বিএনএ, ববি : বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় (ববি) অবহেলায় নষ্ট করছে কোটি টাকার বাস। ববি প্রশাসনিক ভবন-২ ব্যাংকের ঠিক সামনে গেলেই দেখা মিলবে অবহেলায় পড়ে আছে নষ্ট দু’টি গাড়ি। একটি ধানসিঁড়ি বাস এবং পাজারোর একটি মাইক্রোবাস। দুই বছরের অধিক সময় যাবৎ নষ্ট হয়ে পড়ে থাকলেও মেরামতের কোন উদ্যোগ নিতে দেখা যায়নি ববি প্রশাসনের। প্রশাসনের বক্তব্য গাড়ি দুটির বড় যন্ত্রাংশ নষ্ট হয়ে যাওয়ায় অকেজো অবস্থায় পড়ে আছে। এক সময় শিক্ষকদের পরিবহনের জন্য ব্যবহৃত ধানসিঁড়ি এসি বাসটি ছিলো বিশ্ববিদ্যালয়ের বিলাসবহুল বাসগুলোর মধ্যে অন্যতম যা এখন দীর্ঘদিন যাবৎ খোঁলা আকাশের নিচে অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে আছে।
পরিবহন পুল সূত্রে জানা যায়, ধানসিঁড়ি বাসটির বড় একটা যন্ত্রাংশ নষ্ট হয়ে যাওয়ায় অকেজো অবস্থায় পড়ে আছে বাসটি। ধানসিঁড়ি বাসের পাশেই অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে আছে প্রায় কোটি মূল্যের একটি পাজারো গাড়ীও। দীর্ঘদিন ধরে অব্যবহৃত এই গাড়িগুলো খোলা আকাশের নিচে রোদে পুড়ে বৃষ্টিতে ভিজছে। গাড়িগুলোকে যথাযথভাবে রক্ষণাবেক্ষণ না করার কারণে বডি, ইঞ্জিন সহ প্রয়োজনীয় যন্ত্রাংশ নষ্ট হচ্ছে দিন দিন। গাড়িগুলোর যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থ-সম্পদ অপচয়ের পাশাপাশি শিক্ষক-কর্মকর্তা ও শিক্ষার্থীদের ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। গাড়ীগুলো মেরামত না করে ফেলে রাখাকে বিশ্ববিদ্যালয় এবং সরকারি কোষাগারের অর্থের অপচয় বলেও দাবি শিক্ষার্থীদের।
এ বিষয়ে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের মৃত্তিকা ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবষের শিক্ষার্থী মাহমুদুল হাসান তমাল বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয় প্রসাশন মাঝে মধ্যে নতুন বাস কিনে শিক্ষার্থীদের আইওয়াশ করলেও পুরাতন বাসগুলো মেরামতে কোনো কার্যকর ভূমিকা গ্রহণ করে না ফলে শিক্ষার্থীদের পরিবহন সমস্যার কোনো সমাধান হয় না।”
একই বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আরিফুল ইসলাম আবীর বলেন, “কয়েক হাজার শিক্ষার্থীদের জন্য অতি অল্প সংখ্যক বাস থাকে যা যথেষ্ট নয়; অনেক শিক্ষার্থীরা দাঁড়িয়ে এবং ঝুলে ঝুলে যায়। আশে পাশের কোন জেলায় বাস সার্ভিস নেই। এরকম অবস্থায় এত মূল্যের বাস এবং গাড়ি ফেলে রাখা আসলেই ঠিক না। ধানসিড়ি এই গাড়িটা যদি সম্ভব হয় মেরামত করে আশে পাশের রুটেও দেয়া যায়। শুধু তাই না- বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় এর বাস সার্ভিস এ প্রচুর সমস্যা রয়েছে- ড্রাইভারদের বাজে ব্যবহার,বাসে ফ্যান নেই, বি আর টি সি বাস এর নেই ফিটনেস।এসকল সমস্যা দ্রুত সমাধান করা প্রয়োজন।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন পুলের ম্যানেজার মার্কেটিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোঃ মেহেদী হাসান বলেন, “ধানসিঁড়ি বাসটির একটি বড় যন্ত্রাংশ নষ্ট হয়ে যাওয়ায় বাসটি মেরামতের প্রক্রিয়াধীন আছে, আমরা ইতোমধ্যে চিঠি দিয়েছি কিন্তু ঢাকার বাইরে হওয়ায় একটি সংস্থা মেরামত করতে পারবেনা বলে প্জানিয়েছে। আমরা যোগাযোগ করছি, মেরামতের জন্য ইউজিসির অনুমোদন এর কিছু বিষয় আছে, অনুমোদন পেলে যতদ্রুত সম্ভব বাসটির যন্ত্রাংশ পরিবর্তন করা হবে।”
পাজারো গাড়ীর বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন- “এই গাড়ীটি আমাদের পরিবহন পুলের কোনো গাড়ী নয়, গাড়ীটি প্রকল্পের গাড়ী। প্রকল্পের গাড়ী হওয়ায় বর্তমানে গাড়ীটি অব্যবহৃত অবস্থায় আছে।”
বিএনএনিউজ/ রবিউল ইসলাম, বিএম