লাইফস্টাইল ডেস্ক: ভাদ্র মাস বিদায় নিয়েছে। এখন চলছে আশ্বিন। ভাদ্র মাস মানেই পাকা তালের মৌসুম। তবে এখনও বাজারে প্রচুর তাল পাওয়া যায়। অন্য ফলের মতো তালও বেশ উপকারী ফল। মানবদেহের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতায়ও এর যথেষ্ট অবদান রয়েছে। তাছাড়া তাল দিয়ে তৈরি নানা ধরনের সুস্বাদু পিঠা ও খাদ্য উপাদান আমাদের গ্রাম বাংলার চিরায়ত ঐতিহ্য।
বাঙালির বাঙালিয়ানা খাবারগুলোর জনপ্রিয়তায় তাল অনেকটা জায়গাজুড়ে আছে। সুস্বাদু এই ফলটি কচি অবস্থায় শাঁস হিসেবে খাওয়া যায়। পাকা তাল থেকে রস বের করার পর দীর্ঘদিনের বিরতিতে বীজ মাটিতে রেখে দিয়ে তা থেকে পাওয়া শাঁসও বাঙালিদের কাছে বেশ প্রিয় একটি খাবার।
পাকা তালের রস দেখতে বেশ কমলা রঙের হয়ে থাকে। এটি খেতে যেমন সুস্বাদু, তেমনি স্বাস্থ্যগুণেও অনন্য। পাকা তালে রয়েছে ভিটামিন এ, বি, সি, জিংক, পটাশিয়াম, আয়রন, ক্যালসিয়াম। এ ছাড়াও রয়েছে অ্যান্টি-অক্সিজেন ও অ্যান্টি-ইনফ্লামেটরির মতো প্রয়োজনীয় উপাদান।
পুষ্টিবিদদের মতে, ১০০ গ্রাম পাকা তালে রয়েছে খাদ্যশক্তি ৮৭ কিলো ক্যালরি, জলীয় অংশ ৭৭.৫ গ্রাম, আমিষ .৮ গ্রাম, চর্বি .১ গ্রাম, শর্করা ১০.৯ গ্রাম, খাদ্য আঁশ ১ গ্রাম, ক্যালসিয়াম ২৭ মিলিগ্রাম, ফসফরাস ৩০ মিলিগ্রাম, আয়রন ১ মিলিগ্রাম, থায়ামিন ০.০৪ মিলিগ্রাম, রিবোফ্লাভিন ০.০২ মিলিগ্রাম, নিয়াসিন ০.৩ মিলিগ্রাম ও ভিটামিন সি ৫ মিলিগ্রাম। তাই অনেক রোগেরই মহৌষধ হিসেবে কাজ করতে পারে পাকা তাল।
বিশেষজ্ঞরা বলেন, পাকা তালের রসের ভিটামিন বি কমপ্লেক্স শরীরে ভিটামিন বি-র ঘাটতি পূরণ করে। এতে থাকা ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস দাঁত ও হাড়ের ক্ষয় প্রতিরোধ করে। যাদের কোষ্ঠকাঠিন্য, অন্ত্রের রোগ কিংবা কৃমির সমস্যা আছে, তারা এই মৌসুমে তাল খাওয়ার অভ্যাস করুন। যারা প্রায়ই বুক ধড়ফড় করার সমস্যায় ভোগেন, তারা দুধের সঙ্গে চার চামচ তালের রস মিশিয়ে সকালে ও বিকেলে খাওয়ার অভ্যাস করতে পারেন। সপ্তাহে এভাবে তিন দিন খেতে হবে।
তাল খাওয়ার অভ্যাসে পুরুষত্বহীনতায় উপকার পাওয়া যায়। বমিভাব দূর করতেও এভাবে পাকা তাল খেতে পারেন। যদি পুরোনো কোনো কাশি কোনোভাবেই আপনার পিছু না ছাড়ে, তবে একই পদ্ধতিতে তাল খেয়ে উপকার পাবেন।
তাল খাওয়ার সবচেয়ে ভালো সুফল হলো, এতে থাকা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট উপাদানটির ক্যানসার প্রতিরোধ করার ক্ষমতা রয়েছে। পাশাপাশি ভুলে যাওয়ার প্রবণতা থেকে আপনাকে মুক্তি দিতে স্মৃতিশক্তিকে বেশ প্রখর করে তুলতে পারে পাকা তাল।
কচি তালের শাঁসে আছে প্রায় ৯৩ শতাংশ জলীয় অংশ। এছাড়াও এতে আছে জেলাটিন, যা খাওয়ার পর পেট ভরে যাওয়ার মতো অনুভূতি দেয় এবং ক্ষুধাভাব কমিয়ে ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে৷
শরীরের কোষের মধ্যে ইলোকট্রোলাইট ভারসাম্য বজায় রাখতে কচি তালের শাঁস খুবই উপকারী। বমি ভাব বা ডায়রিয়ায় আক্রান্তদের জন্য এটি বেশ উপকারী একটি খাবার।
বিএনএনিউজ২৪/ এমএইচ