মেসার্স আমিন নামে প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ ও জমা রাখেন। এখানে তিনি ৬৭ লাখ ৭৪ হাজার ৭৪৬ টাকা অস্থাবর সম্পদ গোপন করেন। সবমিলিয়ে তিনি ২ কোটি ১১ লাখ ৭১ হাজার ১৩০ টাকার স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ অর্জনের তথ্য গোপন করেন।

এর আগে, ২০২৩ সালের ২ নভেম্বর নাছির উদ্দিনের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ করে  দুদক চট্টগ্রাম সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এ মামলা করেন কার্যালয়টির উপ-সহকারী পরিচালক মো. সবুজ হোসেন।

প্রসঙ্গত, আনোয়ারা থানার চাতরী চৌমুহনী সংলগ্ন গুয়াপঞ্চক এলাকার শশী কমিউনিটি সেন্টারের মালিক নাছির উদ্দিনের সাথে গত বছর সিবিএ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে পদ্মা অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের ল্যাবরেটরী সেকশনের টেস্টার পদে কর্মরত মো. হারুন চৌধুরীর বিরোধ চলে আসছিল। হারুন চৌধুরীর বাড়িও চাতরী চৌমুহনী এলাকায়। গত বছরের ১৩ ডিসেম্বর শশী কমিউনিটি সেন্টারের সামনে পুলিশের সাথে বিএনপি নেতাকর্মীদের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। এ ঘটনায় নাছির উদ্দিনের মালিকানাধীন শশী কমিউনিটি সেন্টারের ম্যানেজার রাশেদ নেওয়াজ চৌধুরী বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় ২১ জনের নামসহ অজ্ঞাতনামা  ৫০/৬০ জনকে আসামী করা হয়। এতে ১১নং আসামী করা হয় মো. হারুন চৌধুরীকে।

অথচ হারুন চৌধুরী ওই দিন পদ্মা অয়েল কোম্পানীতে কর্মরত অবস্থায় ছিল। নাছির আনোয়ারা থানার এসআই ফারুককে ডেকে এনে হারুনকে গ্রেপ্তার করায়। পুলিশ আনোয়ারা থানার কেইপিজেড এলাকা থেকে হারুন চৌধুরীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে আদালতকে জানালেও প্রকৃতপক্ষে গ্রেপ্তার করা হয় ১৮ ডিসেম্বর দুপুরে পদ্মা অয়েল কোম্পানীর গুপ্তখালস্থ অফিসে কর্মরত অবস্থায়। তখন থেকে হারুন চৌধুরী চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে আটক রয়েছেন।

বিএনএনিউজ/ বিএম /এইচমুন্নী

Loading


শিরোনাম বিএনএ