২০১১ সালে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক রবীন্দ্র পদক লাভ করেন। কবিতা, প্রবন্ধ, কলাম, রবীন্দ্র গবেষণা, নজরুল-জীবনানন্দ-বিষ্ণু দে সহ বাংলা ভাষার বহু লেখক কবির নিবিড় বিশ্লেষক তিনি। ’৫০-এর দশক থেকে শুরু করে এখনো পর্যন্ত নিরন্তর তাঁর কলম। বিপুল সৃজনশীল আর মননশীল কাজের যে বিশাল ভুবন তিনি গড়ে তুলেছেন তা জাতির এক অমূল্য সম্পদ। উপমহাদেশে রবীন্দ্রগবেষণা এবং রবীন্দ্র চর্চার প্রবাদ পুরুষ আহমদ রফিক। অসাম্প্রদায়িক ও মুক্ত চিন্তার পুরোধা, সজ্জন, প্রগতিশীল লেখক, ভাষাসংগ্রামী আহমদ রফিক একজন দক্ষ ও সফল সংগঠক।
দেশ বিদেশে রবীন্দ্র-নজরুল জয়ন্তী উদ্যাপন, সাহিত্য সম্মেলনের অনুষ্ঠান আয়োজন, রবীন্দ্র সাহিত্য সম্মেলনের সফল সমাপনের ক্ষেত্রে তিনি অনবদ্য ভূমিকা পালন করেন। ১৯৫৮ সালে প্রকাশিত হয় তাঁর প্রথম গবেষণাধর্মী প্রবন্ধের বই- ‘শিল্প, সংস্কৃতি, জীবন’। তাঁর উল্লেখযোগ্য গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে: প্রবন্ধ ও গবেষণা : আরেক কালান্তর (১৯৭৭), বুদ্ধিজীবীর সংস্কৃতি (১৯৮৬), রবীন্দ্রনাথের রাষ্ট্রচিন্তা ও বাংলাদেশ (১৯১১), রাজনীতির স্বদেশ বিদেশ (২০১১), কবিতা : নির্বাসিত নায়ক (১৯৬৬), বাউল মাটিতে মন (১৯৭০), গল্প: অনেক রঙ্গের আকাশ (১৯৩৭), সম্পাদনা: সম্প্রীতি ভাবনা, অনুবাদ : জীবন রহস্য ইত্যাদি।
একুশের আন্দোলনে তিনি ছিলেন খুবই সক্রিয়, ২০ ফেব্রুয়ারি রাত থেকে ২১ ফেব্রুয়ারি সারাদিন ছিল কর্ম তৎপরতায় পরিপূর্ণ। তিনি ৯৪ নবাবপুর রোডে ১৪৪ ধারার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদের সভা চলাকালে আন্দোলনকারীদের সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ করেন। ২০ ফেব্রুয়ারি রাতে তাঁরই কক্ষে শহীদুল্লাহ কায়সারের সাথে আলোচনার পর স্ব-উদ্যোগেই চলে যান ঢাকা হল ও ফজলুল হক বলে। সেখানে কথা হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র নেতাদের সাথে। এ ঐতিহাসিক মুহূর্তে আন্দোলন পরিকল্পনা, ১৪৪ ধারা ভাঙ্গার পক্ষে ছাত্রদের সম্পৃক্ত করা এবং সমন্বয় করার ব্যাপারে আহমদ রফিক ঐতিহাসিক ভূমিকা পালন করেন।
সূত্র: যারা অমর ভাষা সংগ্রামে, লেখক: এমআর মাহবুব
সম্পাদনায়: মনির ফয়সাল
পড়ুন আগের পর্ব: ভাষা সৈনিক(৪) আহমদ রফিক