বিএনএ: গণমাধ্যমকর্মী (চাকরির শর্তাবলি) বিল-২০২২ পরীক্ষা করে জাতীয় সংসদে প্রতিবেদন জমা দিতে তৃতীয় দফায় আরও ৯০ দিন সময় নিয়েছে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি।
নির্দিষ্ট সময়ে বিলটি পরীক্ষা করে প্রতিবেদন দিতে না পারায় রোববার (৮ জানুয়ারি) সংসদে আরও ৯০ দিন সময় চান সংসদীয় কমিটির সভাপতি হাসানুল হক ইনু। স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী প্রস্তাবটি ভোটে দিলে সংসদ তাতে অনুমোদন দেয়।
গত বছরের ২৮ মার্চ এই বিল সংসদে তোলেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। বিলটি ৬০ দিনের মধ্যে পরীক্ষা করে সংসদে প্রতিবেদন দেয়ার জন্য সংসদীয় কমিটিতে পাঠানো হয়।
নির্দিষ্ট সময়ে প্রতিবেদন দিতে না পেরে গতবছরের ৬ জুন ৬০ দিন বাড়তি সময় নিয়েছিল সংসদীয় কমিটি। এরপর আগস্টে আবার দ্বিতীয় দফায় ৬০ দিন সময় বাড়িয়ে নেয় সংসদীয় কমিটি। রোববার আবারও বিলটি পরীক্ষা করে প্রতিবেদন দিতে সময় নিল সংসদীয় কমিটি। বিলটি নিয়ে সংসদীয় কমিটি এখনও কোনো বৈঠক করেনি।
প্রস্তাবিত আইনটি নিয়ে সাংবাদিক, সম্পাদক ও মালিকপক্ষের মধ্যে অসন্তোষ রয়েছে। গত মার্চে আইনের খসড়া সংসদে তোলার পর থেকে সাংবাদিকদের বিভিন্ন সংগঠন ও সংবাদপত্রের মালিকদের সংগঠন আইনের বেশ কিছু ধারা নিয়ে আপত্তি জানিয়ে আসছে।
প্রস্তাবিত আইনে গণমাধ্যমকর্মী ও মালিকপক্ষের মধ্যে সৃষ্ট বিরোধ নিষ্পত্তির লক্ষ্যে গণমাধ্যম আদালত স্থাপন করার কথা বলা হয়েছে।
সম্পাদক পরিষদ মনে করে, প্রস্তাবিত ‘গণমাধ্যমকর্মী (চাকরির শর্তাবলি) আইন, ২০২২’ পাস হলে স্বাধীন সাংবাদিকতা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে বাধাগ্রস্ত করবে এবং সংবাদপত্রের বিকাশ সংকুচিত হবে।
গত এপ্রিলে এক বিবৃতিতে সম্পাদক পরিষদ বলেছিল, প্রস্তাবিত এই আইনের ৫৪টি ধারার মধ্যে ৩৭টি ধারাই সাংবাদিকবান্ধব নয়। সার্বিকভাবে এই আইন গণমাধ্যম ও গণমাধ্যমকর্মীদের স্বার্থের বিরুদ্ধে। এ রকম আইন চূড়ান্ত করার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে সিদ্ধান্ত নেয়া প্রয়োজন।
আর প্রস্তাবিত গণমাধ্যমকর্মী আইন প্রচলিত বিচারব্যবস্থা, শিল্প আইন ও বাংলাদেশ শ্রম আইনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক বলে মনে করে দৈনিক সংবাদপত্রের মালিকদের সংগঠন নিউজপেপার ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (নোয়াব)। সংগঠনটি বলেছে, এই আইন পাস হলে স্বাধীন সাংবাদিকতা এবং মতপ্রকাশের স্বাধীনতা বাধাগ্রস্তসহ সংবাদপত্রের বিকাশ সংকুচিত হবে। সাংবাদিকদের ইউনিয়নগুলোও বলছে, এই বিল পাস হলে গণমাধ্যমকর্মীদের অধিকার সংকুচিত হবে।
আগে গণমাধ্যম কর্মীরা চলতেন ‘দ্য নিউজপেপার এমপ্লয়িজ (চাকরির শর্তাবলী) আইন- ১৯৭৪’ এর আওতায়। এর সঙ্গে শ্রম আইনের কিছু বিষয় সাংঘর্ষিক হচ্ছিল। পরে সাংবাদিকদেরকে শ্রম আইনের আওতায় নিয়ে যাওয়া হয় এবং তাদের শ্রমিক হিসেবে সংজ্ঞায়িত করা হয়। এই বিল পাস হলে গণমাধ্যম কর্মীরা আর শ্রমিক থাকবেন না। তাদের ‘গণমাধ্যমকর্মী’ হিসেবে অভিহিত করা হবে।
বিএনএ/এ আর