বিএনএ, যশোর: দুর্নীতির অভিযোগে বেনাপোল কাস্টমস হাউজের বর্তমান ও সাবেক কমিশনারসহ ৩২ জন কাস্টমস ও বন্দরের কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। রোববার (৭ নভেম্বর) বেনাপোলের সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট মেসার্স সাগর এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী আকবর আলী এই মামলা করেন।
যশোরের সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতের বিচারক ইখতিয়ারুল ইসলাম মল্লিক অভিযোগের তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক)। মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পেশকার আমিরুল ইসলাম। তিনি জানান, আদালত মামলাটি তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য দুদককে নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলার বিবরণে জানা গেছে, ঢাকার মিরপুরের সোহেল এন্টারপ্রাইজ ২০১৯ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর ১৩৮ প্যাকেট গার্মেন্টস পণ্যসহ অন্যান্য পণ্য আমদানি করে। ওই পণ্য ভারতীয় কাস্টমস তিন হাজার ২৭৯ দশমিক ৪০ কেজি ঘোষণার ছাড়পত্র দিয়ে বাংলাদেশে পাঠায়। এরপর সেটা বেনাপোল বন্দরের এক নম্বর শেডে রাখা হয়। সাত নম্বর আসামি সহকারি কমিশনার দিপারানী হালদারের নেতৃত্বে একটি টিম শেডে রাখা পণ্য পরীক্ষা করেন। সেখানে অতিরিক্ত কোনো পণ্য পাওয়া যায়নি। কিন্তু ২৬ সেপ্টেম্বর কাস্টমস কর্মকর্তারা কোনো কিছু না জানিয়ে তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেন।
ওই নোটিশের জবাব দেওয়ার পরও তিন হাজার ৬৭২ কেজি পণ্য দেখিয়ে একটি প্রতিবেদন দিয়ে শুল্কায়নের প্রস্তাব করে কর্তৃপক্ষ। এই ঘটনায় তৎকালীন কমিশনার বেলাল হুসাইন আমদানিকারককে মোট চার লাখ টাকা জরিমানা করেন। এরপর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট ও আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান চলতি বছরের ৫ আগস্ট পণ্য খালাসের আবেদন করে। কিন্তু পণ্য নিতে পারেনি। সেই সঙ্গে মেসার্স সাগর এন্টারপ্রাইজের সিঅ্যান্ডএফ লাইসেন্স বাতিল করে কর্তৃপক্ষ। এর আগে ৩ নম্বর আসামি ড. নেয়ামুল ইসলাম পণ্য খালাসের কথা বলে তিন লাখ টাকা গ্রহণ করেছেন। একই সঙ্গে লাইসেন্স অবমুক্ত করার জন্য আরও দুই লাখ টাকা ঘুষ দাবি করেন।
আসামিরা হলেন- বেনাপোল কাস্টমস কমিশনার আজিজুর রহমান, সাবেক কমিশনার বেলাল হুসাইন চৌধুরী, অতিরিক্ত কমিশনার ড. নেয়ামুল ইসলাম, বর্তমান উপ-কমিশনার এসএম শামীমুর রহমান, বিল্লাল হোসেন, পারভেজ রেজা চৌধুরী, অনুপম চাকমা, সহকারি উত্তম চাকমা, দিপারাণী হালদার, মুর্শিদা খাতুন, এইচ এম আহসানুল কবীর, সহকারি রাজস্ব কর্মকর্তা (কার্গো শাখা) শামিম হুসাইন, কামাল হোসেন, নূরে আলম, জিএম আশরাফুল আলম, বিকাশ চন্দ্র মণ্ডল, সাজেদুর রহমান, সাখাওয়াত হোসাইন, এসএম মেজবাহ উদ্দিন, রাজস্ব কর্মকর্তা নূর মোহাম্মদ, মৃণাল কান্তি সরকার, স্বপন কুমার দাস, এসএম আজিজুর রহমান, এসএম বদিউজ্জামান, বেনাপোল বন্দরের উপপরিচালক (ট্রাফিক) আবদুল জলিল, মামুন তরফদার, সহকারি পরিচালক আতিকুর রহমান, লাকি বেগম, উপ-সহকারি পরিচালক (যান্ত্রিক) শিমরান হোসেন, ওয়্যার হাউজের সুপারিনন্টেন্ড আবু রাসেল ও কম্পিউটার অপারেটর রনি কুমার বসাক।
বিএনএ/ এমএফ