বিএনএ,চট্টগ্রাম: চট্টগ্রামের আনোয়ারায় গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) সদস্য পরিচয়ে একজনকে তুলে নিয়ে টাকা আদায়ের অভিযোগে পুলিশের ছয় কনস্টেবলকে গ্রেফতারের পর কারাগারে পাঠানো হয়েছে। আনোয়ারা থানায় তাদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ১৭০, ৩৬৫, ৩৪ ধারায় অভিযোগ এনে মামলা করা হয়েছে।
রোববার (৭ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় চট্টগ্রামের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শিপলু কুমার দের আদালতে হাজিরের পর তাদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা পুলিশের পরিদর্শক (প্রসিকিউশন) মো. হুমায়ন কবির।
কারাগারে যাওয়া পুলিশ সদস্যরা হলেন- সিএমপি কমিশনার সালেহ মোহাম্মদ তানভীরের বডিগার্ড মোরশেদ বিল্লাহ, নগর পুলিশের উপ কমিশনার গোয়েন্দা (পশ্চিম ও বন্দর) মনজুর মোরশেদের বডিগার্ড মো. মাসুদ, দামপাড়া রিজার্ভ ফোর্স অফিসে কর্মরত শাকিল খান ও এস্কান্দর হোসেন, সিএমপির সহকারী কমিশনার কর্ণফুলী কার্যালয়ের কম্পিউটার অপারেটর মনিরুল ইসলাম ও ডিবিতে (উত্তর) কর্মরত আবদুল নবী। তারা সকলেই কনস্টেবল পদে কর্মরত।
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) কমিশনার সালেহ মোহাম্মদ তানভীর বলেন, আনোয়ারায় এক ব্যক্তি অভিযোগ করেছেন পুলিশ পরিচয়ে তাদের কাছ থেকে বেশ কয়েকজন চাঁদা নিয়েছিল। তিনি আনোয়ারা থানায় এরকম একটি অভিযোগ করলে আনোয়ারা থানা পুলিশের তদন্তে পুলিশ লাইন্সের ৬ সদস্যের নাম উঠে আসে। বিষয়টি আমরাও তদন্ত করে প্রাথমিক সত্যতা পাই। পরে আনোয়ারা থানা পুলিশের কাছে তাদেরকে হস্তান্তর করি।
তিনি বলেন, আনোয়ারা থানায় দায়ের হওয়া মামলায় আদালতের মাধ্যমে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে। পাশাপাশি প্রত্যেককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থাও নেয়া হচ্ছে। অপরাধী যেই হোক, আকাম করে পার পাবে না।
ঘটনার শিকার ব্যক্তি মো. আব্দুল মান্নান চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার পূর্ব বৈরাগ গ্রামের বাসিন্দা। ডিবি পরিচয়ে ঘর থেকে তুলে নিয়ে টাকা আদায়ের অভিযোগে রোববার তিনি আনোয়ারা থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, গত ৩ ফেব্রুয়ারি রাত ২টার দিকে চারটি মোটর সাইকেলে করে আটজন লোক তাদের বাড়িতে যায়। ডিবি পরিচয়ে তাকে একটি মোটরসাইকেলে তুলে পটিয়া উপজেলার ভেল্লাপাড়া ব্রিজের পূর্বপাশে কৈয়গ্রাম রাস্তার মাথায় একটি চা দোকানে নিয়ে যায়।
সেখানে গিয়ে আব্দুল মান্নানকে তারা জানায়, মান্নানের বিরুদ্ধে ডিবিতে অভিযোগ আছে। এর থেকে অব্যাহতি পেতে হলে তাকে ১০ লাখ টাকা দিতে হবে। রাতভর ‘দর কষাকষির’ পর ভোর ৫টার দিকে আত্মীয়ের মাধ্যমে এক লাখ ৮০ হাজার ৫০০ টাকা এনে তাদের হাতে দেন মান্নান। এরপর তারা মান্নানকে সেখানে রেখে চলে যায়।
পুলিশকে মান্নান জানান, আটজনের মধ্যে একজনের গায়ে ‘ডিবি’ লেখা জ্যাকেট ছিল। পরস্পরের সঙ্গে আলোচনায় একজনকে তিনি মোরশেদ নামে ডাকতে শুনেছেন।
অভিযুক্ত ৬ পুলিশ সদস্যকে গতকাল রোববার চট্টগ্রাম নগরীর এ কে খান এলাকা থেকে আনোয়ারা থানা পুলিশ ও গোয়েন্দা পুলিশের যৌথ দল গ্রেপ্তার করে। এরপর সন্ধ্যায় তাদের আদালতে হাজির করা হলে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শিপলু কুমার দে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
বিএনএনিউজ/মনির