বিএনএ, বিশ্বডেস্ক: ভারতের পশ্চিমবঙ্গে শনিবার সকাল থেকে শুরু হয়েছে পঞ্চায়েত নির্বাচন। তবে ভোট গ্রহণ শুরুর পর থেকেই বিভিন্ন কেন্দ্রে চলছে ব্যাপক সহিংসতা আর সংঘর্ষ। এতে করে ভোট গ্রহণ শুরুর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই নির্বাচনকেন্দ্রিক সহিংসতায় নিহত হয়েছে অন্তত ৯ জন। টাইমস অব ইন্ডিয়া এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
নিহতদের মধ্যে পাঁচজন তৃণমূল সদস্য, একজন বিজেপি, বাম ও কংগ্রেসের একজন করে কর্মী এবং একজন স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থক বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা। সহিংস সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন আহত হওয়ার পাশাপাশি অন্তত দুটি ভোট কেন্দ্রে ব্যালট বাক্স ধ্বংস করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বার্তা সংস্থা পিটিআই।
শনিবার (৮ জুলাই) রাজ্যের ২২টি জেলার ৬৩ হাজার ২২৯টি গ্রাম পঞ্চায়েত আসন, ৯ হাজার ৭৩০টি পঞ্চায়েত সমিতির আসন এবং ৯২৮টি জেলা পরিষদের আসনে নির্বাচন শুরু হয়। রাজ্যের ক্ষমতাসীন দল তৃণমূল কংগ্রেস ও বিরোধী দল ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) এসব সহিংসতার জন্য একে-অপরকে দোষারোপ করেছে।
কলকাতাভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজার জানিয়েছে, পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগ থেকেই হামলা, সংঘর্ষ চলছিল। নির্বাচনের দিন এগুলো প্রকট আকার ধারণ করে। রাজ্যের অসংখ্য জায়গায় গুলির ঘটনা ঘটে। কোথাও কোথাও বোমা হামলাও হয়।
সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, মুর্শিদাবাদে দুই তৃণমূল কর্মীকে খুনের অভিযোগ উঠেছে। জেলার বিভিন্ন এলাকায় গুলিবিদ্ধ হয়েছেন তৃণমূল, কংগ্রেস এবং সিপিএমের কর্মীরা।
পূর্ব বর্ধমানের জামালপুর ২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার ডাঙা ফরিদপুর অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১৫২ নম্বর বুথে সকাল থেকে ছাপ্পা ভোট দেওয়ার অভিযোগ তৃণমূলের বিরুদ্ধে। খবর সংগ্রহ করতে গিয়ে আক্রান্ত সাংবাদিক মোহাম্মদ খান। যে মোবাইল ফোনের ক্যামেরায় সাংবাদিক মোহাম্মদ খান ছাপ্পা ভোটের রেকর্ডিং করেছিলেন সেই ফোন কেড়ে নেওয়া হয় বলে অভিযোগ। ৩০-৪০ জন মিলে তাঁকে মারধর করেন।
এদিকে রাজ্য নির্বাচন কমিশন (এসইসি) ভোটের সময় আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখতে অতিরিক্ত কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করেছে।
এই নির্বাচনে ক্ষমতাসীন তৃণমূল কংগ্রেস, ভারতীয় সেক্যুলার ফ্রন্ট এবং ভারতীয় জনতা পার্টি-বিজেপির মধ্যে স্থানীয় প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণ নিতে লড়াই দেখা যেতে পারে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, আগামী বছরের লোকসভা নির্বাচনের আগে টিএমসি ও বিজেপি উভয় দলের জন্য এই নির্বাচন একটি কঠিন পরীক্ষা।
উল্লেখ্য, ২০২৪ সালে ভারতে হবে লোকসভা নির্বাচন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই নির্বাচনের আগে পশ্চিমবঙ্গের পঞ্চায়েত নির্বাচনটি বেশ গুরুত্বপূর্ণ। কেন্দ্রের ক্ষমতায় থাকা বিজেপি লোকসভা নির্বাচনের আগে পশ্চিমবঙ্গে শক্ত অবস্থান তৈরির চেষ্টা করছে। ফলে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার পর থেকেই রাজ্যে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। এসব সহিংসতায় নির্বাচনের আগের ৩০ দিনে অন্তত ১৮ জন নিহত হয়েছে। এ সংখ্যা আরও বেড়েছে নির্বাচনের দিন।
বিএনএ/এমএফ