বিএনএ ডেস্ক, ঢাকা: ডাচ-বাংলা ব্যাংকের বুথে টাকা লোড-আনলোডসহ মেইনটেন্যান্সের দায়িত্ব পালন করছে গার্ডা শিল্ড। আব্দুর রহমান সেখানে চাকরি নেওয়ার পর শুরু করেন প্রতারণা। তার নেতৃত্বে ২০ জনের একটি দল আছে। প্রতিদিন বিভিন্ন এটিএম বুথে কৃত্রিম জ্যাম সৃষ্টির মাধ্যমে ৬০ হাজার থেকে লাখ টাকা পর্যন্ত হাতিয়ে নিতেন তারা। গত এক বছরে এভাবে প্রায় তিন কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে আব্দুর রহমান ও তার প্রতারক চক্র।
এ ঘটনায় আর্থিক জটিলতা সৃষ্টি হলে মামলা করে ডাচ বাংলা ব্যাংক। সিসিটিভির ফুটেজ বিশ্লেষণ করে চক্রটির মূলহোতা আব্দুর রহমানসহ আট সদস্যকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। শনিবার (৫ মার্চ) রাতে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
রোববার (৬ মার্চ) দুপুরে কারওয়ান বাজারে মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের মুখপাত্র কমান্ডার খন্দকার আল মঈন জানান, মিরপুর, হাজারীবাগ, যাত্রাবাড়ী ও বাড্ডা এলাকায় অভিযান চালিয়ে আব্দুর রহমান বিশ্বাস (৩২), তারেক আজিজ (২৫), তাহমিদ উদ্দিন পাঠান ওরফে সোহান (২৮), রবিউল হাসান (২৭), হাবিবুর রহমান ওরফে ইলিয়াস (৩৬), কামরুল হাসান (৪৩), সুজন মিয়া (৩১) ও আব্দুল কাদেরকে (৪৩) গ্রেপ্তার করা হয়।
তাদের কাছ থেকে দুটি চেকবই, একটি এটিএম কার্ড, চারটি আইডিকার্ড, একটি স্বর্ণের নেকলেস, এক জোড়া বালা, এক জোড়া কানের দুল, একটি আংটি এবং নগদ ৯ লাখ ৪১ হাজার ৫৫৫ টাকা উদ্ধার করা হয়।
র্যাব জানায়, প্রতারকরা একটি সংঘবদ্ধ চক্র। গত ২/৩ বছর এক সঙ্গে চাকরি করার সুবাদে তারা পরিচিত। আব্দুর রহমান চক্রটির মূলহোতা। তিনি তার এক সাবেক সহকর্মীর কাছ থেকে বিষয়টি রপ্ত করেন।
অন্য সহযোগীরা কন্ট্রোল রুম, লোডিং, কলিং এবং মেইনটেন্যান্সের দায়িত্ব পালন করেন। ব্যাংকের এটিএম বুথে টাকা স্থাপন ও মনিটরিং কাজেও নিযুক্ত ছিলেন তারা। ঢাকা শহরের ২৩১টি এটিএম বুথ মেশিনে টাকা লোড করেন তারা।
প্রতারণার কৌশল
চক্রটি লোডিং ট্রে-তে টাকা রাখার সময় ১৯টি ১০০০ টাকার নোটের পরপর অথবা অন্য নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা ইচ্ছাকৃতভাবে জ্যাম করে রাখত। কোনো ক্লায়েন্ট এটিএম বুথে টাকা উত্তোলনের জন্য এটিএম কার্ড প্রবেশ করিয়ে গোপন পিন নম্বর দিয়ে কমান্ড করলে ওই পরিমাণ টাকা ডেলিভারি না হয়ে পার্সবিনে জমা হতো। পরে সেই টাকা সরিয়ে নিতো চক্রের সদস্যরা।
চক্রের মূলহোতা আব্দুর রহমানকে জানায়, মিরপুর, কালশী, বেনারশি, সেনপাড়া, ইব্রাহিমপুর ও কচুক্ষেত এলাকায় দায়িত্ব পালন করেন তিনি। র্যাব জানায়, চক্রটির সবাই শিক্ষিত। তবে বেতন পেতেন ১৪ থেকে ২০ হাজার টাকা। কিন্তু আত্মসাৎ করা টাকায় বিলাসী জীবনযাপন করতেন তারা।
বিএনএ/ এ আর