বিএনএ ডেস্ক: বর্তমান বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অবস্থার প্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্ট সকলকে মিতব্যয়ী হওয়ার পাশাপাশি অপচয় বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একইসঙ্গে তিনি বিলাসী পণ্য সামগ্রী এড়িয়ে চলা এবং ব্যয় নিয়ন্ত্রণ ও তহবিলের অপব্যবহার রোধ করার আহ্বান জানান তিনি।
মঙ্গলবার (৮ নভেম্বর) মঙ্গলবার রাজধানীর শেরেবাংলানগর এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় তিনি এই নির্দেশ দেন। প্রধানমন্ত্রী একনেক সভায় সভাপতিত্ব করেন।
বৈঠকের পর সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান জানান, বিশ্বব্যাপী মন্দা চলছে-তাই প্রধানমন্ত্রী একনেক সভায় সংশ্লিষ্ট সকলকে অপচয় বন্ধের পাশাপাশি মিতব্যয়ী হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। একইসঙ্গে বিলাসী পণ্য এড়িয়ে চলার আহ্বান জানিয়েছেন।
মান্নান জানান, প্রধানমন্ত্রী সংশ্লিষ্টদের গ্রামীণ ছোট প্রকল্প বা কল্যাণমূলক প্রকল্প নিয়ে আসতে বলেছেন। তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী বলেছেন আয়েশী বা বিলাসী প্রকল্প নেয়া যাবে না। কিন্তু আমরা গ্রামীণ ছোট প্রকল্প বা কল্যাণমূলক প্রকল্পের সাথে আপস করতে পারি না। এখন মেগা প্রকল্প নেয়া যাবে না।’
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী যে কোনো বড় প্রকল্প গ্রহণের ক্ষেত্রে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে সম্ভাব্যতা যাচাই করতে বলেছেন। দেশের আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা অনাবাদী জমি খুঁজে বের করতে মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। সচিব যেন জেলা প্রশাসকদের সহায়তা নিয়ে এসব অনাবাদী জমি খুঁজে বের করে আবাদযোগ্য করার ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেন।
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী আমিষ ও প্রয়োজনীয় পুষ্টির চাহিদা মেটাতে মুরগি, গবাদি পশু ও শাকসবজির উৎপাদন বাড়ানোর উপর সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে বলেছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, কৃষি উৎপাদন বাড়াতে হবে, যাতে আমরা স্বনির্ভর হতে পারি। এক ইঞ্চি জমিও অনাবাদি রাখা যাবে না।
এক প্রশ্নের জবাবে মান্নান বলেন, দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ পরিস্থিতি নিয়ে বৈঠকে সুনির্দিষ্ট কোন আলোচনা হয়নি। পৃথিবীর সকল দেশ মন্দার সম্মুখীন হচ্ছে এবং আরও একটি অর্থনৈতিক মন্দার দ্বারপ্রান্তে রয়েছে। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ ছোট দেশ হওয়ায় এর প্রভাব আমাদের উপর বেশি পড়ছে।’
বাংলাদেশ বর্তমান বৈশ্বিক অবস্থার শিকার উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রতি মুহূর্তে প্রেক্ষাপট পরিবর্তন হচ্ছে। এর সঙ্গে সমন্বয় করে আমাদেরকে এগিয়ে যেতে হবে। তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি, এখনও আমরা স্বস্তিদায়ক অবস্থায় রয়েছি। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) ও অন্যান্য সংস্থা আমাদের ভাল অবস্থার পূর্বাভাস দিচ্ছে। দেশে মূল্যস্ফীতি এখন নিম্নমূখী রয়েছে, আমাদের এই অবস্থা দৃঢ়ভাবে ধরে রাখতে হবে এবং সামনের দিকে এগুতে হবে।’
বিদেশী বিনিয়োগ, রেমিটেন্স প্রবাহ, রপ্তানি আয় এবং এলসি খোলার সাম্প্রতিক পরিসংখ্যান তুলে ধরে পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম বলেন, দেশ অর্থনৈতিক দিক থেকে কিছুটা চাপের মধ্যে রয়েছে। তবে, এটি সত্য নয় যে, আমরা বড় কোন সংকট বা কোনো বিপর্যয়ের মধ্যে রয়েছি। তিনি বলেন,‘ বিদেশী বিনিয়োগ, রেমিটেন্স প্রবাহ ও রপ্তানি আয়ের ক্ষেত্রে আমরা সামনের দিকে এগুচ্ছি।’
সম্প্রতি আকু পেমেন্টের কারণে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৩৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের নিচে নেমে গেছে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, বর্তমান বৈদেশিক মুদ্রার যে রিজার্ভ রয়েছে-তা দিয়ে সাড়ে চার মাসের আমদানি বিল মেটানো যাবে।
বিএনএ/এ আর