বিএনএ, কুবি: কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহেরের বিরুদ্ধে কর্মকর্তা-কর্মচারীর কুরুচিপূর্ণ ও মিথ্যা বক্তব্যের বিচারের জন্য গঠিত দুইটি তদন্ত কমিটির প্রতি অনাস্থা জ্ঞাপন করে তদন্ত কমিটিকে প্রত্যাখ্যান করেছে শিক্ষক সমিতি।
বুধবার (৭ সেপ্টেম্বর) শিক্ষক সমিতির সভাপতি ড. দুলাল চন্দ্র নন্দী এবং সাধারণ সম্পাদক ড. মো. মোকাদ্দেস-উল-ইসলাম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তি থেকে এ তথ্য জানা যায়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির চিঠির ভিত্তিতে গতকাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। কিন্তু অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের ও পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের সাধারণ শিক্ষার্থীবৃন্দের চিঠির ভিত্তিতে আরোও একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে আমরা জানতে পেরেছি। একই বিষয়ে দুইটি তদন্ত কমিটি এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে এতোজন শিক্ষক থাকতে দুইটি তদন্ত কমিটিতে দুইজন শিক্ষকের পুনরাবৃত্তি ঘটানো হয়েছে, যা অপ্রয়োজনীয় ও রহস্যজনক। নিরপেক্ষ ও বিতর্কমুক্ত তদন্ত কমিটি গঠন করার লক্ষ্যে শিক্ষক সমিতির নিকট থেকে উপাচার্য মহোদয় নাম নিয়ে মাত্র একজনকে অন্তর্ভুক্ত করেছেন। যা আমাদের আরো সন্দিহান করে তুলেছে। এরকম একপেশে কমিটির তদন্তে স্বচ্ছতার অভাব ঘটবে বলে আমরা আস্থাহীনতায় ভুগছি এবং আমরা এই কমিটিকে দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করছি।
এদিকে একই ঘটনায় পৃথক দুইটি তদন্ত কমিটি ও একাধিক ব্যক্তিকে উভয় কমিটিতে রাখায় কমিটি প্রত্যাখ্যান করেছেন পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের।বুধবার (৭ সেপ্টেম্বর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে তিনি বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
প্রত্যাখ্যানের বিষয়ে অধ্যাপক ড. আবু তাহের বলেন, আমি এই কমিটির প্রতি অনাস্থা জানিয়ে উপাচার্য বরাবর চিঠি দিতে গেলে আজকে ওনি ছিলো না। পিএস কে উপাচার্য রিসিভ করতে নিষেধ করছে তাই রিসিভ করে নাই। যে কোন দরখাস্ত কার্যকর করুক বা না করুক এটা রিসিভ করা উচিত। এই নিয়মটুকু পর্যন্ত মেইনটেইন করে নাই উপাচার্য ও উপাচার্য দপ্তর।
তবে উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এফ এম আবদুল মঈন বলেন, একই বিষয়ে দুইটি তদন্ত কমিটি কেন এবং দুইজন নির্দিষ্ট শিক্ষককে দুই কমিটিতে রাখার বিষয়ে জানতে চাইলে ভিসি বলেন, দুই পক্ষের অভিযোগের ভিত্তিতে দুইটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। একজন সম্মানিত শিক্ষকের মানহানিকর বিষয়টি বিবেচনা করে এবং একই সাথে অন্য একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবারের সদস্যের হুমকির বিষয় গুলো আমলে নিয়ে নিরপেক্ষ তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন তার ক্ষমতা বলে তদন্ত কমিটি গঠন করতে পারেন, তবে শিক্ষক সমিতি তদন্ত কমিটির পছন্দের শিক্ষক রাখার বিষয়ে দুইজন শিক্ষকের নাম প্রস্তাব করার ভিত্তিতে একজন শিক্ষককে তদন্ত কমিটিতে রাখা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের ভিত্তিতে বেশ কয়েকদিন আগেই তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল কিন্তু বিষয়টি সমাধান হয়ে যাবে বিবেচনায় এটিকে প্রকাশ করা হয়নি।
প্রসঙ্গত, গত ২৩ আগস্ট কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য পরিষদের ব্যানারে মানববন্ধন করে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের একাংশ। এসময় ব্যানারে সাবেক রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহেরেকে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের জামাত-শিবিরের প্রধান পৃষ্টপোষক, জামাত-শিবিরে ও বিএনপির নিয়োগ দাতা, সোলার ক্রয় দুর্নীতির মূল হোতা, বিভিন্ন অভিযোগে অভিযুক্ত দুর্নীতিবাজ বলে অবহিত করেন। যা নিয়ে আন্দোলন করে বিভাগের শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের দাবী, দুই দফা আল্টিমেটামের পরেও প্রশাসন কোন ধরনের ব্যবস্থা না নেওয়ায় গতকাল প্রশাসনিক ভবনে তালা দেন তারা।
বিএনএ/ হাবিবুর রহমান, ওজি