বিএনএ, ময়মনসিংহ: ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে আইনশৃংখলা বাহিনীর বন্দুক নিয়ে ভোট কেন্দ্রের ভিতর শুটিং চর্চা করেছেন টুটুল আনোয়ার নামে এক পোলিং এজেন্ট। রোববার (৭ জানুয়ারি) উপজেলার উস্থি ইউনিয়নের বড়বাড়ী উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে এই ঘটনা ঘটে। তিনি ওই কেন্দ্রের পোলিং এজেন্ট ছিলেন।
টুটুল আনোয়ার গফরগাও উপজেলার মুক্তিযোদ্ধা মোড় পশ্চিমপাড়ার ওসমানের ছেলে। তিনি চরআলগী আকন্দপাড়া কমিউনিটি ক্লিনিকে চাকুরী করে। পৌরসভা রাঘাইচটি এলাকায় বসবাস করেন।
বড়বাড়ী উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে প্রিজাইডিং অফিসার নাছির উদ্দিন বলেন, আমার চোখের সামনে এমন কোন ঘটনা ঘটেনি। তবে, আপনার কাছে শুনে পোলিং অফিসারদের জিজ্ঞাসা করেছিলাম। কিন্তু কেউ বিষয়টি স্বীকার করেনি। আমার চাকরির মাত্র চার মাস আছে। আমার কর্মজীবনে কখনো এমন ঘটনা ঘটেনি। সুনামের সাথে চাকরি জীবন শেষ করতে চাই বলেও জানান তিনি।
গফরগাঁও উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা দেবাশীষ রাজবংশী বলেন, আপনি আমাকে বিষয়টি জানানোর পর আমি টুটুল আনোয়ারকে ডেকে এনেছিলাম। ছবিটি সে তুলেনি, অন্য কেউ তার বন্দুক তাক করে ধরে রাখার ছবি তুলে ফেসবুকে পোষ্ট করেছে। সে নিজে তার ফেসবুক আইডিতে পোষ্ট করেনি। বিএনপি মন-মানসিকতার কেউ ছবিটি তুলেছিল এবং ফেসবুকে পোষ্ট করেছে বলে সে আমাকে জানিয়েছে। অস্ত্রটি কার ছিল, এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, অস্ত্রটি কার ছিল, সে বিষয়ে কিছু জানায়নি।
টুটুল আনোয়ারের বিরুদ্ধে আপনাদের ব্যবস্থা নেয়ার কিছু আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, নির্বাচনের ডিউটির সময় সে নির্বাচন কমিশনের অধিনে ছিল। তাই তার বিরুদ্ধে আমার ব্যবস্থা নেয়ার এখতিয়ার নাই। আমার অধিনে কাজ করার সময় কোন অন্যায় করলে আমি ব্যবস্থা নিতে পারতাম।
ছাত্রলীগ নেতা পরিচয়ে একজন ফোন করে বলেন, অস্ত্র হাতে যে ছবিটি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে, সে আমার মামা হয়। সে সকালে কেন্দ্রে গিয়ে তার পরিচিত একজন আনসার সদস্যের অস্ত্র নিয়ে ছবিটি তুলে ফেসবুকে পোষ্ট করেন। না বুজে সে এটা করেছে। আপনি বিষয়টি বড় করছেন। এমনটা করা মনে হয় উচিত নয়।
টুটুলকে আমার সাথে কথা বলতে বললে তিনি বলেন, আমি বলছি এতে কি আপনার হয়নি। কাজটা তো আপনি করেননি, কাজটি করেছে টুটুল। তার সাথে কথা বলা জরুরি। যেহেতু, আপনি কাজটি করেননি। তাই, আপনার রেফারেন্সে নিউজ করাটা ঠিক হবে না। আমি বলছি, আপনার হয় নাই। আমার রেফারেন্সে আপনি নিউজ করেন।
এর আগে ছাত্রলীগ নেতা পরিচয় দেয়া ব্যক্তি প্রতিবেদকের নাম, ঠিকানা জানতে চেয়ে দেখা করার কথা বলেন। পরে তার পরিচয় জানতে একাধিকবার ফোন করলেও তা বন্ধ দেখায়।
এবিষয়ে টুটুল আনোয়ারকে ফোন দিয়ে সাংবাদিক পরিচয় দিতেই লাইন কেটে দেন। পরে একাধিকবার ফোন করলেও সেটি বন্ধ দেখায়।
এ বিষয়ে জেলা পুলিশ সুপার মাসুম আহমেদ ভুঁঞা বলেন, বিষয়টি আপনার কাছেই শুনেছি। তদন্ত করে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা দিদারে আলম মোহাম্মদ মাকসুদ চৌধুরী বলেন, এটা আমার জানা নেই। বিষয়টি আইনশৃঙ্খলাকারী বাহিনী দেখবে।
বিএনএ/ হামিমুর, এমএফ /এইচ মুন্নী