বিএনএ, ঢাকা: ইন্টার-পার্লামেন্টারি ইউনিয়ন (আইপিও) এবং পার্লামেন্টারিয়ানস ফর গ্লোবাল অ্যাকশন (পিজিএ) উভয়ই সাবেক সংসদ সদস্য এ.বি.এম. ফজলে করিম চৌধুরীর মুক্তি এবং তার ন্যায় বিচার প্রাপ্তি নিশ্চিত করার আহবান জানিয়েছেন। একই আহবান জানিয়েছেন যুক্তরাজ্যের ফরেন কমনওয়েলথ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (এফসিডি) পৃথক পৃথক বিবৃতিতে বাংলাদেশের অর্ন্তবর্তীকালীন সরকারের কাছে এই আহ্বান জানান।
গত ৬ জানুয়ারি পার্লামেন্টারিয়ানস ফর গ্লোবাল অ্যাকশন (পিজিএ) তাদের ওয়েব সাইটে Parliamentary Rapid Response Team raises alarm on violations of Human Rights of Members of Parliament in Bangladesh শিরোনামে প্রকাশিত বিবৃতিতে আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য এবিএম ফজলে করিম চৌধুরীর মুক্তির দাবি জানান। একই বিবৃতিতে সাবেক সংসদ সদস্য ডা. দীপু মনি, আসাদুজ্জামান নূর, মুহাম্মদ ফারুক খান এবং চট্টগ্রামের ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের মুক্তির দাবি জানানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, এসব আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক সংসদ সদস্য সাবেক প্রধানমন্ত্রী হাসিনার পদত্যাগ এবং সংসদ ভেঙে দেওয়ার পরপরই কারারুদ্ধ হন। সরকারি প্রতিনিধি এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবশ্যই তাদের মানবাধিকার ও অধিকারকে একটি সুষ্ঠু বিচার এবং যথাযথ প্রক্রিয়ার প্রতি সম্মান জানাতে হবে।
পার্লামেন্টারিয়ানস ফর গ্লোবাল অ্যাকশন (পিজিএ) এর বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশের রেলপথ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সাবেক চেয়ারম্যান এবং জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য ফজলে করিম চৌধুরী সংসদ সদস্যদের মানবাধিকার বিষয়ক ইন্টার-পার্লামেন্টারি ইউনিয়ন (আইপিইউ) কমিটির সদস্য ও সভাপতি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।
গত বছরের ১২ সেপ্টেম্বর, এবিএম ফজলে করিম চৌধুরীকে হত্যা, চাঁদাবাজি এবং ঘুষের অভিযোগে অভিযুক্ত এবং গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। গ্রেপ্তারের পরিস্থিতি এবং মামলার বিবরণের পরিপ্রেক্ষিতে, অভিযোগগুলি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং অপ্রমাণিত বলে মনে হচ্ছে। বিবৃতিতে অভিযোগ করা হয়, কঠোর পরিস্থিতিতে আটকের পর ফজলে করিম চৌধুরীকে তার হৃদরোগ, ডায়াবেটিস এবং কিডনির সমস্যার জন্য চিকিৎসা অস্বীকার করেছে। এছাড়া তার ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে অপমানজনক অপপ্রচার মিডিয়া সম্প্রচারের কারণে তার মানসিক স্বাস্থ্যসহ তার স্বাস্থ্যের গুরুতর অবনতি হয়েছে।
বিবৃতিতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আমলে মানবাধিকার পরিস্থিতির অবনতির কথা উল্লেখ করে বলা হয়, এবিএম ফজলে করিম চৌধুরীর আদালতে হাজিরা দেওয়ার সময়, সংগঠিত হিংস্র জনতা তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার আহ্বান জানায় এবং তাকে শারীরিকভাবে ক্ষতি করার চেষ্টা করে। উদ্বেগ রয়েছে যে ভবিষ্যতে আদালতে উপস্থিতির ফলে একই রকম হয়রানি হবে৷ প্রসিকিউশন কৌশলগতভাবে অনেক এখতিয়ারের বাইরে মামলা দায়ের করেছে। ক্রমাগত আদালতে হাজিরা তার শারীরিক ও মানসিক অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। তার প্রতিরক্ষা দিতে কর্তৃপক্ষ ব্যর্থ হয়েছে। হয়রানি করার জন্য নতুন নতুন মামলায় যুক্ত করছে। কর্তৃপক্ষ বারবার তার যথাযথ প্রক্রিয়া এবং একটি ন্যায্য বিচারের অধিকার লঙ্ঘন করেছে।
প্রসঙ্গত, ইন্টার-পার্লামেন্টারি ইউনিয়ন (আইপিও) জাতীয় সংসদগুলোর বৃহত্তম আন্তর্জাতিক সংস্থা, যার ১৮০টি পূর্ণ সদস্য রাষ্ট্র এবং ১৪টি সহযোগী সদস্য রাষ্ট্র রয়েছে। এরমধ্যে জাতিসংঘ ইউরোপীয় সংসদ এবং আরব সংসদের মতো প্রতিষ্ঠানও অন্তর্ভুক্ত। IPU-এর সদর দপ্তর সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় অবস্থিত।
পার্লামেন্টারিয়ানস ফর গ্লোবাল অ্যাকশন (পিজিএ) প্রায় ১৩৯টি দেশের ১,২০০ জন সংসদ সদস্যের একটি আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্ক। এর সদর দপ্তর যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন, ডি.সি.-তে অবস্থিত। ফরেন কমনওয়েলথ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অফিস (এফসিডিও) যুক্তরাজ্য সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অংশ। এর সদর দপ্তর লন্ডন।
বিএনএনিউজ/ বিএম/এইচমুন্নী