বিএনএ, ডেস্ক : নির্বাচনের দিনকে ঈদের উৎসবের মতো করতে চান বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা। তিনি বলেন, ‘এবারের ভোটের আনন্দ থাকবে সবার মধ্যে। আপনারা সবাই বাচ্চাকাচ্চাদের নিয়ে ভোটকেন্দ্রে যাবেন।’
নির্বাচনের তারিখ ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছে, বিএনপি নাগরিকঐক্য, এবি পার্টি, জোনায়েদ সাকির দল গণসংহতি আন্দোলন। বিশেষ করে বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে আনন্দ-উল্লাস বয়ে যাচ্ছে।
অপর দিকে জামায়াত ইসলামী, এনসিপি, গণঅধিকার, চরমোনাই পীরের দল ইসলামী আন্দোলন ও হেফাজতে ইসলামে নেমে এসেছে বিষাদের ছায়া।

জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের প্রধান আকাঙ্ক্ষা ছিল রাষ্ট্র সংস্কার। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনে ১৯টি বিষয়ে ঐকমত্যের মাধ্যমে জুলাই সনদ প্রণয়নের সিদ্ধান্ত হয়েছে। অথচ প্রধান উপদেষ্টা কর্তৃক পঠিত জুলাই ঘোষণাপত্রে তার উল্লেখ নেই। একই সঙ্গে জুলাই সনদের ভিত্তিতে আগামী জাতীয় নির্বাচন হতে হবে বলে জানিয়েছে দলটি। এছাড়া পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি নিয়ে আন্দোলনে যাবেন বলে জানান জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির।
জাতীয় নাগরিক পার্টির সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেছেন, টেলিভিশন ভাষণে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা যে ঘোষণা দিয়েছেন, এতে আমাদের আপত্তি নেই। তবে এর আগে আমরা গণহত্যার দৃশ্যমান বিচার এবং সংস্কার চাই। একইসঙ্গে এর মধ্যে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে হবে।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মুফতি সৈয়দ রেজাউল করীম বলেন ‘আমাদের নির্বাচনে যাওয়া কঠিন হবে, বর্তমান পরিস্থিতিতে প্রশাসন যথাযথ ফাংশন করছে না এবং বর্তমান সরকার প্রশাসনকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না। সেখানে এই অবস্থায় নির্বাচন করতে গেলে প্রার্থীদের নিরাপত্তার ঝুঁকি থেকে যায়, এই ঝুঁকিতে কেন নির্বাচনে যাব? পিআর পদ্ধতির মাধ্যমে জাতীয় সরকার দেখতে চান বলেও জানান তিনি।
এদিকে এক বিবৃতিতে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মামুনুল হক বলেছেন, প্রধান উপদেষ্টার পাঠ করা জুলাই ঘোষণাপত্র, ঘোষণার আয়োজন এবং একটি মাত্র দলের সঙ্গে আলাপের ভিত্তিতে জাতীয় নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা— সব কিছুই প্রমাণ করে, ইসলামপন্থিদের মতামত, আত্মত্যাগ ও সাংগঠনিক ভূমিকাকে অবজ্ঞা করা হয়েছে। এটি শুধু দুঃখজনক নয়, বরং গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ, ঐতিহাসিক বাস্তবতা এবং জনগণের আকাঙ্ক্ষার প্রতি চরম অবহেলার শামিল।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, নির্বাচনের পদ্ধতি নিয়েই নতুন বিতর্কে পাল্টাপাল্টি অবস্থান নিয়েছে রাজনৈতিক দলগুলো। সরকার সংবিধানে বিদ্যমান আসন ভিত্তিক জয়-পরাজয় পদ্ধতিতে সংসদ নির্বাচন করতে আগ্রহী।
কিন্তু জামায়াত ইসলামী, এনসিপি, হেফাজতে ইসলাম, খেলাফত মজলিস, গণ অধিকার পরিষদসহ ছোট দলগুলো সংখ্যানুপাতিক পি-আর পদ্ধতিতে নির্বাচন চায়। এজন্য তারা আন্দোলনে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছে। এই অবস্থায় ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন হবে কি না–– এ নিয়ে নতুন করে সন্দেহ দেখা দিয়েছে।
বিএনএ/ সৈয়দ সাকিব