আইয়ুব সাহেবের মনে উচ্চাকাঙ্ক্ষার সৃষ্টি পূর্বেই হয়েছিল। তার প্রমাণ আইয়ুব খানের আত্মজীবনী ‘ফ্রেন্ডস নট মাস্টার্স’।
আজ প্রকাশিত হলো পর্ব : ৩৩৬
মোহাম্মদ আলী তাঁহার সহকর্মীদের ত্যাগ করে আবার গোলাম মোহাম্মদের কাছে আত্মসমর্পণ করে কেয়ারটেকার সরকার গঠন করেন। এবারে তিনি পূর্বের চেয়ে বেশি গোলাম মোহাম্মদ ও চৌধুরী মোহাম্মদ আলীর হাতের মুঠোয় চলে আসলেন। যদিও তিনি প্রধানমন্ত্রী হলেন, কিন্তু সত্যিকারের ক্ষমতার মালিক ছিলেন চৌধুরী মোহাম্মদ আলী। আইয়ুব খানকে প্রধান সেনাপতি ও ইস্কান্দার মির্জাকে মন্ত্রী করে দেশটাকে আমলাদের হাতে তুলে দেওয়া হল।
আইয়ুব সাহেবের মনে উচ্চাকাঙ্ক্ষার সৃষ্টি পূর্বেই হয়েছিল। তার প্রমাণ আইয়ুব খানের আত্মজীবনী ‘ফ্রেন্ডস নট মাস্টার্স’। তিনি এ বইতে স্বীকার করেছেন যে, ১৯৫৪ সালের ৪ঠা অক্টোবর লন্ডনের হোটেলে পাকিস্তানের শাসনতন্ত্র সম্বন্ধে তাঁর মতামত লিখেছেন। কেন তিনি শাসনতন্ত্র সম্বন্ধে লিখতে গেলেন? তিনি পাকিস্তান আর্মির প্রধান সেনাপতি, তিনি শক্রর আক্রমণের হাত থেকে পাকিস্তানকে রক্ষা করবেন। সেইভাবে পাকিস্তানের আর্মড ফোর্সকে গড়ে তোলাই হল তাঁর কাজ।
গোলাম মোহাম্মদ আর চৌধুরী মোহাম্মদ আলী যে চক্রান্তের খেলা শুরু করেছিলেন, তাঁরা সাহস কোথা থেকে পেয়েছিলেন? নিশ্চয়ই জেনারেল আইয়ুব খান সকল কিছু বুঝেও চুপ করেছিলেন। রাজনীতিবিদরা নিজেদের মধ্যে আত্মকলহ করে হেয়প্রতিপন্ন হয় এবং পাকিস্তানের জনগণ তাদের উপর থেকে আস্থা হারাতে বাধ্য হয়। এ অবস্থায় নেতাহীন ও নীতিহীন মুসলিম লীগ ক্ষমতায় থাকার জন্য সুযোগ করে নিতে চেষ্টা করতে লাগল। যখন গণপরিষদ ভেঙে দিয়ে নতুন মন্ত্রিসভা গঠন করা হল তখনই দেখা গেল তথাকথিত লীগ নেতারা অনেকেই আবার মন্ত্রীর গদি অলঙ্কৃত করল। আর মুসলিম লীগের নেতা মোহাম্মদ আলী আবার মন্ত্রিত্ব পেয়ে দলের ও দেশের কথা ভুলে গেলেন।
পরিকল্পনা : ইয়াসীন হীরা
গ্রন্থনা : সৈয়দ গোলাম নবী
সম্পাদনায় : মনির ফয়সাল
সূত্র: বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অসমাপ্ত আত্মজীবনী, প্রকাশনা- দি ইউনিভার্সিটি প্রেস লিমিটেড, পৃষ্টা নম্বর:২৭৮-২৭৯।
আগের পর্ব পড়ুন : বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী পর্ব : ৩৩৫