বিএনএ, স্পোর্টস ডেস্ক : দুই ম্যাচ হাতে রেখেই অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে সিরিজ জিতল বাংলাদেশ। পাঁচ ম্যাচের টি টোয়েন্টি সিরিজের তৃতীয় ম্যাচেও টানা জয় পেলো টাইগাররা। অজিদের বিরুদ্ধে যেকোন ফরমেটে এটাই প্রথম সিরিজ জয় বাংলাদেশের।
শুক্রবার (৬ আগস্ট) শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বৃষ্টি বিলম্বিত ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ১০ রানের জয় পায় বাংলাদেশ।
টানা পাঁচ ম্যাচে টস হারার পর এ ম্যাচে টস জিতেন বাংলাদেশের অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ। টস জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন। স্পিন আক্রমণ দিয়ে শুরু হয় সফরকারীদের বোলিং। অ্যাশটন টার্নার প্রথম ওভারে দুই রান দেন। দ্বিতীয় ওভার করতে এসে জশ হ্যাজলউড অস্ট্রেলিয়াকে সফলতা এনে দেন। নিজের ওভারের শেষ বলে আউট করেন নাইমকে। মোহাম্মদ নাইম ব্যাক অফ আ লেংথ ডেলিভারিতে ডিফেন্ড করতে গিয়ে কট-বিহাইন্ড হন। তৃতীয় ওভারে অ্যাডাম জাম্পাকে বল করতে দেন অসি অধিনায়ক। প্রথম বলেই সৌম্যকে সাজঘরের পথ দেখিয়ে দেন জাম্পা। ১১ বল খেলে দুই রান নেওয়া সৌম্য এলবিডব্লিউয়ের শিকার হন। দলীয় ৩ রানে দুই ওপেনারকে হারিয়ে বিপদে পড়ে বাংলাদেশ।
সাকিব আল হাসান ও মাহমুদউল্লাহ দলের রান সংহত করার চেষ্টা করেন। তবে দলীয় ৪৭ রানের মাথায় এডাম জাম্পাকে তুলে মারতে গিয়ে লং অফে ধরা পড়ে বিদায় নেন ১৭ বলে ২৬ করা সাকিব। ভেঙ্গে যায় তাদের ৪৪ রানের জুটি। মাহমুদউল্লাহ এবার জুটি বাঁধেন আফিফের সঙ্গে।
আফিফ দেখে শুনে রানের চাকা ঘুরিয়ে সঙ্গ দিচ্ছিরেন মাহমুদউল্লাহকে। তবে ভাগ্য খারাপ। অ্যালেক্স ক্যারির দারুণ ফিল্ডিংয়ে রান আউট হয়ে ক্রিজছাড়া হতে হয় তাকে। মিড-অফে ঠেলে সিঙ্গেল নিতে গিয়েছিলেন আফিফ। ডাইভ দিয়ে ধরে ওঠার আগেই ছুঁড়ে মেরেছেন অ্যালেক্স ক্যারি, যে থ্রো-তে সরাসরি ভেঙেছে স্টাম্প। আউট হওয়ার আগে ১৩ বলে ২১ করেন আফিফ।
একপ্রান্ত আগলে রাখলেও অন্য প্রান্তে উইকেট পড়ছিল। শামীম ব্যক্তিগত ৩ রানের মাথায় মিডউইকেটে পেছন ক্যাচ দিয়ে আউট হন।
নতুন ব্যাটসম্যান নুরুল হাসানও আফিফের মত রান আউটের শিকার হলেন। মাহমুদউল্লাহ কাভারে ঠেলে দিয়ে রানের জন্য দৌড় দেন। শুরুতে প্রান্ত পরিবর্তন নিয়ে সংশয়ে ছিলেন নুরুল হাসান। দৌড় শুরু করেন এক পর্যায়ে। তবে এর আগেই ময়েজেস হেনরিকেসের থ্রো সরাসরি ভেঙেছে স্ট্রাইক-প্রান্তের স্টাম্প। নুরুল হাসান ৫ বলে ১১ রান করেন।
৫২ বলে ফিফটি করেন মাহমুদউল্লাহ। ক্যারিয়ারের পঞ্চম অর্ধশতক এটি তার। তবে বাংলাদেশের হয়ে সবচেয়ে ধীরগতির ফিফটি এটি। ব্যক্তিগত ৫৩ রানের মাথায় বোল্ড আউট হয়ে তাকেও ফিরতে হয়।
খেলার শেষ ওভারে শেষ তিন বলে বাংলাদেশ তিন উইকেট হারায়। অভিষেক ম্যাচেই হ্যাট্রিক করেন এলিস। ওভারের চতুর্থ বলে মাহমুদউল্লাহ হলেন বোল্ড। পরের ডিপ মিডউইকেটে ক্যাচ দিয়ে রানের খাতা খোলার আগেই আউট হন মোস্তাফিজ। আর ওভারের ডিপ উইকেটে ক্যাচ দেন ১১ রান নেওয়া মেহেদি হাসান। ১২৭ রানে থামে বাংলাদেশের ইনিংস।
১২৮ রানের জয়ের লক্ষে খেলতে নেমে দেখে শুনে খেলতে থাকে অস্ট্রেলিয়া। দলীয় ৮ রানের মাথায় মাসুম আহমেদের শিকারে পরিণত হন অধিনায়ক ম্যাথু ওয়েড। তার বিদায়ের পর ম্যাকডারমট ও মিচেল মার্শ ৬৩ রানের জুটি গড়েন। সাকিব আল হাসান ম্যাকডারমটকে (৩৫) সরাসরি বোল্ড করে এ জুটি ভাঙ্গেন। এতে চাপে পড়ে যায় সফরকারী দলের, যা আরও বেড়ে যায় শরিফুল ইসলাম মইসেস হেনরিকসকে শিকার করলে। ৯৪ রানে শরিফুলের শিকারে পরিণত হন ফর্মে থাকা মার্শ। আউট হওয়ার আগে ফিফটি করে যান মার্শ। ৪৭ বলে ৫১ আসে তার ব্যাট থেকে।
জেতার জন্য শেষ দুই ওভারে সফরকারীদের দরকার ছিল ২৩ রান। মুস্তাফিজুর রহমানের করা ১৯তম ওভারে অজিরা মাত্র ১ রান নিতে সক্ষম হয়। শেষ ওভারে ১১ রান দেন শেখ মেহেদী হাসান। ২০ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে ১১৭ রান করে অস্ট্রেলিয়া।
৪ ওভার বল করে মুস্তাফিজ মাত্র ৯ রান খরচ করেন। ২৯ রানের খরচায় ২ উইকেট নেন করেন শরিফুল। নাসুম ১৯ ও সাকিব ২২ রানের বিনিময়ে একটি করে উইকেট শিকার করেন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
টস জয়ী : বাংলাদেশ
বাংলাদেশ : ১২৭/৯ (২০ ওভার)
রিয়াদ ৫২, সাকিব ২৬, আফিফ ১৯
এলিস ৩৪/৩, হ্যাজলউড ১৬/২, জাম্পা ২৪/২
অস্ট্রেলিয়া : ১১৭/৪ (২০ ওভার)
মার্শ ৫১, ম্যাকডারমট ৩৫, ক্যারি ২০*
শরিফুল ২৯/২, নাসুম ১৯/১, সাকিব ২২/১, মুস্তাফিজ ৯/০
ফল : বাংলাদেশ ১০ রানে জয়ী।
বিএনএনউজ/এইচ.এম।